মাঠ কাঁপানো ফুটবলার ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটের বাবা শামসুল ইসলাম মোল্লা। ষাটের দশকে মাঠ কাঁপিয়েছেন তিনি। ষাট ও সত্তরের দশকে ঢাকা লিগে মোহামেডান ও আবাহনীর হয়ে খেলতেন খ্যাতিমান এ ফুটবলার। সেই সময় শামসু নামে তাকে সবাই চিনত।
Advertisement
রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর সাগরপাড়া মহল্লায় নিজের বাড়ির পাশের একটি পুকুরে গোসল করতে নেমে তলিয়ে যান তিনি। এরপর দুপুরে পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা।
শামসুল ইসলাম মোল্লার ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, তখনকার পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাকিস্তানের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া দ্বিতীয় খেলোয়াড় ছিলেন শামসুল। পাকিস্তান যুবদলের হয়ে তিনি ১৯৬৫ সালে রাশিয়ায়ও খেলতে গিয়েছিলেন।
শামসুল ইসলাম মোল্লা স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আবাহনী ফুটবল দলে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে সফল মিড ফিল্ডার হিসেবে আবাহনীকে মূল্যবান জয় এনে দিয়ে সবার নজর কাড়েন।
Advertisement
ক্রীড়াঙ্গনে ফুটবলকে ব্যাপক জনপ্রিয় করে তোলেন তিনি। শামসুল ইসলাম মোল্লার দৃষ্টিনন্দন ক্রীড়া নৈপুণ্য দীর্ঘ সময় দর্শকদের মাঠে ধরে রেখেছিল। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে ঢাকা স্টেডিয়ামের মাঠে ঝড় তুলতেন পাইলটের বাবা শামসুল ইসলাম মোল্লা।
রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, প্রতিদিনই পুকুরে গোসল করতেন শামসুল। রোববারও বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি পুকুরে গোসল করতে গিয়েছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় তারা তাকে খুঁজতে যান। পরে সন্ধান না পেয়ে খবর দেয়া হয় ডুবুরিদের। এরপরই পানির নিচে পাওয়া যায় শামসুলের নিথর দেহ।
এদিকে শামসুল ইসলামের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাজশাহী জুড়ে। শোক জানিয়েছেন রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার ও রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী শাহেদ এবং সাধারণ সম্পাদক মামুন-অর-রশিদ। তারা মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। একই সঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
রোববার বাদ এশা রাজশাহী মহানগরীর আলুপট্টি মোড়ে জানাজা শেষে নগরীর টিকাপাড়া কবরস্থানে শামসুল আলমের মরদেহ দাফন করা হয়।
Advertisement
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/জেআইএম