সকাল থেকেই চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিয়ে চাপে রেখেছিলেন নাথান লিওন। লিওনের সাথে শেষ সময়ে যোগ দেন অ্যাস্টন অ্যাগারও। তিনি তুলে নেন সাকিব আল হাসানের উইকেট। ফলে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল।
Advertisement
তবে সাকিব আউট হওয়ার পর বিপর্যয় কাটিয়ে অসিদের ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম এবং সাব্বির রহমান। এ রিপোর্ট লেখার সময় তাদের দুজনের ৫৬ রানের জুটির ওপর ভর করে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৭৩ রান। মুশফিক ৩৩ ও সাব্বির ৩৮ রান নিয়ে অপরাজিত ক্রিজে।
এর আগে ২৪ রান করে অ্যাগারের বলে উইকেটরক্ষক ম্যাথ্যু ওয়েডের হাতে ধরা পড়েন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। ইনিংসের ৪৭তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন সাকিব।
উইকেটটা যে স্পিন সহায়ক উইকেট হবে তা আগেই ধারণা করা হচ্ছিল। স্পিন উইকেট করা হবে কারণ, বাংলাদেশের স্পিনাররা যাতে ঢাকা টেস্টের মত প্রভাব বিস্তার করে খেলতে পারেন তাই; কিন্তু সেটা বুমেরাং হলো উল্টো বাংলাদেশের জন্য। অসি ডানহাতি অফ স্পিনার নাথান লিওনের স্পিন বিষে নীল হয়েছে বাংলাদেশের টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান। এরপর বাকি উইকেটটি নিলেন আরেক স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগার।
Advertisement
একে একে চার ব্যাটসম্যানকে লিওন তার মায়াবী ঘূর্ণির জাদুতে এলবির ফাঁদে ফেলেন। সবশেষে তিনি তুলে নেন দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে ফেরা আলোচিত ব্যটসম্যান মুমিনুল হককে। দারুন খেলতে থাকা মুমিনুলকে ৩১ রানে সাজঘরে ফেরান এই স্পিনার।
৩ উইকেটের বিনিময়ে ৭০ রান নিয়ে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ। লাঞ্চের ঠিক আগ মুহূর্তে বাংলাদেশ হারায় দারুন ছন্দে থাকা ওপেনার সৌম্য সরকারকে। বোলার লিওন তার ঘূর্ণির ফাঁদে ফেলে সৌম্যকে ফেরান। লাঞ্চের পর ব্যাটিং শুরু করেন সাকিব ও মুমিনুল। ইনিংসের ৩৪তম ওভারের শেষ বলে লিওন বোকা বানান মুমিনুলকে। এলবির ফাঁদে ফেলে সাজঘরের পথ ধরান তাকে। আর বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে নিজের ঘূর্ণিতে বোকা বানান অ্যাস্টন অ্যাগার। সাকিব ধরা পড়েন ওয়েডের গ্লাভসে।
এর আগে সকালে টস জিতে যখন বাংলাদেশ যখন ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত নেয়, তখন মনে হচ্ছিল আজকের দিনটা বাংলাদেশের। আর চট্টগ্রামের ছেলে তামিম আজ ভাল কিছুই করবেন। কিন্তু সকলের চাওয়াকে ভুল প্রমাণিত করে অজি স্পিনার দ্রুতই তামিম ও ইমরুলকে সাজঘরে ফেরান।
তামিম-ইমরুলের বিদায়ের দলের হাল ধরেন সৌম্য-মমিনুল। দু’জনে মিলে করেন ৪৯ রানের মূল্যবান একটি জুটি। সৌম্য সরকার সকাল থেকেই বেশ ছন্দে ছিলেন। ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছিলো; কিন্তু ভাগ্য তার আজও সহায় ছিল না। ৩৩ রান করে তিনিও পড়েন লিওনের এলবির ফাঁদে। দলীয় ৩০তম ওভারে সৌম্য সরকারের উইকেট তুলে নেন। ফলে স্বস্তির লাঞ্চে যাওয়ার আগে সৌম্যর বিদায়ে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে বাংলাদেশ। আর লাঞ্চের পর লিওন বাংলাদেশের টেস্ট স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান মুমিনুলকে ফেরান।
Advertisement
ইনিংসের সপ্তম ওভারে কামিন্সের বলে থার্ড স্লিপে দাঁড়ানো ম্যাক্সওয়েলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তামিম। যেটি মিস করেন ম্যাক্সওয়েল। তারপর ধারণা করা হচ্ছিল, তামিম তার নতুন জীবন কাজে লাগাবে। তবে ঘরের মাঠ চট্টগ্রামে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তামিম ইকবাল খান। অসি ডানহাতি অফ স্পিনার ন্যাথান লিওনের ব্যক্তিগত পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই তামিমকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন। আউট হওয়ার আগে তামিম করেন ৯ রান।
তামিম আউট হওয়ার পর উইকেটে আসেন ইমরুল কায়েস। ঢাকা টেস্টের দুই ইনিংস মিলিয়ে ২ রান করা ইমরুল চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসেও ব্যর্থ। মাত্র ৪ রান করেই পড়েন লিওনের এলবিডাব্লিউ এর ফাঁদে। যদিও আলিম দার প্রথম আউট না দিলেও পরে অসি দলপতি স্মিথ রিভিউ নেন। আর রিভিউতে দেখা যায় ইমরুল আউট।
দুই অসি স্পিনার ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেও তাদের ভালভাবেই সামলাচ্ছেন দুই টাইগার ডানহাতি ব্যাটসম্যান মুশফিক ও সাব্বির। এই দুই ব্যাটসম্যান যদি আজ দিন শেষ করতে পারে তবে দিন শেষে ভাল অবস্থানেই থাকার কথা টাইগারদের।
এমএএন/আইএইচএস/এমএস