খেলাধুলা

মুস্তাফিজকে টেস্টের জন্য আরও খাটতে হবে : ইমরান

বাংলাদেশের ক্রিকেটে বর্তমানে মাশরাফির পর অন্যতম নির্ভরযোগ্য পেসার ভাবা হয় কাটারখ্যাত মুস্তাফিজুর রহমানকে।

Advertisement

কিন্তু ওয়ানডে এবং টি-২০ ক্রিকেটে দুর্দান্ত খেলতে থাকা মুস্তাফিজ টেস্টে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারছেন না। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেক হওয়া এই কাটার মাস্টার এখন পর্যন্ত ৫টি টেস্ট খেলে মাত্র ১২টি উইকেট পেয়েছেন।

এদিকে, তবে সদ্য শেষ হওয়া ঐতিহাসিক ঢাকা টেস্টে মুস্তাফিজ ছিল পুরোই নিস্প্রভ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ইনিংসে মাত্র নয় ওভার বলে করে উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি।

কিন্তু একই উইকেটে অজি পেসাররা ছিলেন অসাধারণ ফর্মে। প্যাট কামিন্স ৩০ ওভার বল করে তুলে নিয়েছেন চার উইকেট। অপর অজি বোলার হ্যাজেলউড উইকেট না পেলেও দারুণ বল করেছেন।

Advertisement

টেস্টে মুস্তাফিজের পারফরমেন্স বিবেচনা করেই দেশসেরা কোচ সারোয়ার ইমরান টেস্টের জন্য মুস্তাফিজকে আরও বেশি ‘পরিশ্রম’ করতে হবে বলে মনে করছেন।

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার চলমান সিরিজের নানা দিক নিয়ে এই কোচ একান্তে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে।

প্রথম টেস্টে মুস্তাফিজকে যে কয় ওভার বল করানো হয়েছে তার চেয়ে বেশি আর করানোর প্রয়োজন ছিল না বলেই মনে করেন কোচ ইমরান। আর মুস্তাফিজকে আরও কাজ করতে হবেও বলে তিনি মনে করেন।

তার মতে, ‘আমার মনে হয় না মুস্তাফিজকে আর ব্যবহার করার দরকার ছিল। আপনি দেখবেন, ঘরোয়া লিগে ও তেমন ভালো বল করেনি। সে ওয়ানডে ও টি-২০ তে ভালো বল করে। টেস্টে তার ভেরিয়েশন দরকার। টেস্টে পেস বল করতে হলে আরও কাজ করতে হবে। এখানে স্ট্রেট, বাউন্স বল করতে হয়। অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের যে বাউন্স তা কিন্তু আমাদের পেসাররা করতে পারে না।’

Advertisement

তবে ঢাকার উইকেটকে পেসার সহায়ক উইকেট নয় বলে মনে করেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘তো এইসব উইকেটে মনে হয় না আমাদের পেসাররা কিছু করে দেখাতে পারবে। কারণ এই উইকেটে অ্যাকিউরেট বল করতে হয়। একদম জায়গায় বল করতে হয়। ওদের দেখেন, কামিন্স ছাড়া হ্যাজালহুড কিন্তু ভালো বল করলেও উইকেট পায়নি। তাই আমার মনে হয় না, এই উইকেট পেস বোলারদের জন্য বানানো হয়েছে।’

ঢাকা টেস্টে তামিম-সাকিব ছাড়া ব্যাটিংয়ে তেমন একটা ভাল কেউ করতে পারেনি। ফলে অনেকেই মনে করছেন দ্বিতীয় টেস্টে যে কারো জায়গায় মমিনুলের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে ইমরান বলেন, ‘বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যান রয়েছেন যাদের টেস্ট খেলার সামর্থ নেই। তাদের জায়গাতে মমিনুল সুযোগ পেতেই পারে। যদি একই টিম (ঢাকা টেস্টের একাদশ) থাকে তাহলে মমিনুল অন্য কোনো ব্যাটসম্যানের জায়গায় ঢুকতে পারে। এখানে অনেকগুলো জায়গা আছে। কয়জন ব্যাটসম্যান আছে, যারা পারফর্ম করছে না। যাদের সামর্থ নেই টেস্ট খেলার মত। এদের জায়গায় খেলানো যেতে পারে। তাহলে একটা বাড়তি স্পিন বোলারও পাওয়া যাবে।’

তিনি মনে করেন, ‘প্রথম টেস্টটাও ৫০-৫০ ছিল। ওরাও (অস্ট্রেলিয়া) ম্যাচটা জিততে পারত।’

তবে কাউকে বাদ না দিয়েও মমিনুলকে দলে ঢোকানোর উপায়ও বাতলে দিয়েছেন ইমরান। তিনি মনে করেন, ‘শেষ ম্যাচটা কিন্তু ৫০-৫০ ছিল। তবুও আমরা জিতেছি। ঠিক তেমনি এই ম্যাচটাও ৫০-৫০ বলব আমি। আগের উইকেটে পেসাররা মাত্র ১০-১২ ওভার বল করেছে। আমার মনে হয় না পেস বোলার আর বাড়ানো উচিত। পারলে একটা ব্যাটসম্যান বাড়ানো যেতে পারে।’

সিরিজ শুরুর আগে থেকেই ইমরুল কায়েস বিভিন্ন সময় বলে আসছিলেন ওপেন না করে ৩-এ খেলাটা তার জন্য কিছুটা অস্বস্তিকর। তবে এ কথা মানতে নারাজ এই কোচ।

তার মতে, ‘আসলে এই কথা চলে না। সে তো ওপেনই করছে। এখনও বাংলাদেশে ৩ নম্বরে মমিনুল ছাড়া কেউ তৈরি হয়নি। ওপেনাররা তিনে খেলতে পারে। ১,২,৩ একই পজিশন। আপনি জানেন, তিনে মমিনুল ব্যাট করে। এগুলো আগে বলে মনকে দুর্বল করে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। সাকিব, তামিম, মুশফিকরা যেমন মেন্টালি স্ট্রং তেমন স্ট্রং হতে হবে। ওপেনিং না করে তিনে ব্যাট করলে কি করবে, আর কি করবে না তা ভাবা উচিত না।’

দুই ইনিংসে অর্ধশতক করা তামিমের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। তামিম সম্পর্কে বলেন, ‘তামিম অনেক পরিপক্ক হয়েছে আগের থেকে। এইটা ধরে রাখতে পারলে ইনশাআল্লাহ্ তামিম ওয়ার্ল্ডে সেরা ১০ ব্যাটসম্যানের মধ্যে চলে আসবে। আসলে এটা নির্ভর করে উইকেটের ওপর।’

পাশাপাশি সাকিবেরও প্রশংসা করেন ইমরান। মাশরাফির প্রসঙ্গও টানেন তিনি। বলেন, ‘আসলে তারা (বাংলাদেশ দল) মোটামুটি ভাল খেলেছে। তবে সাকিব, তামিম, মিরাজ, তাইজুলদের কথা বলতেই হয়। এরা অনেক ভাল করেছে। এরা ভাল বোলিং করেছে।’

‘আর সাকিব-মাশরাফি টিম স্প্রিটটা যেভাবে জাগিয়ে তুলছে তা একটা বিরাট ব্যাপার। সাকিবকে আগে এত অ্যাকটিভ দেখিনি আমি। এত সিরিয়াস দেখিনি। টিমের জন্য এটা সাকিবের অনেক বড় অবদান।’

এমএএন/এসআর/পিআর