প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা সম্পর্কে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর দেয়া বক্তব্যকে ‘আদালত অবমাননাকর’ বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তিনি (শামসুদ্দিন চৌধুরী) যে ভাষায় কথা বলেছেন, ভদ্রতা, সৌজন্যবোধ সব কিছুর বাইরে গিয়ে তিনি যে একটা অপরিশীলিত, অমার্জনীয় কথাবার্তা বলেছেন- এগুলো অবশ্যই আদালত অবমাননা। আমি মনে করি যে, এগুলো আমলে নিয়ে তার বিচার হওয়া উচিৎ।’
Advertisement
রোববার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শামসুদ্দিন সাহেব এই ধরনেরই কথা বলেন। তার যে বাচনভঙ্গি, তার যে শব্দচয়ন তাতে আমার মনে হয় না যে বিচারপতি হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা তার ছিল।’
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণ প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার লেখা কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
Advertisement
ওই আলোচনা সভায় শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী মামলার সাথে সম্পৃক্ত না এমন অনেক কথা তিনি অবজারভেশনে (পর্যবেক্ষণে) বলেছেন। প্রধান বিচারপতির কাজ রাজনীতি করা না। যে প্রধান বিচারপতি রাজনীতি করে, সেটা তার অযোগ্যতা। এসব করে তিনি অনেকভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন, শপথ ভঙ্গ করেছেন। তার আর এই পদে থাকার কোনও অধিকার নেই। তাকে অবশ্যই এই পদ ছেড়ে চলে যেতে হবে। তুমি শুধু প্রধান বিচারপতির পদ ছাড়বা না, এই দেশ ছাড়তে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শামসুদ্দিন চৌধুরী সাহেব কোন যোগ্যতায় বিচারপতি পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন, তা আমার জানা নাই। তার বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতার ব্যাপারটি দেশের জনগণ বিবেচনা করবেন। আমি শুধু একটি কথা বলতে চাই, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় আপিল বিভাগের সকলের সর্বসম্মতিক্রমে একটি রায়। এই বিষয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, বিচার বিভাগের যে কর্তৃত্ব, জুডিশিয়ারির যে আলাদা ক্ষমতা, সেই ক্ষমতা ওপরে তারা প্রশ্ন তোলেন, তারা সংবিধান লঙ্ঘন করেন।’
জাতীয় কবি নজরুলের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে দলের নেতারাসহ আমরা কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছি। আমরা তার কবর জিয়ারত করেছি, দোয়া করেছি তার আত্মার মাগফেরাতের জন্য।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের কাছে জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম একটি আদর্শ, আমাদের প্রেরণা। আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধ, আমাদের স্বাধীকার আন্দোলন, আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামে তিনি আমাদের সব সময় প্রেরণা যুগিয়েছেন। জাতীয় কবির যে অবদান শিল্প-সাহিত্য, দেশপ্রেম, সংগ্রাম- এটা কোনো মতেই তুলনা করা সম্ভব নয়।’
Advertisement
এ সময় দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে নেতাকর্মীদের নিয়ে কবির কবরে পুষ্পমাল্য অর্পন করেন মির্জা ফখরুল।
এমএম/এনএফ/পিআর