অর্থনীতি

চকচকে নোটে অানন্দই অন্যরকম

ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। ঈদের আনন্দের অন্যতম হলো সেলামি। আর সেলামি হওয়া চাই নতুন নোট। টাটকা কচকচে নোট দিয়ে শিশুদের সীমাহীন আনন্দ এনে দিতে বড়দেরও যেন চেষ্টার কমতি নেই। তাই ঈদ আসলেই নতুন টাকার জন্য ব্যাংকগুলোতে ভিড় করেন গ্রাহক।

Advertisement

নারী ও কিশোর বৃদ্ধাসহ শত শত ব্যক্তি নতুন টাকা বদলে নিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে।

এমনই একজন নতুন নোট নিতে এসেছেন ৮২ বছরের বৃদ্ধা আব্দুল বাতেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি আগে সোনালী ব্যাংকে চাকরি করতাম। আগে প্রতি বছরই নতুন নোট নিতাম। এখন গ্রামে থাকি তাই নিতে পারি না। ঢাকায় আসছি সোনালী ব্যাংকে একটি কাজে। সেখানে কাজ শেষে নতুন নোট নিতে এসেছি। টাকা তোলার জন্য আঙুলের ছাপ নিল।’

নতুন টাকা দিয়ে কি করবেন এমন প্রশ্ন করলে একটু মুসকি হেসে আব্দুল বাতেন বলেন, ঈদে চকচকে নোটে আনন্দই অন্যরকম, যা বলে বোঝানো যাবে না। ছেলের ছোট পোলা মাইয়া আছে তাদের দেব।

Advertisement

এদিকে প্রতিবারের মতো এবারও ঈদুল আজহা উপলক্ষে নতুন নোট বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ রোববার থেকে নতুন টাকা বিনিময় শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব শাখা অফিস এবং রাজধানীর বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১৪টি শাখার মাধ্যমে নতুন নোট বিনিময় করা যাবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নতুন নোট বিনিময় করতে পারবেন গ্রাহক।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা জাগো নিউজকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক আজ (রোববার) থেকে নতুন নোট বিনিময় শুরু করেছে। এবারও বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) পদ্ধতি নতুন টাকা বিনিময় করছে। ফলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সুশৃঙ্খলভাবে গ্রাহকরা নতুন টাকা তুলছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকে এ নতুন নোট নিতে এসেছেন আবির হোসেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার গ্রামের বাড়ি যাব। আজ মতিঝিলে একটি কাজে আসলাম। সময় পেয়েছি নতুন নোট তুলতে এসেছি। নতুন নোট বড় ছোট সবার পছন্দ। বাহির থেকে নিলে বাড়তি টাকা গুণতে হয়। তাই এখানে নিতে এসেছি।

Advertisement

বাংলাদেশ ব্যাংকসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১৪টি শাখা থেকেও নতুন টাকা বিনিময় করা যাচ্ছে। ৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা মূল্যমান পর্যন্ত নতুন নোট প্রতিটি একটি প্যাকেট করে বিশেষ ব্যবস্থায় বিনিময় করা হচ্ছে। একই ব্যক্তি একাধিকবার নতুন নোট গ্রহণের সুযোগ নেই।

এবার একজন ব্যক্তি বিভিন্ন মূল্যমানের সর্বোচ্চ সাড়ে ১৮ হাজার টাকার সমপরিমাণ নতুন টাকা বদলে নিতে পারবেন। এর মধ্যে ১০০ টাকার ১ প্যাকেট বা ১০ হাজার টাকা, ৫০ টাকার ১ প্যাকেট বা ৫ হাজার টাকা, ২০ টাকার ১ প্যাকেট বা ২ হাজার টাকা, ১০ টাকার ১ প্যাকেট বা ১০০ হাজার টাকা ও ৫ টাকার ১ প্যাকেট বা ৫০০ টাকা নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।

তবে নোট উত্তোলনকালে কেউ ইচ্ছা করলে কাউন্টার থেকে পরিমাণ নির্বিশেষে যে কোনো মূল্যমানের ধাতব মুদ্রা গ্রহণ করতে পারবেন।

রাজধানীতে যেসব ব্যাংকে ও শাখায় নতুন টাকা পাওয়া যাবে তার মধ্যে রয়েছে- ন্যাশনাল ব্যাংকের যাত্রাবাড়ী শাখা, অগ্রণী ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা সিটি (পান্থপথ) শাখা, ব্যাংক এশিয়ার ধানমন্ডি শাখা, ঢাকা ব্যাংকের উত্তরা শাখা, জনতা ব্যাংকের আব্দুল গণি রোড কর্পোরেট শাখা, দি সিটি ব্যাংকের মিরপুর শাখা, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের মালিবাগ শাখা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বনানী শাখা, সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখা, ওয়ান ব্যাংকের বাসাবো শাখা, আইএফআইসি ব্যাংকের গুলশান শাখা, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখা, রূপালী ব্যাংকের মহাখালী শাখায় নতুন টাকা পাওয়া যাবে।

এসআই/আইআই/এসআর/জেআইএম