খেলাধুলা

মুশফিকের দিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশ

ঈদের ছুটি শেষ। আবার কর্ম ব্যস্ত নাগরিক জীবন শুরুর প্রস্তুতি। কিন্তু আবার কর্ম জীবনে ফেরার আগে বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ মেতে আছেন ক্রিকেট নিয়ে। তাদের সবার চোখ এখন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে কী করবে টাইগাররা?

Advertisement

প্রথম দিন শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের হাত ধরে অনেকটা পথ সামনে যাবে? ৬ উইকেটে ২৫৩ রান নিয়ে আজ দ্বিতীয় দিন শুরু করে কোথায় থামবে মুশফিকের দল? আজ-কাল পরশু উইকেট কেমন ব্যবহার করবে? উইকেটের গতি প্রকৃতি কেমন থাকবে, বল টার্ন করবে কিনা, বিপজ্জনকভাবে নিচু হয়ে আসবে কিনা, নাকি স্পিন সহায়ক হয়ে পড়বে?

এসব কৌতূহলী প্রশ্ন এখন বাংলাদেশ সমর্থকদের মনে। তারা উন্মুখ হয়ে আছেন এর উত্তরের জন্য। তবে আপাতত অপেক্ষায় থাকা ছাড়া উপায় নেই। কারণ বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে কতদূর যাবে, রানটা কত হবে, এসব নির্ভর করছে মূলত অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের উপর। মুশফিক একদিক আগলে রাখার পাশাপাশি বড় ইনিংস খেলতে পারলে আর অপরাজিত থাকা নাসির ও মিরাজ তাকে সাপোর্ট দিতে পারলে রান সাড়ে তিনশো ছাড়িয়ে ৪০০'র আশপাশে যেতে পারে।

কারণ উইকেট খারাপ না। শেরেবাংলার মত প্রথম ঘণ্টা থেকেই বল লাটিমের মত ঘোরেনি। ধৈর্য, সংযম আর বলের মেধা ও গুণ বিচার করে খেললে স্বচ্ছন্দ ও সাবলীল ব্যাট করা যায়। লম্বা ইনিংসও সাজানো যায়। সাব্বির রহমানের ৬৬ আর মুশফিকের ৬২ রানের ইনিংস দুটিই তার প্রমাণ।

Advertisement

কাল (সোমবার) প্রথম দিন উইকেট ‘স্পিন ফ্রেন্ডলি ’ ছিল না। সকালের সেশনে অস্ট্রেলিয়ান অফস্পিনার লিওনের বলে তামিম, সৌম্য, ইমরুল ও মুমিনুলকে আউট হতে দেখে যারা ভেবেছেন বল শেরেবাংলার মত ঘুরছে, তাহলে ভুল করবেন। কারন যিনি টেস্ট ক্যারিয়ারে ১১ বারের মত ৫ উইকেট দখল করেছেন সেই অসি অফস্পিনার ন্যাথান লিওন নিজ মুখে বলেছেন বল মোটেও টার্ন করেনি। স্পিন সহায় বহুদূরে বল ঘোরানোই ছিল খুব কঠিন কাজ। সারা দিনে তিনি যে ২৮ ওভার বল করেছেন, তার মধ্যে একটি বলও ঘুরেছে কিনা সন্দেহ।

হয়তো প্রশ্ন উঠবে, উইকেটে যদি এক ইঞ্চিও টার্ন না থাকে, তাহলে বাংলাদেশের চারজন প্রতিষ্ঠিত উইলোবাজ আউট হলেন কী ভাবে? ভুল শট খেলে? প্রথম দিনের খেলা শেষে লিওন নিজেই তার উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। জানিয়ে দিয়েছেন আমি চারজনকেই সোজা বলে আউট করেছি।’

এদিকে ভক্তরা সবাই অধিনায়ক মুশফিকের দিকে তাকিয়ে। সবার আশা মুশফিক যদি সেঞ্চুরি করতে পারেন, তাহলে হয়তো বাংলাদেশ মজবুত অবস্থানে যেতে পারবে। কারণ উইকেটের হাব ভাব দেখে মনে হচ্ছে এখানে ঢাকার মত প্রথম ইনিংসে ২৬০/২৭০ রান করে ম্যাচ জেতা কঠিন হবে।

প্রথম দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের সাব্বির রহমান ও অস্ট্রেলিয়ার ন্যাথান লিওনের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, এ উইকেটে কত রান করতে পারলে মোটামুটি নিরাপদে থাকা যাবে? দুইজনের কেউ নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা বলেননি। তবে হাবভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন ৩৫০+ হতে পারে লড়াকু স্কোর।

Advertisement

এদিকে মুশফিক ভক্তরা আশায় থাকতেই পারেন। চট্টগ্রামের এই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ অধিনায়কের টেস্ট পরিসংখ্যানমন্দ না। ভালোই। তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি এই মাঠে। ২০১০ সালের জানুয়ারী মাসে ভারতের বিরুদ্ধে ১০১ (১৪২ মিনিটে ১১৪ বলে। ১৭ বাউন্ডারি আর এক ছক্কায়)। চট্টগ্রামের এই মাঠে তার এটা ১৩ নম্বর টেস্ট। এর মধ্যে ২৬ ইনিংসের ভেতর মুশফিক ব্যাট করেছেন ২৪বার। এর মধ্যে একটি শতরান আর ছয়টি হাফ সেঞ্চুরি আছে। এই মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গত বছর অক্টোবরে সর্বশেষ টেস্টে ৪৮ ও ৩৯। এরই মধ্যে পঞ্চাশে পা রাখা মুশফিক একটি শতরান করে ফেললেই হয়তো অসিদের চাপে ফেলার মত স্কোর হবে।

এআরবি/এমআর/জেআইএম