আর মাত্র একদিন পরই ঈদুল আজহা। এ লক্ষ্যে রাজধানীসহ সারাদেশে কোরবানির পশু কেনার ধুম চলছে। রাজধানীর ছোট-বড় হাটগুলোতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের যেন দম ফেলার ফুসরত নেই।
Advertisement
গত শুক্রবার থেকেই রাজধানীর পশুর হাটে ব্যবসায়ীরা গরু আনতে শুরু করেছেন। তাদের থাকা, খাওয়ার কোনো সুব্যবস্থা নেই। কেউ কেউ পাশের নদী কিংবা খালে গোসল করছেন। আর পশুর যত্ম করতেই দিন পেরিয়ে যাচ্ছে। ফলে তাদের অবসর মেলে মধ্যরাতে।
বুধবার রাতে রাজধানীর নতুন বাজার এলাকার একশ ফিট পশুর বাজার, আবতাবনগর ও তিনশ ফিট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।
সেখানে গভীর রাতেও ব্যবসায়ীদের অনেকেই ঘুমাতে পারে না। পালাক্রমে তারা গরু পাহারা দেন। আর সময় কাটানোর জন্য তাস, লুডু আবার কেউ কেউ গানের আসর বসান। তবে এ সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দিনের মতোই তৎপর থাকেন।
Advertisement
একশ ফিট এলাকার পশুর বাজারে রংপুরের ব্যবসায়ী মোখলেস আর তিনজন মিলে রাত ১২টার দিকে তাস খেলছিলেন। সেই সময়ও বাজারে কিছু ক্রেতা থাকলেও অন্যরা তাদের সামলাচ্ছেন। তবে সাংবাদিক দেখে কিছুটা ভয় পান তারা। ছবি ছাপালে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে কি না তাও জানতে চান।
পরে আশ্বস্ত করলে তারা জানান, গত শুক্রবার বাজারে গরু এনেছেন। গোসল ও টয়লেটের ব্যবস্থা থাকলেও সেখানে লম্বা লাইন। এ কারণে পাশের জলাশয়ে গোসল করেন। আর রাতে গরু পাহারা দেয়ার জন্য তাস খেলেন।
পাবনা থেকে প্রতিবছরই আফতাব নগরে গরু নিয়ে আসেন মো. আশরাফ। মধ্যরাতে তিনি দশ-বারজন সঙ্গী নিয়ে গল্পগুজব করছিলেন। সাংবাদিক দেখে সবাই কথা বলার জন্য উদগ্রিব হয়ে ওঠেন। তারা জাগো নিউজকে জানান, পালাক্রমে গরু পাহারা দেন। গরুর ডাক্তার নিয়মিত এলেও তাদের চিকিৎসা করার কেউ নেই।
আশরাফ বলেন, পাবনা থেকে পরিচিত ৭০ জন গরু ব্যবসায়ী আছেন। চার-পাঁচজন জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বাড়ি গেছেন। গোসলের ব্যবস্থা নামে মাত্র। সেখানে যেতে পারাই কষ্টের। তাই সেখান থেকে শুধু খাবার পানি সংগ্রহ করা হয়।
Advertisement
একশ ফিটে নেত্রকোনার মো. মমিন, আবদুল আর করিমসহ অনেকে মিলে গানের আসর বসিয়েছেন। তারা জানান, গরু আনা আর বিক্রি নিয়ে অনেক চিন্তা হয়। তাই মনকে ভালো রাখার জন্য নিজেরাই গাইছেন।
এইচএস/এএইচ/বিএ