ধূমকেতুর মতো চিত্রপুরীর আকাশে নব্বই দশকে আবির্ভাব হয়েছিল সালমান শাহের। মাত্র চার বছরের ফিল্মি ক্যারিয়ারে তিনি জয় করেছিলেন কোটি মানুষের মন। আজও তাকে মনে রেখেছে কোটি দর্শক।
Advertisement
মাত্র ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সালমান শাহ হয়েছিলেন তৎকালীন ঢাকাই সুপারস্টার। আজ তিনি নেই। রয়েছে শুধু তার স্মৃতি।
তবে অমর এই নায়ক তার স্বল্প ক্যারিয়ারে জনপ্রিয় সব নির্মাতার নির্দেশনায় অভিনয় করে জ্বলে উঠেছিলেন। একনজরে দেখে নেয়া যাক সেইসব নির্মাতাদের নামগুলো-
সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরেই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় সালমান শাহের। তিনি সালমানকে নিয়ে বাজি ধরেছিলেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে। ১৯৯২ সালের ৩ আগস্ট কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবির মহরত হয়। আর শুটিং শুরু হয় ১৩ সেপ্টেম্বর। ১৯৯৩ সালে ছবিটি মুক্তি পায়। ছবিতে সালমান শাহের নাম ছিল রাজ। সেসময় ছবিটি রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা করে। সালমান শাহ রাতারাতি পেয়ে যান তারকা খ্যাতি।
Advertisement
জহির উদ্দিন ও তমিজউদ্দিন রিজভীর যৌথ পরিচালনায় ‘তুমি আমার’ নামে একটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সালমান। ওই ছবির মাধ্যমে শাবনূরের সঙ্গে প্রথমবার জুটি বেঁধেছিলেন সালমান শাহ। ’৯৪ সালে ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। এরপর সালমান-শাবনূর আরো ১৩ টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
মহাম্মদ হান্নান পরিচালিত ‘বিক্ষোভ’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সালমান শাহ। এই ছবিতে সালমানে বিপরীতে ছিলেন শাবনূর। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলোর মধ্যে এটি ছিল সুপারহিট ছবি। এই নির্মাতার মাত্র একটি ছবিতেই তিনি অভিনয় করেছিলেন।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারনের কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপে নির্মিত হয়েছিল ‘স্নেহ’ ছবিটি। সালমান শাহ এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ইমন চরিত্রে। চিত্রপরিচালক জীবন রহমানে ‘প্রেমযুদ্ধ’ (১৯৯৪) ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সালমান। ছবিতে সালমানের নায়িকা ছিলেন লিমা।
শিবলি সাদিক পরিচালিত তিনটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সালমান শাহ। ছবি তিনটি হচ্ছে ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪), ‘মায়ের অধিকার’ (১৯৯৬), ‘আনন্দ অশ্রু’ (১৯৯৭)। নায়িকা ছিলেন মৌসুমী, শাবনাজ ও শাবনূর। শফী বিক্রমপুরী পরিচালিত ‘দেনমোহর’ (১৯৯৫) ছবিতে সালমান শাহ অভিনয় করেছিলেন। এটি ছিল পারিবারিক-রোমান্টিক ছবি। সালমান খান অভিনীত হিন্দি অভিনিত ‘সানাম বেওফা’ হিন্দি ছবির অফিসিয়াল রিমেক এই ছবি। শাহ আলম কিরণ পরিচালিত ‘সুজন সখী’ (১৯৯৪) ও ‘বিচার হবে’ (১৯৯৬), নামের দুই ছবির নায়ক ছিলেন সালমান শাহ।
Advertisement
১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কন্যাদান’ ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। এই ছবিতে সালমানের নায়িকা ছিলেন লিমা। নির্মাতা ঝন্টু এই একটি মাত্র ছবি সালমান শাহকে নিয়ে বানিয়েছিলেন। ‘আঞ্জুমান’ (১৯৯৫) নির্মাণ করেছিলেন হাফিজ উদ্দিন। এই ছবিতে সালমানের নায়িকা ছিলেন শাবনাজ। তমিজ উদ্দিন রিজভী পরিচালিত ‘আশা ভালোবাসা’ ছবিতে অভিনয় করেন সালমান শাহ। নায়িকা ছিলেন শাবনাজ।
দিলীপ সোম বানিয়েছেন ‘মহামিলন’ (১৯৯৫)। ছবিতে নায়িকা ছিলেন শাবনূর। আর নায়ক ছিলেন সালমান শাহ। ‘এই ঘর এই সংসার’ (১৯৯৬) ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন মালেক আফসারী। পারিবারিক গল্পের আবহে নির্মিত সালমান অভিনীত এই ছবিটি ছিল অন্যতম সুপারহিট।
মতিন রহমান পরিচালিত রোমান্টিক ছবি ‘তোমাকে চাই’ (১৯৯৬) ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সালমান শাহ। নায়িকা ছিলেন শাবনূর। বাদল খন্দকার পরিচালিত ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ (১৯৯৬) ছবির নায়ক ছিলেন সালমান শাহ। ছটকু আহমেদ নির্মাণ করেছিলেন ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘বুকের ভিতর আগুন’ নামের দুটি ছবি। তুমুল আলোচিত ছিল সালমান অভিনীত দুটি ছবিই।
জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘জীবন সংসার’ (১৯৯৬) ছবির নায়ক ছিলেন সালমান। এখানেও নায়িকা ছিলেন শাবনূর। নাসির খান পরিচালিত ‘স্বপ্নের নায়ক’ (১৯৯৭), এম এম সরকার পরিচালিত ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ (১৯৯৬), রেজা হাসমত পরিচালিত ‘প্রেম পিয়াসী’ (১৯৯৬), কাজী মোর্শেদ পরিচালিত ‘শুধু তুমি’ (১৯৯৭), ছবির নায়ক ছিলেন সালমান শাহ।
এনই/এলএ