স্বাস্থ্য

ভিসির পিএসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) আমিনুল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ উঠেছে। গত ২২ আগষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় চিকিৎসক কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে কটূক্তি করা নিয়ে ভিসির পিএসের বিরুদ্ধে উত্থাপিত স্পর্শকাতর অভিযোগটি আদৌ কতটুকু সত্য নাকি নিছক কুট ষড়যন্ত্র তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অশান্ত হয়ে উঠেছে। ভিসির পিএস আমিনুল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে ছয় অভিযোগকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে চিঠি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ৪শ’ চিকিৎসক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এ নিয়ে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুনাম নষ্ট করতে একটি কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন থেকে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তারা ভিসির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে সফলতা না পেয়ে এবার ভিসির পিএসের বিরুদ্ধে কুট ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এক্ষেত্রে তারা হাতিয়ার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে কটূক্তি করার অভিযোগ এনে ফায়দা নেয়ার অপচেষ্টা করছেন। ইতোপূর্বেও ভিসির নামে নানা অপপ্রচারমূলক বার্তা লিফলেট আকারে দেয়ালে লাগানো হয় বলে কয়েকজন কর্মকর্তারা মন্তব্য করেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় কর্মকর্তা গত ২২ আগষ্ট ভিসির দেয়া লিখিত অভিযোগে বলেন যে, ভিসির পিএস আমিনুল ইসলাম পলাশ প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারকে নিয়ে কটূক্তি করেন। তাকে কটুক্তি করতে দেখে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান নয়ন প্রতিবাদ জানান। অভিযোগকারীরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এ ধরনের কটুক্তি তাদের মর্মাহত করেছে। তারা প্রশ্ন রাখেন জাতির নামে প্রতিষ্ঠিত এই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আস্ফালনকারী এই কর্মকর্তা কিভাবে এই দুঃসাহস দেখান তা তাদের বোধগম্য নয়। এই কর্মকর্তা সবসময় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিশ্বাসী কর্মকর্তারা তা মেনে নিতে পারছেন না। তারা এর তীব্র প্রতিবাদ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

ওই লিখিত অভিযোগে যারা স্বাক্ষর করেছেন তারা হলেন সঞ্জিব রায়, শহীদুল হক, সুমন দাস, ডা. মো.আশিকুর রহমান, মুহাম্মদ রুকনুজ্জামান ও মো.আলমগীর হোসেন। অভিযোগকারী মোস্তাফিজুর রহমান নয়ন ভিসির পিএসের কটূক্তির প্রতিবাদ করেছেন বলে উল্লেখ করলেও অভিযোগপত্রে পলাশ কি কটূক্তি করেছেন তার কোনো উল্লেখ নেই। নেই অভিযোগকারী হিসেবে নয়নের কোন স্বাক্ষর। শুধু তাই নয়, অভিযোগপত্রে বলা হচ্ছে পলাশ প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম ভাঙ্গিয়ে ফায়দা লুটছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই বলাবলি করছেন, পলাশ যদি প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম ভাঙ্গিয়ে কোনো ফায়দা লুটে থাকেন তবে তো তার বিরুদ্ধাচরনের প্রশ্ন উঠে না। ভিন্ন একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিএসএমএমই’র কিছু কর্মকর্তার পদোন্নতি হবার কথা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রণীত তালিকায় পলাশ ও নয়নের নাম আছে।পলাশ ভিসির কাছাকাছি থাকায় তার পদোন্নতি আগে হতে পারে এ আশঙ্কায় তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ করা হচ্ছে।

Advertisement

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ইতোমধ্যেই বিষয়টির সুরাহা হয়ে গেছে। প্রক্টরের বরাত দিয়ে অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, পলাশ এ ধরনের কোনো কথা বলেনি। তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি বলেন, স্পর্শকাতর এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসিকে (প্রশাসন) সভাপতি ও পরিচালককে (হাসপাতাল) সদস্যসচিব করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ভিসির পিএস আমিনুল ইসলাম পলাশ জানান, এটা তার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। তিনি কোনদিন এ ধরনের কোন কথা বলেননি এবং বলতে পারেন না। তিনি বলেন, গত ৮ বছর চাকরিকালীন সময়ে সবর্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে কাজ করেছেন। জাতির জনকের আদর্শকে বুকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত পথে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।

এমইউ/ওআর

 

Advertisement