আন্তর্জাতিক

ধর্ষক ধর্মগুরুর কাছে গিয়ে বউ হারালেন কমলেশ

ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ভারতের হরিয়ানা প্রদেশের ধর্ষক ধর্মগুরু রাম রহিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। এই ভণ্ড ধর্মগুরুর কাছে গিয়ে বউ হারিয়েছেন বলে মামলা করেছিলেন কমলেশ নামের এক ব্যক্তি।

Advertisement

২০১৫ সালের স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে গিয়েছিলেন গুরুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। সংসারে নিত্য অভাব-অভিযোগ আর অশান্তি লেগেই থাকে। যদি গুরুর আশীর্বাদে যদি অবস্থার একটু পরিবর্তন হয়। এমন আশা নিয়েই রাজস্থানের জয়পুর থেকে হরিয়ানার সিরসায় পাড়ি দিয়েছিলেন দিনমজুর কমলেশ রাইগর ও স্ত্রী গুড্ডি দেবী।

গুরু গুরমিত রাম রহিমের সাক্ষাৎও পেয়েছিলেন। ২৪ থেকে ২৮ মার্চ ডেরা সচ্চা সৌদার সদর দফতরের আশ্রমে থেকে ভেবেছিলেন, ‘দর্শন যখন হলো এবার তাহলে ফিরে যাবেন জয়পুরে। কিন্তু ২৮ তারিখ সকালে ভেতর থেকে ডাক পড়ে গুড্ডির।

ডেরার একজন এসে কমলেশকে জানান, ‘ডেরা প্রমুখের সেবা আছে। তোমার বউ তাতে স্থান পেয়েছে। সে ভাগ্যবতী।’ কমলেশ যেতে দেন স্ত্রীকে। ভেবেছিলেন, ভালই হলো। গুরুর নজরে কপাল ফিরবে এবার।

Advertisement

আসল কপালতো পুড়েছিল। দু’দিন পরেও গুড্ডি না ফেরায় কমলেশ খোঁজ নিতে যান। তাকে বলা হয়, ‘বউ ভালো আছে। তুমি এখন বাড়ি যাও। ঠিক সময়ে গুড্ডি ফিরে যাবে।’

কমলেশ যান সিরসা থানায়। সেখানে বলা হয়, ‘যেখান থেকে এসেছ, সেখানেও অভিযোগ করো।’ চার ও ছয় বছরের দুই ছেলের হাত ধরে রাজস্থানে ফেরেন কমলেশ। জয়পুরের জহওর সার্কল থানায় ডেরা ও তার প্রধান গুরমিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে বলেন, গুড্ডিকে ওই আশ্রমে সেবাদাসী করে রাখা হয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

এ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তাদের গা-ছাড়া মনোভাব দেখে আদালতের দ্বারস্থ হন কমলেশ। তার আইনজীবী বাবুলাল বৈরোয়া বলেন, ‘প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত হাল্কা করার চেষ্টা করছিল রাম রহিম। ২০১৫ সালের ২১ মে আদালতে শুনানির দু’দিন আগে কমলেশকে অপহরণ করে ডেরা-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। কমলেশকে আদালতে নিয়ে গিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। আমি ওই দিন কমলেশকে আদালতে দেখতে পেয়ে দলবল নিয়ে ছাড়িয়ে আনি।’

তারপরেও একাধিকবার সিরসার ডেরা সদরে স্ত্রীর খোঁজে গিয়েছিলেন কমলেশ। প্রতি বার তাকে বলা হয়েছে, স্ত্রী ভালো আছেন। ঠিক সময়ে বাড়ি ফিরবেন।

Advertisement

৭ সেপ্টেম্বর ফের মামলার শুনানি হবে। তার আগে আদালত গুরমিতকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করায় কিছুটা বল পাচ্ছেন নিরাপদ স্থানে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা কমলেশ। গুরমিতের শাস্তি হলে গুড্ডি মুক্তি পাবেন এমনটাই আশা করছেন তিনি।

টিটিএন/পিআর