শনিবার পশু কোরবানিসহ বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। এদিন রাজধানীজুড়েই কোরবানির পশুর মাংস কাটার জন্য কসাইয়ের চাহিদা ছিল ব্যাপক।
Advertisement
তবে কসাই ও মৌসুমী কসাইদের অতিরিক্ত চাহিদা ও স্বল্পতার কারণে অনেকে নিজেরাই কোরবানির পশুর মাংসে কেটেছেন।
শনিবার রাজধানীতে কোরবানির পশুর মাংস কেটে বড় অংকের টাকা উপার্জন করেছেন অনেক কসাই। এদের একজন গেদু কসাই। ৫ সহযোগী নিয়ে তিনি গরুর মাংস কেটে পেয়েছেন অর্ধলাখ টাকারও বেশি।
কোরবানির পশু কেনার পর মূলত রাজধানীর বাসিন্দা মাংস কাটার জন্য কসাই খুঁজতে থাকেন। ফলে ঈদের আগেই বেড়ে যায় কসাইদের চাহিদা বেড়ে যায়। এ সুযোগে কসাইদের আয়ের সুযোগও বাড়ে। দক্ষ কসাইদের ক্ষেত্রে ঈদের দিন গরুর মাংসে কেটে আয় অর্ধলাখ টাকার বেশি ছাড়িয়ে যায়।
Advertisement
কসাই না পেয়ে কেউ কেউ ঈদের পরদিনও পশু কোরবানি দেন বলে জানা গেছে।
আজ রাজধানীর গুলশান-১. গুলশান-২, মহাখালী ও রামপুরা ঘুরে জানা গেছে, কসাইদের চাহিদার কারণে অনেক রিকশাওয়ালা কিংবা অন্য পেশার লোক কসাই পরিচয় দিয়ে মাংস কাটা শুরু করেন। এতে চামড়া নষ্ট হওয়া ছাড়াও মাংসের অপচয় হয়।
গুলশান-২ এর ৩৩ নম্বর রোডে কথা হয় মো. গেদু কসাইয়ের সঙ্গে। নোয়াখালী থেকে আসা গেদু জাগো নিউজকে জানান, তিনি মূলত মাংস ব্যবসায়ী। উত্তর বাড্ডার আলীর মোড় তার দোকান আছে। ঈদের দিন ও পরের ২ দিন ৫ সহযোগী নিয়ে তিনি কসাইয়ের কাজ করেন। গত ১১ বছর ধরে গুলশানে কাজ করছেন তিনি। তার ক্রেতা আগে থেকেই চেনা। দক্ষতার কারণে তারা তাকে প্রতিবছর তাকে কাজ দেন।
তিনি ঈদের দিন কমপক্ষে ৪ থেকে ৫টি গরু কাটেন। তবে কখনই ১ লাখ টাকার নিচে কেনা গরু তারা কাটেন না। আর লাখ টাকা দামের গরুপ্রতি ১০ হাজার টাকা নেন তারা।
Advertisement
ওই রোডের বাসিন্দা মমিন তালুকদার প্রতিবছর গেদু কসাইকে দিয়ে গরু কাটেন বলে জাগো নিউজকে জানান। তিনি বলেন, গেদু কসাইকে দিয়ে গরু কাটানো তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। অন্যরা আসলে কেমন হয় তা জানি না। তাছাড়া নতুন লোক খোঁজার মত সময়ও পাওয়া যায় না। তাই তাকেই আগে থেকে বলে রাখি।
গেদু কসাইয়ের সহযোগী আয়নাল জানান, গরু কাটার একটি বড় অংশ গেদু নিয়ে নেন। তবুও তারা ৭/৮ হাজার টাকার মত পান। এছাড়া অনেক সময় ঈদের পরদিনও কাজ পান।
মহাখালী টিবি হাসপাতাল গেটে কথা হয় কসাই আবদুল কাদেরর সঙ্গে। তিনি জানান, তিনি রিকশা চালান। গ্রামে থাকতে পাড়া-পড়শিদের কোরবানির গরু-ছাগল কেটে দিতেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি গরু কাটেন। এতে ৪/৫ হাজার টাকা আয় হয়।
মিরপুরের পর্বতার অধিবাসী মোখলেস রহমান টেলিফোনে জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের দিন কয়েকজন কসাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে তার। তারা হাজারে ৩০০ টাকা চায়। ফলে কসাই না পেয়ে পরদিন কোরবানির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এছাড়া রাজধানীর অনেক এলাকাতেই কসাই ছাড়াই বাড়ির লোকজনকে নিজেদেরই গরুর মাংস কাটতে দেখা গেছে।
মহাখালীর আমতলীর বাসিন্দা আবদুস সালাম, তার দুই ছেলে ও দারোয়ানকে নিয়ে গরু কাটছিলেন। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় পাশের দুইজন রিকশাওয়ালা। নিজ হাতে গরু কাটার আনন্দ তার ছেলেবেলার কথা মনে করিয়ে দেয় বলে জাগো নিউজকে জানান।
এ বছর কোরবানির ঈদে প্রায় ৭০ লাখ পশু বিক্রি হয়েছে। এ থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে দেশে।
এইচএস/এসআর/পিআর