ঢাকা টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ বোলার নিয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। দুই পেসার ও তিন স্পিনার। তবে পেসারদের জন্য দুর্ভাগ্যই বলা যায়। দুই ইনিংসে একটি উইকেটও ঝুলিতে জমা করতে পারেননি মোস্তাফিজুর রহমান ও শফিউল ইসলাম। জমা করবেই বা কী করে, দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ১৫ ওভার বল করার সুযোগ পেয়েছেন এই দুই পেসার। বাকি তিন স্পিনারের মধ্যে সবচেয়ে সফল সাকিব তা এতক্ষণে আর কারও অজানা নয়।
Advertisement
কিন্তু অপর দুই স্পিনার তাইজুল-মিরাজের কাছ থেকে আরও ভালো বোলিং আশা করেন টেস্ট দলপতি মুশফিক। তাইজুল-মিরাজ সম্পর্কে মুশফিক বলেন, ‘সব টেস্টে যে সাকিব একাই ভালো করবে তা নয়। অন্য দুই স্পিনারও (মিরাজ-তাইজুল) যদি আরও ভালো বোলিং করে তাহলে সাকিবের ওপর চাপ আরও কম পড়বে। আমার মনে হয়, এভাবে টিম ওয়ার্ক আরও বাড়বে। যদিও তারা (মিরাজ-তাইজুল) দুজন ভালো বোলিং করেছে কিন্তু তাদের কাছ থেকে আরও বেশি চাই। কারণ, এমন উইকেট সব সময় হবে না। এমন উইকেটে সবার নিজের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করা উচিত। ওরা ওদেরটা করেছে কিন্তু আমার মনে হয় ওরা আরও ভালো করতে পারবে।’
মিরাজ-তাইজুল আগের তুলনায় ভালো বল করেছেন। তবে আরও ভালো আশা করেছিলেন মুশফিক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগে থেকে ওরা অবশ্যই একটু ভালো করেছে। তবে আমি মনে করি, এমন উইকেটে ওদের এর চেয়ে আরও অনেক ভালো করার সামর্থ্য আছে। ওদের (অস্ট্রেলিয়ার) ২৪৪ রানের প্রায় অর্ধেক রানই করেছে ডেভিড ওয়ার্নার। আমরা ওই জায়গায় যদি আরও ভালো বোলিং করতাম তাহলে ও আরও অনেক আগেই আউট হতে পারত। আমার মনে হয় অবশ্যই ওরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে কিন্তু আরও ভালো করার সামর্থ্য আছে।’
বাংলাদেশ দল স্পিন নির্ভর হয়ে পড়ছে-এমনটা মনে করছেন না অধিনায়ক মুশফিক। তার মতে, ‘স্পিন নির্ভর নয়, এটা নির্ভর করে আপনি কার সঙ্গে কোন কন্ডিশনে খেলছেন সেটার ওপর। উপমহাদেশে ঘাসের উইকেট বানিয়ে কোনো দলের বিপক্ষে তিন-চারজন পেসার নিয়ে খেলা, এটা আমাদের শক্তি নয়। আমাদের কাজ হবে নিজেদের শক্তি নিয়ে খেলা। আবার কোয়ালিটি স্পিনার ছাড়া স্পিনিং উইকেট বানিয়ে খেলব, সেটাও কিন্তু ঠিক নয়। আমাদের দলের যে শক্তি আছে, সেটা অনুসারে আমরা সেরা কম্বিনেশন করার চেষ্টা করি।’
Advertisement
বাংলাদেশের পেসারদের এখনও অনেক কাজ বাকি বলে মনে করেন মুশফিক। তার মতে, ‘পেস বোলিংয়ে অনেক কাজ করা বাকি। আমার মনে আছে জিম্বাবুয়েতে রবিউল এবং জিয়া ভাই যে পাঁচ উইকেট (জিয়া ওয়ানডেতে) পেয়েছিল, তারপর মনে হয় আমাদের আর কোনো পেসার পাঁচ উইকেট পায়নি। যদিও আমরা অনেক ম্যাচ খেলেছি। এখানে (পেস বোলিং) আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। কারণ স্পিনাররা সব সময় করে দেবে না। আমাদের কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কামিন্সের মতো অভিজ্ঞ পেসার নেই। আমরা আমাদের কন্ডিশনে যেটা করলে ভালো হয় সেটাই করেছি। পেসাররা ভালো করলে স্পিনারদের কাজ সহজ হয়ে যায়। ভবিষ্যতে আমরা চেষ্টা করব উন্নতি করার।’
তবে সংবাদ সম্মেলনের শেষ টাইগার দলপতি পরিবার ছাড়া ঈদ করা প্রসঙ্গে কিছুটা কষ্ট প্রকাশ করেন। তবে দেশের জন্য এমন ত্যাগে ততটা কষ্ট নেই বলেই মনে করেন তিনি। তার মতে, ‘ঈদে বাবা-মাকে মিস করব। আমি না শুধু, খেলার কারণে সবাই মিস করবে। এই ত্যাগ করে যদি দেশকে কিছু দিতে পারি, সেটা অনেক বড় ব্যাপার। চট্টগ্রামের উইকেট দেখব। তারপর কম্বিনেশনটাও বিবেচনা করব। সেটা আমাদের মাথায় আছে। আমাদের শক্তি অনুযায়ী আমাদের উইকেট বানানোর চেষ্টা করব।’
এমএএন/এনইউ/এমএস
Advertisement