শরতের আকাশে ছিল রোদের খেলা। তবুও কেমন যেন নিষ্প্রাণ মিরপুর। কারণ দুই অসি ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথ। কিন্তু হঠাৎ করেই জ্বলে উঠলেন সাকিব-তাইজুল-মিরাজরা। এ তিনজনের হাত ধরে ১১ বছর আগে ফতুল্লায় হারের প্রতিশোধ নিল বাংলাদেশ। আর মিরপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ পেল ২০ রানের ঐতিহাসিক জয়।
Advertisement
গতকাল থেকেই বাংলাদেশের জন্য মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান ওয়ার্নার ও স্মিথ। মাথা ব্যথাটা আরও বাড়ে চতুর্থ দিন ওয়ার্নারের সেঞ্চুরি। মাঠ থেকে শুরু করে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছিল গ্যালারিতেও। কিন্তু হঠাৎই ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন সাকিব। ওয়ার্নার-স্মিথ মিলে করেছিল ১৩০ রানের জুটি ভেঙে সাজঘরে ফেরালেন ওয়ার্নারকে।
সাকিব তো সাকিবই, বেশি সময় নিলেন না অসি ব্যাটিংয়ের অপর ভিত্তি স্মিথকে তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরাতে। ৪৫ ওভারের পঞ্চম বলে সাকিবকে খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষক মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন স্মিথ। ৩৭ রান করেই সাজঘরে ফেরেন এই বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যান।
অস্ট্রেলিয়া দল তখন চোখে দেখছে সরষে ফুল। সেই অপ্রস্তুত দলের ওপর তখন চড়াও হলেন আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলাম। স্লিপে সৌম্যের দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নিলেন হ্যান্ডসকম্ব। দুই ইনিংস মিলে বেশ কিছু ক্যাচ মিস করলেও, অসাধারণ একটি ক্যাচ নিয়েছে সৌম্য দুইবারের চেষ্টায়।
Advertisement
এরপর আবারও আঘাত হানেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। অপ্রস্তুত অস্ট্রেলিয়াকে আরও অপ্রস্তুত করতে ওয়েডের উইকেটটি তুলে নেন সাকিব। অসি ব্যাটসম্যানরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। আর আকাশে উড়তে থাকেন সাকিব। গ্যালারি জুড়ে তখন ‘সাকিব, সাকিব’ চিৎকার।
অস্ট্রেলিয়া হয়তো এমন পরিস্থিতিতে আশায় বুক বাধঁছিলেন ম্যাক্সওয়েল-অ্যাগারের একটি ভালো পার্টনারশিপ হবে কিন্তু সাকিব ঝড়ে তখন বিধ্বস্ত, দুর্বল মনোবলের অসিরা। আর সেই অপ্রস্তুত অ্যাগারকে তুলে নেন তাইজুল। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরেন এই বোলার।
এরপর জয়ের স্বপ্নে বিভোর টাইগরারা লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরলে প্রথম বলেই ম্যাক্সওয়েলকে বোল্ড করেন সাকিব। শেষে কামিন্স-লিওন কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও হার থেকে রক্ষা করতে পারেনি। সাকিব দুই ইনিংস মিলে নেন ১০ উইকেট।
এর আগে ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে সাকিব-তামিমের দুই অর্ধশতকে ভর করে ২৬০ রানের ইনিংস সাজায় বাংলাদেশ। কিন্তু টাইগার স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে এবং সাকিবের অসাধারণ রেকর্ডের সামনে দাঁড়াতেই যেন পারেনি অসিরা। ২১৭ রানেই অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া।
Advertisement
তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ২২১ রানে থামে বাংলাদেশ। তবে এই ইনিংসেও অসাধারণ ব্যাট করেন তামিম ইকবাল। তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতক। আর অস্ট্রেলিয়ার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৬৫।
এমএএন/এমআর/আরআইপি