জাতীয়

৪৪ হজযাত্রীর মলিন মুখে হাসি ফোটালেন হাব মহাসচিব

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে গত সোমবার। টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে দাদাল চক্র উধাও। সংশ্লিষ্ট ‘নিবিড় হজ-ওমরা অ্যান্ড ট্যুরিজম’ নামের এজেন্সি মালিকেরও খবর নেই। গ্রুপ লিডারের কাছে পড়ে আছে ৪৪ হজযাত্রীর সাদা পাসপোর্ট। এমন অবস্থায় এবার হজে যাওয়া শতভাগ অনিশ্চিত জেনেই ভুক্তভোগীরা হাব মহসচিব এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমের শরণাপন্ন হন। তাদের মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে হাব মহাসচিব পাসপোর্টগুলো নিয়ে কালক্ষেপণ না করে সরাসরি চলে যান সৌদি অ্যাম্বাসিতে। সেখানে টানা দুই ঘণ্টা বসে থেকে ৪৪ হজযাত্রীর ভিসা করিয়ে নিয়ে আনেন। ভিসা পেয়ে হজযাত্রীদের চোখে-মুখে যেন চাঁদের হাসি ফুটে ওঠে।

Advertisement

এ বিষয়ে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বাবা বেঁচে নেই। বাবার বয়সী হজযাত্রীদের চোখের পানি দেখে বারবার বাবার কথাই মনে হচ্ছিল। এসব হজযাত্রীর সহযোগিতা করা আমার নৈতিক দায়িত্ব মনে করি। এ কারণেই আমি ঢাকার সৌদি অ্যাম্বাসিতে ছুটে যাই। এজন্য তিনি অ্যাম্বাসির ভিসা অফিসার সালেহ আল মোতাইনের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’

ভিসাপ্রাপ্ত ৪৪ হজযাত্রীর একজন শেরপুরের আজিজুল হাকিম মতিন। তিনি বলেন, গতকাল (বুধবার) থেকে ‘নিবিড় হজ-ওমরা অ্যান্ড ট্যুরিজম’-এর মালিক গোলাম কিবরিয়া আমাদের ফোন ধরা বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি।

আর হাব মহাসবিবের বিষয়ে এই হজযাত্রী বলেন, তার সহযোগিতা আমরা কোনোদিন ভুলব না। তার জন্য মক্কা-মদিনায় গিয়ে দোয়া করব।

Advertisement

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘নিবিড় হজ-ওমরা অ্যান্ড ট্যুরিজম’-এর মালিক গোলাম কিবরিয়া জাগো নিউজকে বলেন, আমি পাঁচশ হজযাত্রীর দায়িত্ব পেয়েছি। ৪৪ জনের ভিসার জন্যে গতকাল (বুধবার) অ্যাম্বেসিতে গিয়েছিলাম কিন্তু তারা সময় শেষ বলে আমাকে ফিরিয়ে দেয়।

উল্লেখ্য, এবার হজ এজেন্সিগুলোর গাফিলতি ও অতি মুনাফার লোভের কারণেই একের পর এক হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। হজ ফ্লাইট শুরুর পর থেকে ভিসা জটিলতা ও হজযাত্রীদের বাড়িভাড়া সংক্রান্ত কারণে প্রায় ২৫টি হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। নিয়ম অনুসারে, হজযাত্রীদের ফ্লাইটের আগেই সৌদি আরবে বাড়িভাড়া করে ভাড়ার রসিদ ও বিমানের টিকিট নিশ্চিত করে হজ অফিস থেকে ডিও লেটার নিতে হয়। এবার সৌদি আরবে বাড়িভাড়া না করার কারণে অনেক হজযাত্রী যেতে পারছেন না।

এ বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট হজযাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট পৌঁছে ২৪ জুলাই। শেষ ফ্লাইট যাবে ২৮ আগস্ট। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ৬ সেপ্টেম্বর ও শেষ ফিরতি ফ্লাইট ৫ অক্টোবর। বাংলাদেশ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স হজযাত্রী পরিবহন করছে।

আরএম/জেডএ/আইআই/জেআইএম

Advertisement