ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনও বৃষ্টির চোখ রাঙানি ছিল। ভালোয় ভালোয় প্রথম সেশনের খেলা গড়িয়েছে। দ্বিতীয় সেশনের খেলাও মাঠে গড়ায়। এরপর চা বিরতি দিলে ক্রিকেটার ও আম্পায়ারা মাঠ ছাড়েন।
Advertisement
এরপরই মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হয় বৃষ্টি। পড়িমরি করে গ্রাউন্ডসম্যানরা উইকেট ঢেকে দিলেন। ক্রিকেটাররা রয়েছেন ড্রেসিং রুমে। সুতরাং আপাতত খেলা বন্ধ।
তবে বৃষ্টি খুব বেশিক্ষণ ভোগায়নি। অল্প কিছুক্ষণ পরই থেমে যায় বৃষ্টি। আবারও শুরু হয়েছে খেলা।
বৃষ্টির আগে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং বিপর্যয়ে হাল ধরেন প্যাট কামিন্স ও অ্যাস্টন আগার। নবম উইকেটে অ্যাস্টন আগারের সঙ্গে ৪৯ রানের জুটি গড়েন তিনি। সাকিব কামিন্সকে ফেরান সাজঘরে। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে কামিন্সকে বোল্ড আউট করেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। বিদায়ের আগে ৯০ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২৫ রান করেছেন কামিন্স।
Advertisement
ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে শেষ বেলায় অস্ট্রেলিয়ার ৩ উইকেট নিয়ে বড় লিডের লক্ষ্যে দ্বিতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। আর দিনের শুরুতেই সবচেয়ে বড় বাধা স্মিথকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বলে ব্যাটই ছোঁয়াতে পারেননি আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ এই ব্যাটসম্যান। আউট হওয়ার আগে স্মিথের ব্যাট থেকে আসে ৮ রান।
স্মিথকে ফিরিয়ে লিডের স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশের সামনে প্রতিরোধ গড়েন রেনশ-হ্যান্ডসকম্ব। দুইজনে মিলে গড়েন ৬৯ রানের জুটি। অবশেষে সেই জুটি ভাঙেন তাইজুল। ৩৩ রান করা হ্যান্ডসকম্বকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান বাঁহাতি এই স্পিনার।
এর আগে বাংলাদেশকে ২৬০ রানে থামিয়ে দিয়ে প্রথমদিনই ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। একপাশ থেকে শফিউল আরেক পাশ থেকে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে বল দিয়ে অস্ট্রেলিয়া ইনিংসে আক্রমণের দায়িত্ব তুলে দিলেন অধিনায়ক মুশফিক।
ষষ্ঠ ওভারেই মিরাজের স্পিন বিষে নীল হলো অস্ট্রেলিয়া। ওভারের দ্বিতীয় বলেই মিরাজের বলে পুরোপুরি পরাস্ত হলেন ওয়ার্নার। আবেদন করতেই আঙুল তুলে দিলেন আম্পায়ার আলিমদার। তবে নিজের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ওয়ার্নার। এ কারণে রিভিউ চেয়ে বসলেন তিনি। রিভিউতে দেখা গেল, ব্যাটের কানায় লেগে প্যাডে আঘাত হেনেছে বল। সুতরাং আলিমদার নিজের ভুল স্বীকার করে নটআউট ঘোষণা করলেন।
Advertisement
পরের বলে আর কোনো সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ রাখলেন না মিরাজ। এবারও পুরোপুরি পরাস্ত ওয়ার্নার। এবারও জোরালো আবেদন। কোনো দ্বিধা না করে আবারও আঙ্গুল তুলে দিলেন আলিম দার। এবার আর রিভিউর আবেদনও করলেন না ওয়ার্নার। ৮ রান করে ফিরে গেলেন তিনি।
পরের ওভারে বোলিংয়ে আসলেন সাকিব আল হাসান। ওয়ার্নারের আউটে চাপে পড়া অস্ট্রেলিয়াকে আরও চেপে ধরলেন যেন তিনি। সাকিবের প্রথম বলেই দ্রুত সিঙ্গেল নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে গেলেন নতুন উইকেটে আসা উসমান খাজা। রানের খাতাই খুলতে পারলেন না তিনি।
স্পিন ঘূর্ণি অব্যাহত রাখলেন সাকিব। উপমহাদেশের উইকেটে স্পিন যে কতটা বিষাক্ত সেটা তিনি আবারও বুঝিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ানদের। উসমান খাজা আউট হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া নাইটওয়াচম্যান (রাতের পাহারাদার) হিসেবে উইকেটে পাঠিয়েছিল নাথান লিওনকে। কিন্তু তিনিও সাকিবের ঘূর্ণি ফাঁদে পড়লেন। এলবি আউট হয়ে গেলেন কোনো রান না করেই।
১৪ রানেই টাপটপ পড়ে গেলো অস্ট্রেলিয়ার ৩ উইকেট। দারুণ চাপে পড়ে গেলো স্মিথের দল। শেষ পর্যন্ত ৯ ওভারে ৩ উইকেটে ১৮ রান তুলেই দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করলেন আম্পায়াররা।
এআরবি/এনইউ/পিআর