বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে বিতর্কিত করছে। তারা রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে বিতর্কিত করে আরেকটি ১/১১ ঘটাতে চাচ্ছে। কারণ ১/১১-এর মতো কোনো অনৈতিক শক্তি ছাড়া আওয়ামী লীগকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না।
Advertisement
শুক্রবার দুপুরে সেগুনবাগিচার স্বাধীনতা মিলনায়তনে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত ‘বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান : কোন পথে বাংলাদেশ?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়ার সভাপতিত্বে ও মহানগর সদস্য সচিব মো. শহীদুননবী ডাবলুর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বিএনপি চেয়াপরসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, জাতীয় দল চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, ন্যাপ যুগ্ম মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, রাজবাড়ী জেলা আহ্বায়ক রাসেল রায়হান, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম একাডেমি সভাপতি কালাম ফয়েজী, জাতীয় ছাত্রকেন্দ্র সমন্বয়কারী সোলায়মান সোহেল প্রমুখ।
শামসুজ্জামান দুদু প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন। তিনি রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে সংবিধান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে বিতর্কিত করেছেন। তারা তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে একের পর এক অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছেন।
Advertisement
তিনি বলেন, আ.লীগ-জামায়াত-জাপার আন্দোলনের ফসল হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আর এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা করেই বিচাপতি খায়রুল হক বাতিল করেছেন। তারা তাদের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আজকের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য দায়ী বিচারপতি খায়রুল হক।
দুদু বলেন, গণতন্ত্র ও সংবিধান প্রশ্নে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের প্রধান বিচারপতির রায়কে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট স্বাগত জানায়। সরকার, গণতন্ত্র, নির্বাচন সম্পর্কে এস কে সিনহার মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর সরকার ক্ষতায় থাকার সকল নৈতিক অধিকার হারিয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ। যে কোনো মুহূর্তে যে কোনো অশুভ শক্তির আর্বিভাব ঘটতে পারে। তাই সরকারপ্রধানের উচিত অবিলম্বে পদত্যাগ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সেঙ্গ আলোচনায় বসা। আলোচনার মধ্য দিয়ে যে কোনো অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
অ্যাডভোকেট তৈয়মুর আলম খান বলেছেন, দেশ একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। এর জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা। আর এ সমস্যার একমাত্র সমাধান হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ আর সকল দলের অংশগ্রহনে জাতীয় নির্বাচন।
Advertisement
অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, গণতন্ত্র ও সংবিধানের চেতনা রক্ষায় জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নাই। দেশের স্বার্থে সকল জাতীয়তাবাদী-গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতা ও সরকারী মন্ত্রীদের বক্তব্য আদালত অবমাননার সামিল। সরকারি দলের এই ধরনের অবস্থান জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ।
তিনি বলেন, আদালতের রায় নিয়ে অপ্রাসঙ্গিক আলাপ গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়।
সাবেক বিচারপতি খায়রুল হককে উদ্দেশ করে গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, আপনার অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য যদি ষোড়শ সংশোধনীর রায়কে বাধাগ্রস্ত করে তাহলে সকল পরিণতির জন্য আপনাকে দায় নিতে হবে। আপনার থেকে আওয়ামী নেতাদের মত বক্তব্য জনগণ আশা করে না।
এমএম/এনএফ/পিআর