চলতি বন্যায় টাঙ্গাইলের ৯ উপজেলায় রোপা আমন, বোনা আমন ও কালিজিরা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকরা বাড়ির উঠান ও উঁচু জায়গায় বীজতলা তৈরি করে রেখেছেন। জমি থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেই পুনরায় নতুন করে ধানের চারা লাগাবেন তারা।
Advertisement
জানা গেছে, উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে টাঙ্গাইলের ৯ উপজেলা এবার বন্যার কবলে পড়ে। দ্বিতীয় দফায় বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় কৃষকের ফসলি জমি। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্রিধান ৪৯, বিআর ১১ ও বিনাশাইল আগাম জাতের রোপা আমন, বোনা আমন ও সুগন্ধী ধান।
সদ্য লাগানো ধানের চারা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েন কৃষকরা। স্থানীয় কৃষি বিভাগও চিন্তিত হয়ে পড়েছে ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে। পরে এ নিয়ে কৃষিবিভাগ কৃষকদের পরামর্শ দেন বাড়ির উঠান ও উঁচু স্থানে বীজতলা তৈরির।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ওসমান গনী জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নিজেদের বাড়ির উঠান ও উঁচু স্থানে ব্রিধান ৪৬, বিআর ১১ ও ২২ এবং কালিজিরার লেট জাতের ধানের বীজতলা তৈরির পরামর্শ দেয়া হয়। এ জাতের ধান দেরিতে রোপন করলেও অল্প সময়েই ফসল ঘরে তোলা যায়।
Advertisement
ব্যতিক্রমী এ পরামর্শ পেয়ে প্রাণ ফিরে পাচ্ছেন কৃষকরা। তারা একবুক আশা নিয়ে নিজেদের বাড়ির উঠান ও উঁচু স্থানে বীজতলা তৈরি করেন। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক তৎপরতায় দ্রুত বেড়ে উঠছে এসব বীজতলা। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা আবারও নেমে পড়বেন ধান আবাদে। এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক আবু আদনান জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে ৩২ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে বোনা আমন রোপন করা হয়েছিল। এরমধ্যে বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ৫ হাজার ৩৯০ হেক্টর। এছাড়া ৮১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন রোপন করা হয়েছিল। বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বন্যার পর এসব কৃষকদের পুনর্বাসন করা হবে।
আরিফ উর রহমান টগর/এফএ/এমএস