রাত পোহালেই ঈদুল আজহা। এ ঈদকে কেন্দ্র করে নানা আয়োজনে সাজানো হয়েছে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানার পুরো সীমানাজুড়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। ভাঙা খাঁচা ও শেড নতুন করে সংস্কার ও প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
Advertisement
বিনোদনের জন্য ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেমসহ দর্শনার্থীদের বাড়তি সুবিধা দিতে বিভিন্ন নতুন রূপে সাজানো হয়েছে এ চিড়িয়াখানাকে। রয়েছে সিসিটিভিসহ চার স্তারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়া নতুন করে বিভিন্ন প্রাণীর প্রজনন হয়েছে।
ঈদে রাজধানীর এক লাখ দর্শনার্থীর আগমনের লক্ষ্যে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। ঈদের দিন শিশু-বৃদ্ধ সববয়সের মানুষ ঘুরে বেড়াতে পচ্ছন্দ করেন। ঈদ উৎযাপনে রাজধানীতে থেকে যাওয়া মানুষের কাছে চিড়িয়াখানা একটি প্রধান বিনোদনের কেন্দ্রস্থান। এদিন বিভিন্ন বয়সের প্রায় বিপুল দর্শনার্থীর পদচারণ হয়ে থাকে এখানে।
দর্শনার্থীদের ভোগান্তিবিহীন আনন্দ দিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, এবার অনেক ভালো প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে নতুন করে রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে। চারস্তরের নিরপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। বড় পরিসরে পার্কিং ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Advertisement
তিনি বলেন, নতুন করে অনেক প্রাণীর প্রজনন হয়েছে। এর মধ্যে ইমপালা, জিরাফ, কিমন-ইংল্যাকসহ বেশ কয়েকটি প্রাণী রয়েছে। যা দেখে ছোট-বড় সব বয়সী দর্শনাীর্থ ভিন্ন বিনোদন উপভোগ করতে পারবেন।
কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ঈদে উপচেপড়া দর্শনার্থীদের সব সুবিধা নিশ্চিত করতে চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে ১১টি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তারা আগত দর্শনার্থীদের সেবায় সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নিয়োজিত থাকবেন।
কর্তৃপক্ষ জানায়, এদিন উপচেপড়া মানুষের ভিড়ে প্রাণিকূলের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে থাকে। এ কারণে চিড়িয়াখানার চারজন পশু ডাক্তার নিয়োজিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি গরম থেকে প্রাণীদের নিরাপদ রাখতে বাড়তি পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তথ্য মতে, ১৮৬ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা দেশের সবচেয়ে বড় চিড়িয়াখানা। ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসেন হাজারও দর্শনার্থী। চিড়িয়াখানায় রয়েছে মাংসাশী আট প্রজাতির ৩৬টি প্রাণী, ১৯ প্রজাতীর বৃহৎপ্রাণি (তৃণভোজী) ২৭১টি, ১৮ প্রজাতির ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী ১৯৮টি।
Advertisement
এ ছাড়াও রয়েছে ১০ প্রজাতি সরীসৃপ ৭২টি, ৫৬ প্রজাতির ১১৬২টি পাখি, অ্যাকুরিয়ামে রক্ষিত মৎস্য প্রজাতিসমূহ ১৩৬ প্রজাতির ২৬২৭টি। সব মিলিয়ে রয়েছে ১৩৭টি পশু-পাখির খাঁচা।
চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, এবার ঈদের ছুটিতে চিড়িয়াখানায় এক লাখ দর্শনার্থীর আগমন হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ঈদে বাড়তি সুবিধা দিতে বিভিন্ন প্রাণিকূলের খাঁচা সংস্কার করা হয়েছে। কন্ট্রলরুম ও তথ্য কেন্দ্রের সুবিধা রাখা হয়েছে।
বর্তমানে চিড়িয়াখানাকে একটি বিনোদন ও শিক্ষামূলক দর্শণীয় স্থান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। জাতীয় চিড়িয়াখানাকে বিশ্বমানের আধুনিক ও ডিজিটাল করে তোলা হবে বলেও তিনি জানান।
এমএইচএম/বিএ/পিআর