জাতীয়

ঘরে ফেরার জনস্রোত

জীবিকার তাগিদে সারাদিন কাজ আর কাজ। একঘেয়েমি জীবন। এ একঘেয়েমি জীবনের সাময়িক বিরতি দিয়ে কর্মজীবি মানুষের সামনে আসে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার মুহূর্ত। প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার ঐতিহ্য বাঙালির দীর্ঘদিনের। তাই তো শত ভোগান্তি ঠেলে মানুষ ছুটছে নাড়ির টানে।

Advertisement

পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বা প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতে সকলেই ব্যস্ত ছুটে চলায়। সড়ক-নৌ ও রেলপথে তিল ধারণেই ঠাঁই নেই। চারদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ।

যানবাহনে টিকেটের অপ্রতুলতা, যানজট, রাস্তায় ভোগান্তিসহ নানা বিপত্তি পেরিয়ে যারা রাজধানী ছাড়ছেন তাদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস আর আনন্দ। কাঁধে ব্যাগ, কেউ পরিবারের সদস্য নিয়ে আর কেউবা একাই ছুটছেন।এ স্রোত নাড়ির টানে ঘরে ফেরার।

বৃহস্পতিবার দিনভর রাস্তায় ছিল ঘরমুখো মানুষের ঢল তবে দুপুরের পর থেকে এ ঢল আরও বাড়তে থাকে। আর সন্ধ্যার পর যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। চারদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ।

Advertisement

ইট-পাথরের শহর ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে রাজধানীবাসী। ঈদ আসলেই টিকিটপ্রাপ্তি থেকে শুরু করে বাড়ি পৌঁছা পর্যন্ত পথে পথে ভোগান্তি পোহাতে হয় ঘরমুখী মানুষদের।

ঈদে বাড়ি ফিরতে পদে পদে ভোগান্তি তবুও শেকড়ের টানে শত ভোগান্তি উপেক্ষা করে স্বজনদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা সবার। সে কারণেরই রাজধানীর সবাই এখন বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট ও রেল স্টেশনমুখী।

রাতে রাজশাহীগামী ট্রেন ধরতে পরিবারের তিন সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে কমলাপুর স্টেশনে এসেছেন সরকারি চাকরিজীবি হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করেছিলাম। আজ শেষ অফিস করে বাড়ি ফিরছি। জানি পথে পথে নানা ভোগান্তি পোহাতে হবে ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী চাপ থাকবে। সব মিলিয়ে বিড়ম্বনার শেষ থাকবে না তবুও নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা। শত ভোগান্তি উপেক্ষা করে ঘরে ফেরাতেই আনন্দ।

এদিকে স্টেশন কর্মকর্তারা বলছেন, বিগত কয়েক দিনের চেয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরের পর থেকে কমলাপুর স্টেশন জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছে। অফিস শেষে সব প্রতিষ্ঠান ছুটি হওয়ায় আজই সবাই বাড়ি ফিরছেন। যাত্রীদের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

অন্যদিকে কল্যাণপুরে দূরপাল্লার বাসের কাউন্টারের সামনে উপস্থিত যাত্রীরা গাড়িতে ওঠার অপেক্ষায়। ব্যাগ ব্যাগেজসহ পরিবার সদস্যদের নিয়ে অপেক্ষা করছেন তারা। তাদের একজন তাহিরা ফারজানা।

তিনি বলেন, অফিস শেষ করে বাড়ি ফিরছি। সড়ক পথে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়। এবার সেখানে যুক্ত হয়েছে খানাখন্দ। বন্যার কারণে পুরো রাস্তা খানাখন্দে ভরা। ফলে দীর্ঘ যানজটের আশঙ্কা করছি। তবুও বাসে বাড়ি ফিরছি। কেননা ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে টিকিট পেলেও আসন পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হয় না।

এদিকে বাস কাউন্টারে কর্তব্যরতরা জানান, গাড়ি ঠিক সময়েই চলাচল করছে। তবে বৃষ্টির কারণে বাস এসে পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হতে পারে।

অন্যদিকে সদরঘাটে আগের দিনগুলোর তুলনায় আজ যাত্রীর চাপ বেড়েছে। দুপুরের পর থেকে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট এলাকায় ঘরে ফেরা মানুষের ঢল দেখা যায়। যেন ঘরে ফেরা মানুষের জনস্রোত নেমেছে রাজধানীতে।

এএস/এএইচ/জেআইএম