আন্তর্জাতিক

‘মুঝে মাফ কার দো’

স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু রাম রহিম সিংকে আদালতে বিচারক যখন ১০ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করেন তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন এই ধর্ষক। এসময় আদালতের কাছে প্রার্থনা করে হিন্দিতে বলেন, ‘মুঝে মাফ কার দো’ (আমাকে ক্ষমা করে দিন)। সোমবার হরিয়ানার রোহতকে সুনারিয়া কারাগারে আধ্যাত্মিক এই ধর্মগুরুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১০ বছরের দণ্ড দেন আদালত।

Advertisement

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালত রায় ঘোষণা করার পর গুরমিত রাম রহিম সিং আদালত কক্ষ ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানান। আদালত কক্ষে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এসময় শাস্তি কমিয়ে আনতে হাতজোড় করে প্রার্থনা জানান তিনি।

গত শুক্রবার একই বিচারকের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন ভারতের প্রভাবশালী এই ধর্মগুরু। তার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পর ভক্তদের দাঙ্গা ও সহিংসতার আশঙ্কায় রোহতকের সুনারিয়া কারাগারে বিশেষ অাদালত বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ডেরা সাচ্চা সওদার প্রধান রাম রহিম সিং ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এই কারাগারেই বন্দি আছেন।

বহুল প্রতীক্ষিত এই মামলার রায় ঘোষণা করতে স্থানীয় সময় দুপুর দুইটা ১৬ মিনিটে সিবিআই’র বিচারপতি জগদ্বীপ সিং রোহতকের সুনারিয়া কারাগারে পৌঁছান। বার্তাসংস্থা এএনআই বলছে, রায় শুনতে দুপুর ১ টা ৫৬ মিনিটে কারাগারে পৌঁছান ধর্মগুরু রাম রহিমের আইনজীবী এসকে নরওয়ানা।

Advertisement

পরে দুই পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের জন্য ১০ মিনিটের সময় পান। এসময় ধর্মগুরু রহিমের আইনজীবীরা আদালতের কাছে বলেন, রাম রহিম সিং একজন সমাজকর্মী। তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। সুতরাং এ ব্যাপারটি বিবেচনা করে রায় দেয়া উচিত। এসময় বাদীপক্ষের আইনজীবীরা রাম রহিমের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

যুক্তি তর্ক উপস্থাপন শেষে সিবিআই’র বিশেষ আদালতের বিচারক জগদ্বীপ সিং ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রাম রহিমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন।

৫০ বছর বয়সী স্বঘোষিত এই ধর্মগুরুর ভারত এবং ভারতের বাইরে অন্তত ৬ কোটি ভক্ত আছে। ২০০২ সালে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর কাছে এক তরুণী চিঠি লেখেন। চিঠিতে গুরু রাম রহিমের আস্তানায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। ওই তরুণী চিঠিতে জানান, তার মতো আরো অনেক তরুণীই গুরুর প্রতি তরুণীর পরিবারের অন্ধ ভক্তির কারণে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

ওই চিঠির পর দেশটির কেন্দ্রীয তদন্ত ব্যুরোকে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। তবে ধর্ষণের শিকার তরুণীর পরিচয় খুঁজে বের করতে কয়েক বছর লেগে যায়। তবে ২০০৭ সালে ওই তরুণী প্রকাশ্যে এসে গুরু রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

Advertisement

এসআইএস/আইআই