ঈদের আগের দিন শুক্রবার সকাল থেকেই ঘরে ফেরা মানুষের উপচেপড়া ভিড় লেগে আছে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শুক্রবার শেষ দিনের মতো রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। ফলে বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে মানুষের ভিড়।
Advertisement
পেশাগত বা প্রয়োজনীয় কাজের জন্য যারা গত কয়েকদিনে বাড়ি ফিরতে পারেননি, সেসব মানুষ আজ ট্রেনে করে ঘরে ফিরতে কমলাপুর স্টেশনে ভিড় জমাচ্ছেন।
ঈদের ট্রেনের অগ্রিম টিকিট অনুযায়ী আজ ষষ্ঠ দিনের মতো রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছেন মানুষ। গত ২৩ আগস্ট যারা ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করেছেন, শুক্রবার তারাই ট্রেনে রাজধানী ছাড়ছেন। এছাড়া যারা সেদিন টিকিট পাননি তারা আজ স্ট্যান্ডিং টিকিট সংগ্রহ করে ট্রেনে বাড়ি ফিরছেন।
শুক্রবার সকাল থেকেই কমলাপুর স্টেশনে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলো এসে পৌঁছাতেই তাতে উঠে নিজের আসন নেওয়ার জোর প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। তবে এসব ভিড় ও ঠেলাঠেলি এড়াতে অনেকেই বিমানবন্দর স্টেশন থেকেই ট্রেনে উঠে এসেছেন। যেন কমলাপুরে ভিড় ঠেলে ওঠার হ্যাপা পোহাতে না হয়।
Advertisement
সকালে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস কমলাপুর স্টেশনে আসার সঙ্গে ট্রেনটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এমনকি এর ছাদেও তিল ধারনের ঠাঁই ছিল না।অনেকে টিকিট হাতে নিয়েও ট্রেনে উঠতে পারছিলেন না ভিড়ের কারণে।
স্টেশন দীর্ঘদিন ধরে ট্রলিতে করে যাত্রীদের ব্যাগ ব্যাগেজ পৌঁছানোর কাজ করেন হায়দার হোসেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) স্টেশনে সবচেয়ে বেশি ভিড় থাকলেও আজও কম নয়। বিশেষ করে ধুমকেতু, নীলসাগর, একতা, রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে। সকাল থেকে কমলাপুর ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোর প্রতিটি যাত্রী ঠাসা ছিল বলে তিনি জানান।
রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী এরশাদ আলী। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল ট্রেনে মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল। যে কারণে গতকাল যাইনি। আজ স্ট্যান্ডিং টিকিটে যাব বলে এসে দেখি আজও প্রচণ্ড ভিড়। অনেকেই বলছে প্রায় ট্রেনই লেট হচ্ছে, সব মিলিয়ে ভোগান্তি হবে জানি; তবুও যেতে হবে।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী জাগো নিউজকে বলেন, বিভিন্ন স্টেশনে অতিরক্ত যাত্রী ওঠানামার জন্য নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা বেশি সময় লাগছে। যে কারণে ট্রেন ঢাকায় পৌঁছাতে এবং ছেড়ে যেতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এরপরও যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা চেষ্টা করছি। শুক্রবার সারাদিন কমলাপুর থেকে ৬৭টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে বলে তিনি জানান।
Advertisement
ঈদ যাত্রায় সাত জোড়া বিশেষ ট্রেনপবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবার যাত্রীদের সুবিধার্থে সাত জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে। বিশেষ ট্রেনগুলো ঈদের আগে চারদিন ধরে চলাচল করছে। ঈদের পরেও সাতদিন চলাচল করবে। এসব ট্রেনের মধ্যে রয়েছে-
দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল: ঢাকা - দেওয়ানগঞ্জ- ঢাকা ২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর এবং ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলাচল করবে।চাঁদপুর স্পেশাল ১ : চট্টগ্রাম -চাঁদপুর-চট্টগ্রাম ২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর এবং ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলাচল করবে।
চাঁদপুর স্পেশাল ২ : চট্টগ্রাম -চাঁদপুর-চট্টগ্রাম ২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর এবং ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলাচল করবে।
রাজশাহী স্পেশাল: রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী ২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর এবং ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলাচল করবে।
পার্বতীপুর স্পেশাল: পার্বতীপুর-ঢাকা-পার্বতীপুর ২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর এবং ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলাচল করবে।
শোলাকিয়া স্পেশাল ১: ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৌরববাজার ঈদের দিন চলাচল করবে।
শোলাকিয়া স্পেশাল ২: ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ঈদের দিন চলাচল করবে।
এএস/এসআর/এমএস