২০০৭ সালের মে মাসে টেস্ট অভিষেক। ওয়ানডে অভিষেক তারও আগে, ২০০৬ সালের আগস্টে। অভিষেক হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিটি দলের বিপক্ষেই টেস্ট খেলা হয়েছে সাকিব আল হাসানের। শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়া ছাড়া। ১০ বছরের বেশি ক্যারিয়ারে পার করে ফেলেছেন- অথচ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলাই হয়নি সাকিবের।
Advertisement
এটা যেন তার জীবনের এক অপূর্ণতা। অবশেষে সেই অপূর্ণতা পূর্ণ হতে যাচ্ছে সাকিবের। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নামছেন সাকিব আল হাসান। শুধু তিনি নন, বাংলাদেশ দলের প্রতিটি ক্রিকেটারেরই প্রথম অভিজ্ঞতা হবে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার মোকাবেলা করার। মুশফিকুর রহীম, তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েসের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারেদের ভাগ্যেও জোটেনি এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলা।
সাকিব আল হাসান অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলার পাশাপাশি ক্যারিয়ারে ৫০তম ম্যাচের মাইলফলকেও পা দিতে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে একটা রোমাঞ্চকর অবস্থা যেন তার জন্য। আজ অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে সে কথাই স্বীকার করলেন সাকিব।
যখন তার কাছে জানতে চাওয়া হলো, ১০ বছর ক্রিকেট খেলার পর একটা দলের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট, বিষয়টা কিভাবে দেখছেন। সাকিব বলেন, ‘এটা একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার। ওদের সঙ্গে নানা সময়ে ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি খেলেছি। টেস্ট এই প্রথম। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ওদের সঙ্গে একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে। এটা একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার তো অবশ্যই। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড টেস্টকে আলাদা মূল্যায়ন করে। যেটা অন্যেরা করে না। এ রকম একটা দেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলা রোমাঞ্চকর।’
Advertisement
৫০তম টেস্ট খেলতে নামছেন। এই মাইলফলকে পৌঁছাতে ১০টি বছর লাগলো। আফসোস হচ্ছে না? সাকিব মনে করেন না আফসোস নয়। তিনি বলে, ‘লাইফে খুব বেশি আফসোস নাই। ওদিক চিন্তা করলে- যা হয়েছে, তাতেই আলহামদুলিল্লাহ। বেশি খেলতে পারলে ভালো লাগত। খেলতে পারি নাই বলে আফসোস নাই। যতগুলো ম্যাচ খেলেছি, তাতে কতটা পারফর্ম করেছি, সেটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সামনে দুটি ম্যাচ চেষ্টা করব ভালো কিছু করতে। এ বছর আমাদের দলের অনেকেই খুব ভালো করেছে। আশা করি এই সিরিজেও ভালো কিছু হবে।’
আরেকটি প্রশ্নের জবাবে সাকিব আল হাসান জানিয়ে দিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই টেস্টই জেতা সম্ভব। জিততেও চান তিনি। কিন্তু সে সামর্থ্য কি আছে বাংলাদেশের। সাকিব কী মনে করেন? বাংলাদেশের এই দলটিতো ইতিহাসের অন্যতম সেরা, এখনই কি অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর সেরা সময়?
সাকিব একটু কৌশলী উত্তরটা দিলেন। তবে দ্বিমত করলেন না, ‘আমি যেটা বললাম যে, ওদের সংস্কৃতিটা এমন যে ওরা সব কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে পারে। হয়তো কষ্ট হয়, হবেও। বৃষ্টি আছে, গরম আছে। তারপরও ওরা মানিয়ে নেবে। আগেও নিয়েছে। ওদেরকে হারাতে তাই আমাদের সেরা ক্রিকেটই খেলতে হবে। কন্ডিশন বা অন্য কিছুর ওপর নির্ভর করে সিরিজ শুরুর চিন্তা করাটা মনে হয় না খুব একটা ভালো হবে। আমাদের চিন্তাই থাকা উচিত যে, আমরা যাতে যেকোনো পরিস্থিতি ওদের চেয়ে ভালোভাবে মোকাবেলা করতে পারি।’
তবুও এটাই কি অস্ট্রেলিয়াকে হারানো সেরা সুযোগ? সাকিব আল হাসান জানেন না, এটাই সেরা সুযোগ কি না। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের অবস্থা খুব ভালো; কিন্তু এটাই সেরা সুযোগ কি না তা বলা মুশকিল। কারণ ওদের বিপক্ষে তো খেলিইনি আগে। খেললে আসলে বলতে পারতাম- আগের দলের সঙ্গে বেশি সুযোগ ছিলো নাকি এখনকার দলের সঙ্গে বেশি সুযোগ। ভালো-খারাপ বড় কথা নয়। বাংলাদেশ দল জিততে পারলে সেটাই বড় ব্যাপার।’
Advertisement
আইএইচএস/বিএ