দেশের গবাদি পশু বা প্রাণীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে ছাগল। গ্রামাঞ্চলে অনেকেই আর্থিক সচ্ছলতা আনয়নে ছাগল পালন করেন। কেউ কেউ ছাগলের খামারও করছেন দেশি, বিদেশি বিভিন্ন জাতের। আমাদের দেশি জাতের ব্ল্যাক বেঙ্গল সুপরিচিত বিশ্বব্যাপী।
Advertisement
এটি বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি জাত। বিশেষ করে এর চামড়া খুবই উৎকৃষ্টমানের। কিন্তু প্রজননের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার অভাবে দেশি জাতের ছাগলের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে জাতটি বিলুপ্ত হতে পারে।
হিমায়িত বীজের মাধ্যমে কৃত্রিম প্রজনন বা এআই (আর্টিফিশিয়াল ইনসেমিনেশন) এ দুরবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে। একটি ছাগীকে প্রাকৃতিক নিয়মে পাঠা দ্বারা প্রজনন করাতে যে পরিমাণ বীজ ব্যবহৃত হয় সেই একই পরিমাণ বীজ দ্বারা হিমায়িত কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিতে ২৫-৩০টি ছাগীর প্রজনন করানো সম্ভব।
আরও পড়ুন: ছাগল পালনে স্টল ফিডিং পদ্ধতি
Advertisement
প্রাকৃতিক পদ্ধতির তুলনায় এ পদ্ধতিতে ২৫-৩০ গুণ অধিক ফল পাওয়া যাবে। ফলে বাচ্চার উৎপাদন বাড়বে বহুগুণ। ইতোপূর্বে বাকৃবিতে এ লক্ষ্যে কৃত্রিম প্রজনন ব্যবস্থা শুরু হয়েছে।
সুস্থ-সবল পাঁঠা বাছাই করে তা থেকে বীজ সংগ্রহ করে অনুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়। বীজ আশানুরূপ গুণ সম্পন্ন হলে হিমায়িত করে সংরক্ষণ করা হয় এবং এআইগানের মাধ্যমে ছাগীতে কৃত্রিম প্রজনন করা হয়।
এভাবে উন্নত জাতের অধিক সংখ্যক ছাগলের বাচ্চা উৎপাদন করা সম্ভব। হিমায়িত বীজ দ্বারা কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ছাগীর বাচ্চা উৎপাদনে বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা ৫০ শতাংশের বেশি যা প্রায় গাভীর বাচ্চা ধারণ ক্ষমতার সমান। হিমায়িত বীজকে তরল নাইট্রোজেনের মাধ্যমে মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করলে গুণাগুণ প্রায় ৫০ বছর অটুট থাকে।
আরও পড়ুন: ছাগল-ভেড়ার ওজন বৃদ্ধির হার এখন দ্বিগুণেরও বেশি
Advertisement
বর্তমানে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে গরু, ছাগলসহ বিভিন্ন গবাদি পশু -পাখির উৎপাদনে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
বাণিজ্যিকভাবে এ পদ্ধতিকে কাজে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যাবে। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনে খরচ কম, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও অধিক এবং দ্রুত বর্ধনশীল। এ জাতের ছাগল একসঙ্গে একাধিক বাচ্চা প্রদানে সক্ষম। বৈজ্ঞানিকভাবে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ছাগল পালন দেশের সাধারণ জনগণের দারিদ্র্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
এমইউ/এমআরএম/আইআই