জাতীয়

ক্রেতার মুখেই শেষ হাসি

রাত পোহালেই ঈদ। শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর কেনাবেচা। এবার কোরবানির পশু কেনাবেচার বাজারে শেষ হাসি ফুটছে ক্রেতাদের মুখেই। আর আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। রাজধানীর পশুর হাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, পশু কিনে ক্রেতারা দারুণ খুশি। তবে বিক্রেতারা বলছেন, পশু বিক্রির জন্য যে দাম আশা করেছিলাম সেটা পাওয়া গেল না। যদিও লোকসান হয়নি।

Advertisement

গরু বিক্রেতাদের অভিযোগ, ভারত ও মিয়ানমার থেকে প্রচুর গরু এসেছে। এ কারণে দেশের কৃষক-খামারিরা আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না।

শুক্রবার রাজধানীর হাজারীবাগ হাটে ক্রেতা ও পশু বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। হাজারীবাগ হাটে কুষ্টিয়ার খামারি সুরুজ মন্ডল ১০টি গরু নিয়ে এসেছেন। তার মধ্যে আজ দুপুরের আগ পর্যন্ত ৪টি বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আশানুরূপ দাম পাচ্ছি না। গত বছর ১০টি গরু হাটে এনেছিলাম। সে বছর ১০টি গরুতে ৮০ হাজার টাকা লাভ করেছিলাম। এবার তার অর্ধেকও হবে না।’

সুরুজ মন্ডল বলেন, ‘প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে ভারত ও মিয়ানমার থেকে ঢাকার বাজারে গরু আসে। ফলে দেশি গরুর দাম কমে যায়। এতে আমরা খামারিরাই ক্ষতিগ্রস্ত হই। এভাবে চলতে থাকলে এ ব্যবসা থেকে অনেকেই সরে যাবেন।’

Advertisement

জিগাতলার শামসুল আলম একজন ক্রেতা। তিনি হাজারীবাগ হাট থেকে ৯৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছেন। এই গরুটি কিনে তিনি খুব খুশি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিক্রেতারা গরুর দাম বেশি চাচ্ছেন। আমার গরুটা প্রথমে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা দাম চেয়েছিল। কমতে কমতে শেষ পর্যন্ত ৯৫ হাজার টাকায় ছেড়ে দিয়েছে।’ তিনি জানান, গরুটি তার পছন্দ হয়েছে।

হাজারীবাগ হাটে বগুড়ার আদমদিঘী থেকে ১৫টি গরু নিয়ে এসেছেন খামারি আরজু সরকার। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তিনি ৭টি গরু বিক্রি করেছেন। আরজু সরকার জানান, তার নিজের খামারের গরু ১০টি আর ৫টি গরু তিনি কিনে এনেছেন। তিনি বলেন, ‘খামারের কয়েকটি গরুতে কিছু লাভ হলেও কেনা গরুগুলোতে লোকসান হবে।’

কুষ্টিয়া থেকে আসা আনিসুর রহমান ৫৩টি গরু এনেছেন গাবতলী হাটে। তিনি ৪২টি বিক্রি করেছেন। তবে তার প্রায় আড়াই লাখ টাকা মূল্যের একটি গরু শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেননি। এর আগে তার দাম দুই লাখ ১০ হাজার টাকা বললেও ক্রেতারা আজ দুই লাখের বেশি বলছেন না।

চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা আলী আকবর এবার তার ফার্মের ৪২টি গরু এনেছে গাবতলী বাজারে। তার সবগুলো গরুই মাঝারি আকারের। এর মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ হাজারের মধ্যে চারটি গরু বিক্রি করেছেন। বিক্রেতা আলী আকবর বলেন, ‘৬০ হাজারের গরু সাড়ে তিন মণ এবং ৭০ হাজারের গরুর চার মণ মাংস হবে।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘ক্রেতারা দরদাম বেশি করছে। তারা গতবারের সঙ্গে তুলনা করছে। কিন্তু গতবার এক কেজি মাংসের দাম ছিল সাড়ে তিনশ টাকা এবার তা হয়েছে পাঁচশ টাকা। তা ছাড়া এবার গরুর প্রতিটি খাবারের দাম বেড়ে দিগুণ হয়েছে। ক্রেতারা এটা বুঝতেই চাচ্ছেন না।’

জিগাতলার আরেক গ্রাহক আব্দুর রাজ্জাক ৯০ জাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছেন। বাজারের দাম অনুযায়ী গরু কিনে তিনি খুব খুশি। তিনি বলছেন, ‘প্রায় সাড়ে চার মণ মাংস হবে আমার এই গরুটিতে। ফলে খুশি হওয়াই কথা।’

এফএইচএস/বিএ/পিআর