অর্থনীতি

সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণ সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ করার প্রস্তাব

সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণের পরিমাণ সর্বনিম্ন ২০ আর সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এ ঋণে সুদহার প্রস্তাব করা হয়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ, যার ৫ শতাংশ দেবেন ঋণগ্রহীতা এবং সাড়ে ৩ শতাংশ ভর্তুকি হিসেবে পরিশোধ করবে সরকার। সম্প্রতি দেয়া এ প্রস্তাবে চাকরি গ্রেড ও বেতনের ভিত্তিতে ঋণের পরিমাণ নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

Advertisement

প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, যেসব সরকারি চাকরিজীবীর চাকরির বয়স ১৫ বছর হয়েছে তারাই এ খাতের ঋণ নিতে পারবেন। সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণে সুদের ভর্তুকিবাবদ বছরে ব্যয় হবে ৭০০ থেকে ৯৮০ কোটি টাকা। ঋণ দিতে মোট প্রয়োজন হবে ২০ হাজার থেকে ২৮ হাজার কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগ বলছে, সরকারি চাকরিতে মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে গৃহঋণে সুদের হার কমিয়ে পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন। এ প্রস্তাবনাটি বাস্তবায়ন করতে সরকারের খুব বেশি অতিরিক্ত টাকারও প্রয়োজন হবে না। কারণ এখন চাকরিজীবীরা পেনশনের অর্ধেকের বেশি টাকা তুলতে পারবেন না। পেনশনের বাকি যে অর্ধেক টাকা সরকারের কোষাগারে জমা থাকবে সেখান থেকেই এ অর্থের সংস্থান হবে। প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, বর্তমানে ব্যাংকিং সেক্টরে অসল টাকার পরিমাণ অধিক। একই সঙ্গে অবিক্রিত ফ্ল্যাটের সংখ্যাও বাড়ছে। আর একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য একটি বাসস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এ প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপকারের পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত ও আবাসন নির্মাণ খাতও উপকৃত হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন এনডিসি জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি কর্মকর্মতা-কর্মচারীদের গৃহঋণ বাড়ানোর বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষাধীন।

তিনি জানান, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এ বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

Advertisement

অর্থ বিভাগের ওই প্রস্তাবনায় পঞ্চম গ্রেড থেকে উপরের কর্মকর্তা, যাদের বেতন ৪৩ হাজার টাকার বেশি, তাদের ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য ৭৫ লাখ টাকা, অন্য সিটি কর্পোরেশনের জন্য ৬০ লাখ এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের জন্য ৫০ লাখ টাকা গৃহঋণ প্রস্তাব করা হয়েছে।

একইভাবে ৯ম গ্রেড থেকে ৬ষ্ঠ গ্রেড পর্যন্ত কর্মকর্তা, যাদের বেতন ২২ হাজার থেকে ৩৫ হাজার বা তারও বেশি, তাদের ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য ৬৫ লাখ টাকা, অন্য সিটি কর্পোরেশনের জন্য ৫৫ লাখ এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জন্য ৪৫ লাখ টাকা গৃহঋণ দেয়ার প্রস্তাব।

১০ম গ্রেড থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কর্মকর্তা, যাদের বেতন ১১ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা, তাদের ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য ৫৫ লাখ টাকা, অন্য সিটি কর্পোরেশনের জন্য ৪০ লাখ এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের জন্য ৩০ লাখ টাকার প্রস্তাব।

১৪তম গ্রেড থেকে ১৭তম গ্রেড পর্যন্ত কর্মকর্তা, যাদের বেতন ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার ২০০ টাকা, তাদের ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য ৪০ লাখ টাকা, অন্য সিটি কর্পোরেশনের জন্য ৩০ লাখ এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের জন্য ২৫ লাখ টাকা গৃহঋণ দেয়ার প্রস্তাব।

Advertisement

এছাড়া ১৮তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত কর্মকর্তা, যাদের বেতন ৮ হাজার ২৫০ থেকে ৮ হাজার ৮০০ টাকা, তাদের ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য ৩০ লাখ টাকা, অন্য সিটি কর্পোরেশনের জন্য ২৫ লাখ এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের জন্য ২০ লাখ টাকা গৃহঋণ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা প্রায় ২১ লাখ।

এমইউএইচ/জেডএ/আইআই