‘ঢাকাইয়াগো কাছে পছনদ্ (পছন্দ) বড়, ট্যাকা (টাকা) ব্যাপার না।’ পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ মাঠে গরু-ছাগল কিনতে এসে বিক্রেতাকে উদ্দেশ করে এমন কথা বলছিলেন খাস ঢাকাইয়া এক ক্রেতা। রহমতগঞ্জ খেলার মাঠের বাইরের রাস্তায় দুটি গরুর দরদাম করছিলেন তিনি।
Advertisement
কুষ্টিয়ার বামনদী এলাকার মতিয়ার নামের এক ব্যবসায়ী গরু দুটি নিয়ে এসেছেন। এর একটি সাদা ও একটি লাল রংয়ের ষাড়। মতিয়ার গরু দুটির দাম হাঁকেন সাড়ে সাত লাখ টাকা। ওই ঢাকাইয়া ভদ্রলোক চার লাখ টাকা পর্যন্ত দর কষাকষি করলেন।
চলে যাওয়ার সময় ভদ্রলোক মতিয়ারকে উদ্দেশ করে আরেকবার বললেন, দিলি না বেটা কিনতেইতো আইছিলাম।
মতিয়ারের পাল্টা জবাব, স্যার আপনারা কিনবেন দেখেইতো আমরা কষ্ট কইরা নিয়ে আইছি।
Advertisement
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত গরু-ছাগলের হাটের মধ্যে রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ একটি। আনুষ্ঠানিকভাবে হাট শুরু হবে বুধবার থেকে। তবে ইতোমধ্যেই মাঠ গরু-ছাগলে ভরে গেছে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মতিয়ার নামের ওই ব্যবসায়ী জানান, গত কয়েক বছর যাবৎ রহমতগঞ্জ খেলার মাঠেই গরু বিক্রি করতে আসেন তিনি। এখানকার মানুষ দামি গরু কিনতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। পছন্দ হইলে দাম বেশি দিয়ে হলেও গরু কিনে নিয়ে যান।
তিনি জানান, যে দুটি গরুর দাম সাড়ে সাত লাখ টাকা হেঁকেছেন এগুলো ষাড় গরু। এর একটি তিন বছর আগে বাছুর অবস্থায় কিনে বাড়িতে লালন-পালন করেছেন। অন্যটি আট মাস আগে বাজার থেকে কিনে কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য লালন-পালন করেন। বাড়িতে পালা এ গরু দুটির কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়ার ব্যাপারে মতিয়ার খুবই আশাবাদী।
মতিয়ার জানান, সোমবার ভোরেই এ দুটিসহ মোট ১০টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন। এরই মধ্যে গরু দুটির দাম ভালোই বলেছে ক্রেতারা। এখনই ছেড়ে দিতে চাইছেন না। বাজার বুঝে আগামী দু-একদিনের মধ্যে বিক্রি করে ফেলবেন। মতিয়ারের মতো আরও অনেকেই বড় বড় আকারের দামি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন।
Advertisement
তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, পুরান ঢাকার এ হাটে তারা গরুর দাম ভালো পাবেন। এ হাটে বড় বড় ব্যবসায়ীরা বড় বড় গরু দাম দিয়ে কেনেন। তাদের কাছে পছন্দ বড়, টাকা বড় ব্যাপার না। এ আশাতেই তারা এ হাটে এসেছেন।
এমইউ/জেডএ/আরআইপি