জাতীয়

৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ আসছেন পোপ ফ্রান্সিস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফরে আসছেন খ্রিস্টান ধর্মের রোমান ক্যাথলিক শাখার প্রধান ধর্ম গুরু পোপ ফ্রান্সিস। চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর তিনদিনের আনুষ্ঠানিক সফর করবেন তিনি।

Advertisement

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সোমবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ৩১ বছরে কোনো পোপের এটাই হবে প্রথম বাংলাদেশ সফর। পোপকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা দেয়া হবে।

বাংলাদেশ সফরকালে তিনি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত প্রায় দেড় বছর ধরে পোপের বাংলাদেশ সফর নিয়ে আলোচনা চলছিল। পোপও বাংলাদেশে আসার সুবিধাজনক সময় খুঁজছিলেন। অবশেষে নভেম্বরে তার সফরসূচি নির্ধারিত হয়।

৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন। বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক ও উদার বহুত্ত্ববাদী বৈশিষ্ট্য পোপ’কে বাংলাদেশ সফরে আগ্রহী করে তুলেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় চার লাখ ক্যাথলিক খ্রিস্টান বসবাস করছে এবং একজন কার্ডিনাল রয়েছেন।

১৯৮৬ সালে পোপ জন পল দ্বিতীয়’র পর এই প্রথম আরেক জন পোপ বাংলাদেশে আসছেন। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন আর ধর্মনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্য দেখতে আগ্রহী। ঋতুর বৈচিত্র্য বিবেচনায় সবচেয়ে অনুকূল সময় হিসেবে নভেম্বরকেই বেছে নেয়া হয়েছে।

পোপ ফ্রান্সিস ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ২৬৬তম পোপ নির্বাচিত হন। বর্তমান পোপ ফ্রান্সিসের প্রধান কার্যালয় রোম শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত ভ্যাটিকান সিটি। রোমের বিশপ হিসেবে, তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটি উভয়েরই প্রধান। খ্রিস্টানদের সোসাইটি অব জেসাস নামক ধর্মসংঘের প্রথম পোপ হলেন ফ্রান্সিস। একইসঙ্গে তিনি পুরো আমেরিকান অঞ্চলের প্রথম পোপ, দক্ষিণ গোলার্ধের প্রথম পোপ এবং অষ্টম শতকের সিরীয় তৃতীয় গ্রেগরির পর ইউরোপের বাইরে থেকে হওয়া প্রথম পোপ-ও তিনি। পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি সেইন্ট ফ্রান্সিস অব অসিসি’কে সম্মান দেখিয়ে নিজের নাম বেছে নেন।

Advertisement

পোপ ফ্রান্সিসের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনোস আইরেসে। রোমান ক্যাথলিক যাজকদের প্রশিক্ষণ কলেজে পড়াশোনার আগে তিনি কিছুদিন রাসায়নিক প্রযুক্তিবিদ ও নাইট ক্লাবের ‘বাউন্সার’ হিসেবে কাজ করেন। ক্যাথলিক পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক হয় ১৯৬৯ সালে। বুয়েনোস আইরেসের আর্চবিশপ হন ১৯৯৮ সালে এবং পোপ জন পল দ্বিতীয় তাকে ২০০১ সালে কার্ডিনাল করেন। কার্ডিনাল হওয়ার মাধ্যমে তিনি ক্যাথলিক ধর্মসঙ্ঘে পোপের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকারী হন।

পোপ ফ্রান্সিস গত বছরের অক্টোবরে নতুন ১৭ ধর্মযাজককে কার্ডিনাল মনোনীত করেন যার মধ্যে বাংলাদেশের আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও রয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে তিনিই প্রথম কার্ডিনাল হন। অর্থাৎ পরবর্তী পোপ নির্বাচনে একজন বাংলাদেশিও ভোট দেবেন। এই কার্ডিনালদের মধ্য থেকেই পরবর্তী পোপ নির্বাচিত হবেন।

জেপি/এমএআর/আইআই