নাসিরনগর বড় বৈচিত্র্যময়। আকাশ-নদীর সাথে চলে তার মিতালি। ফসলি মাঠের সাথে কিষাণের সখ্যতা। মাঝি-মাল্লার ভাটিয়ালি গান, বুনোহাঁসের মত পানিতে গা ভাসায় দুষ্টু ছেলের দল। জেলেরা মাছ ধরছে রাত- বিরাতে।
Advertisement
ইতিহাস-ঐতিহ্যের দিক থেকেও নাসিরনগর একধাপ এগিয়ে। শতবর্ষী জমিদারবাড়ির স্থাপনা দেখলে তা সহজেই বোধগম্য হয়। বিশেষ করে হরিপুর জমিদারবাড়ি ও বুড়িশ্বর সুকুমার দেব রায়ের বাড়ির নকশা ও শৈল্পিক কারুকাজই সাক্ষী দেয়। এছাড়াও মোগল আমলের মসজিদ-মন্দির জানান দেয় ঐতিহ্য।
আরও পড়ুন- ঈদের ছুটিতে বিদেশ ভ্রমণ
ফান্দাউকের একপাশে নির্জন এলাকায় অবস্থিত কালীমন্দির। এই শতবর্ষী মন্দির বলভদ্র সেতুর উপর থেকে দেখলে মনে হবে- যেন কোন দ্বীপ ভেসে উঠেছে। শেষ বিকেলে এই মনোরম ব্রিজে সময় কাটায় বহু দর্শনার্থী।
Advertisement
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামে অবস্থিত রাজবাড়ি। এটি হরিপুর জমিদারবাড়ি বা হরিপুর রাজবাড়ি নামেও পরিচিত। তিতাস নদীর পূর্বপাড়ে অবস্থিত বাড়িটি। এটি গ্রামের দক্ষিণ পাশে এবং নাসিরনগর সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে তথা নাসিরনগর উপজেলা ও মাধবপুর উপজেলার সংযোগ পথে অবস্থিত।
প্রাসাদটির ভৌগোলিক অবস্থান ২৪ ডিগ্রি ৬'২৯.৪১" উত্তর, ৯১ ডিগ্রি ১৫'২৬.৩৪" পূর্ব। এর মালিক এবং পরিচালকবর্গ বাংলাদেশ সরকার। জানা যায়, ১৮শ’ শতাব্দীতে প্রাসাদটি জমিদার কৃষ্ণপ্রসাদ রায় চৌধুরী (১৮৭০-১৯৩৬) কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। তবে কারো কারো মতে, এটি গৌরীপ্রসাদ রায় চৌধুরী এবং কৃষ্ণপ্রসাদ রায় চৌধুরী মিলিতভাবে তৈরি করেছেন।
প্রকৃতির দিক থেকে নাসিরনগরকে বিচার করলে শতভাগ প্রাপ্তি তারই। ঋতুর পালাবদল যেখানে নিয়ম করে হয়। বর্ষায় খাল-বিল, নদী-নালা, হাওর-বাওর পানিতে টলমল। চৈত্রের রোদে মাটি ফেটে খা-খা।
আরও পড়ুন- ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের প্রস্তুতি
Advertisement
মিনি কক্সবাজার নামে পরিচিতি লাভ করেছে নাসিরনগরের কুন্ডা-ধরন্তী মধ্যবর্তী জায়গাটুকু। বিশাল হাওয়ারের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে এক সরু পথ। শেষ বিকেলে দলবেঁধে জমা হয় বহু দর্শনার্থী। তারা গায়ে লাগায় নির্মল বায়ু। বহুদূর থেকে ভেসে আসে ঢেউ। ঢেউয়ের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ শুনতে বেশ ভালোই লাগে।
নাসিরনগরের ডাকাবাংলোর কথা জানে অনেকেই। লঙ্গনের তীরে অবস্থিত। সারি সারি গাছবেষ্টিত পুরো এলাকা। এখান থেকে বসেই দেখা যায় রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে থাকা অশ্বত্থ। অশ্বত্থের পাশ দিয়ে চলে যায় সারি সারি ছোট-বড় নৌকা। আকাশে ডানা মেলে উড়ে যায় চিল।
যেভাবে যাবেনযেকোন জায়গা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন অথবা সরাইল বিশ্বরোড। রেলস্টেশন বা বিশ্বরোড থেকে অটোরিকশা সহযোগে নাসিরনগর। এছাড়া নোয়াপাড়া রেলস্টেশন অথবা রতনপুর বিশ্বরোড থেকে অটোরিকশা সহযোগে নাসিরনগর।
এসইউ/পিআর