আন্তর্জাতিক

ধর্ষক ধর্মগুরুর রায় : হরিয়ানা পাঞ্জাবে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ

ভারতের হরিয়ানা প্রদেশের ধর্ষক ধর্মগুরু রাম রহিম সিংয়ের বিরুদ্ধে সোমবার দেশটির বিশেষ আদালত ধর্ষণ মামলার সাজা ঘোষণা করবেন। স্বঘোষিত এই ধর্মগুরু আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ভক্তদের রক্তাক্ত সহিংসতায় পাঞ্জাব, হরিয়ানা, নয়াদিল্লিসহ দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাণ গেছে ৩৮ জনের।

Advertisement

সিবিআই’র বিশেষ আদালতের রায় ঘোষণার আগে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে চন্ডিগর পুলিশের মহাপরিদর্শক স্যান্ধু বলেন, সোমবার হরিয়ানার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করাই হবে পুলিশের প্রধান বিষয়।

পঞ্চকুলায় শুক্রবার যে ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেটি নিশ্চিত করা হবে। রোহতকের যে কারাগারে ধর্মগুরু রাম রহিমকে রাখা হয়েছে, সেই কারাগারমুখী সব ধরনের রাস্তা ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

পুলিশের শীর্ষ এই কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবারের সহিংসতার পর পুলিশ ৫২টি মামলা দায়ের করেছে। সহিংসতায় জড়িত সন্দেহে ৯২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

ডেরা প্রধানের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে চলমান উত্তেজনার মাঝে হরিয়ানা ও পাঞ্জাবে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা আগামী আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

৫০ বছর বয়সী স্বঘোষিত এই ধর্মগুরুর ভারত এবং ভারতের বাইরে অন্তত ৬ কোটি ভক্ত আছে। ২০০২ সালে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর কাছে এক তরুণী চিঠি লেখেন। চিঠিতে গুরু রাম রহিমের আস্তানায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। ওই তরুণী চিঠিতে জানান, তার মতো আরো অনেক তরুণীই গুরুর প্রতি তরুণীর অন্ধ ভক্তির কারণে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

ওই চিঠির পর দেশটির কেন্দ্রীয তদন্ত ব্যুরোকে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। তবে ধর্ষণের শিকার তরুণীর পরিচয় খুঁজে বের করতে কয়েক বছর লেগে যায়। তবে ২০০৭ সালে ওই তরুণী প্রকাশ্যে এসে গুরু রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

শুক্রবার হরিয়ানার পাঁচকুলার আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন রাম রহিম। তাণ্ডবের শিকার পাঁচকুলায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে। সহিংসতায় হরিয়ানার সিরসায় রাম রহিমের আশ্রম এলাকায়ও প্রাণহানি হয়েছে। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর রাম রহিমের অনেক ভক্ত বলছেন, তার এই রায়ে প্রচণ্ড কষ্ট পেয়েছেন তারা।

Advertisement

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হরিয়ানার দোকানি রাজকুমার আল-জাজিরাকে বলেন, আমি প্রায় ১৪ বছর ধরে প্রিয় রাম রহিম সিংয়ের সঙ্গে রয়েছি। আমি বাজি ধরে বলতে পারি যে, আমাদের গুরুর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার সবই মিথ্যা।

এসআইএস