মেধা ও শ্রম কাজে লাগিয়ে দেশের বাইরে ব্যবসা-বাণিজ্য করে যারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদেরই একজন মনির বিন আমজাদ। তিনি মালয়েশিয়ার সেলায়াং পাসারে এস এনটি ট্রেডিং এইচডি এন বিএইচডি নামে গড়ে তুলেছেন ১৮টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
Advertisement
নিজের ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় অন্য ব্যবসায়ীদের নানাবিধ সহযোগিতাসহ বিনিয়োগ নিয়েও কাজ করছেন তিনি। মনির বিন আমজাদ বাংলাদেশি হিসেবে মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় দেশটির প্রশাসনের সব মহলে রয়েছে তার পরিচিতি। এবং প্রবাসীদের মাঝেও রয়েছে তাকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা। ১৯৭৭ সালে নরসিংদী জেলার জিতরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত আমজাদের ছেলে মনির বিন আমজাদ। ভাই-বোনদের মধ্যে মনির ৮ম। ছোটবেলা থেকেই তার শখ ছিল ব্যবসা করার। স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষাগ্রহণ শেষ করেই ১৯৯৫ সালে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য মালয়েশিয়া যান।
মনির সে দেশের উন্নয়ন এবং সেখানকার মানুষের জীবনযাপন, চাহিদা ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি শুরুতেই অনুভব করেন, এখানে কিছু করতে চাইলে প্রথমেই তাদের ভাষা, কালচার, খাবার এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে হবে। তিনি ধীরে ধীরে সেভাবেই এগুতে থাকেন। ১৯৯৬ সালের প্রথম দিকে তিনি সেলায়াং পাসারে ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে মনির মালয়েশিয়ার সফল ব্যবসায়ী।
২০০৮ সালে মনির বিন আমজাদ ক্লান্তান রাজ্যের জুলিয়ানার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। মনিরের তিন কন্যাসন্তান। লিসা, হোসনা ও সাপিয়া।
Advertisement
মনির যেমন উদ্যমী তেমনি পরিশ্রমী। সে কারণেই তার ব্যবসার বিস্তার ঘটতে থাকে এবং এক ব্যবসা থেকে অনেক ব্যবসা করার সুযোগ লাভ করেন। চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশসহ ৭টি দেশে সবজি আমদানি রফতানি করেন।
বর্তমানে ফার্নিচার, রেস্টুরেন্ট ও সবজির আড়ৎসহ মনির ১৮টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ইন্ডিয়ার ৩ শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন।
এছাড়া বাংলাদেশে নরসিংদীর মাধবদীতে আলী টেক্সটাইল গড়ে তুলেছেন। যেখানে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। সাতক্ষীরার বিল্লাল ১১ বছর ধরে সেলায়াং পাসারে মনিরের সবজির দোকানে কাজ করছেন।
বিল্লাল জানান, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি মালিকের অধীনে কাজ করছি। ভালোই লাগছে। মনে হচ্ছে আমরা দেশেই কাজ করছি। বেতনও ভালো।
Advertisement
বিল্লালের মতো মো. জাকির, আরিফুল ইসলাম ও রফিক এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের মালিক খুবই আন্তরিক। কাজের ফাঁকে আমাদের খোঁজ-খবর রাখেন। সেলায়াং পাসারের ব্যবসায়ীরা মনিরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ব্যবসার প্রসার দেখে তাকে গ্রেট বিজনেসম্যান হিসেবেই দেখছেন।
মনির বিন আমজাদ বলেন, একে অন্যের প্রতি সম্পর্ক জোরদার করতে না পারলে মালয়েশিয়ায় আমরা কেউই ভালো থাকব না। তিনি মনে করেন, একজন বাংলাদেশি হিসেবে অন্য একজন বাংলাদেশিকে সাধ্যমত সহযোগিতা করা প্রয়োজন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষ যে ভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতা দেখায় তা থেকে পিছিয়ে রয়েছি। এ জন্য তিনি প্রত্যেক বাংলাদেশিকে ব্যবসা প্রসারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এমআরএম/এমএস