সাধারণত উইনিং কম্বিনেশনে রদবদল হয় কম। কেউ ইনজুুরির শিকার না হলে সচরাচর আগের ম্যাচ জেতা দলের কাউকে বাদ দেয়াও হয় কালেভদ্রে। বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্ট টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে বারবার উইনিং কম্বিনেশন না ভাঙার কথা বললেও প্রথম টেস্টে অমন নজরকাড়া পারফরম্যান্স আর অবিস্মরণীয় জয়ের পরও চট্টগ্রামে বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন আসতে পারে, এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল চারিদিকে।
Advertisement
একাদশে অন্তত একটি রদবদল হয়তো হবে- এমন ইঙ্গিত মিলেছিল ঢাকাতেই। মুমিনুল একাদশে ফিরতে পারেন, এমন আভাসও মিলেছিল। কক্সবাজারের এ মেধাবী উইলোবাজের দলে ফেরার পেছনে ‘ওপেনার সৌম্যর’ ব্যর্থতা আর তিন নম্বরে খেলতে নামা ইমরুল কায়েসের অনুজ্জ্বলতাকেই বড় কারণ বলে ভাবা হয়েছিল। অনেকেই বলেছেন সৌম্য আর ইমরুলের যে কারও জায়গায় ঢুকবেন মুমিনুল। সেই বলাবলি আংশিক সত্য হতে যাচ্ছে।
সব ইঙ্গিত ও জল্পনা-কল্পনাকে সত্য প্রমাণ করে আবার হয়তো ১১ জনে জায়গা হচ্ছে মুমিনুলের। সবকিছু ঠিক থাকলে বাংলাদেশ একাদশে মুমিনুলের থাকার একরকম নিশ্চিত।
রোববার রাতে জাগো নিউজকে এ তথ্য দিয়ে প্রধান নির্বাক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানান, ‘আগামীকাল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন। মুমিনুল হক ঢুকবে। আর শফিউল বাইরে থাকবে।’
Advertisement
প্রধান নির্বাচকের দেয়া এ তথ্যই বলে দিচ্ছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় টেস্টের গঠনশৈলী। তার মানে ঢাকায় ভীষণ অকার্যকর পেস ডিপার্টমেন্ট আরও ছোট করে এবং তার শক্তি কমিয়ে আরও একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান দলে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রধান নির্বাচকের কথায় আরও একটি সত্য লুকানো আছে; তা হলো প্রথম টেস্টে চরম ব্যর্থতার পরও দলে থাকছেন সৌম্য-ইমরুল।
তাদের ওপর এখনও আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন কোচ হাথুরুসিংহে। শেরেবাংলায় পেসাররা একটি উইকেট না পাওয়ায় অবশ্য প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে দুই পেসার খেলানোর যৌক্তিকতা কী? শেষ পর্যন্ত দুই পেসার ফর্মুলা থেকে সড়ে এক পেসার নিয়ে মাঠে নামার চিন্তা। আর তাতেই শফিউলের নাম কর্তন। আর মুমিনুলের অন্তর্ভুক্তি।
প্রধান নির্বাচকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ব্যাটিং অর্ডারেও সে অর্থে রদবদল হবে না। তামিমের সঙ্গে সৌম্যই হয়তো ইনিংসের সূচনা করবেন। ইসরুল তিন নম্বরেই ব্যাট করবেন। আর মুমিনুল হয়তো তার মূল জায়গা চার নম্বরে ব্যাট করবেন। বলার অপেক্ষা রাখে না টেস্টে চার নম্বরে মমিনুল বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান।
এই পজিসনে ৯ টেস্টে তিন শতক ও পাঁচ অর্ধশতকসহ মুমিনুলের সংগ্রহ ৮৭৭ রান। গড়ও সবার চেয়ে বেশি ৬২.৬৪। তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটিও (১৮১ চার নম্বরেই)। ভালো পারফরম করতে না পারা সৌম্য ও ইমরুল কায়েসের কারও একজনের জায়গায় নন, একজন পেসারের বদলে মুমিনুলকে খেলানো কেন?
Advertisement
এমন প্রশ্নও উকি ঝুঁকি দিচ্ছে। এর জবাব প্রধান নির্বাচক দেননি। তবে ইতিহাস ও পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম মুমিনুলের পয়োমন্তঃ ভেন্যু। তার টেস্ট ক্যারিয়ারে চার সেঞ্চুরির তিনটিই চট্টগ্রামে। এই মাঠে মুমিনুলের শেষ টেস্ট সেঞ্চুরিটা (১৩১) ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে। তার ক্যারিয়ার সেরা ১৮১ রানের ইনিংসটি এই মাঠেই। ২০১৩ সালের অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ইনিংস সাজিয়েছিলেন ইমরুল।
এছাড়া বাংলাদেশ যে গত মাসে তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে এসেছিল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে, সেই ওয়ার্মআপ ম্যাচেও সর্বাধিক ৭২ রান করেছিলেন মুমিনুল। কাজেই এই মাঠে তার আগের ভালো খেলাকেই অবশেষে বিবেচনায় এনেছেন নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্ট।
দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশতামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান রুম্মন, নাসির হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।
এআরবি/বিএ/এমএস