আইন-আদালত

সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো কারখানা নয়

সুন্দরবনের আশপাশে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কতগুলো শিল্প-কারখানা রয়েছে সেই তথ্য প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সুন্দরবনের আশপাশে নতুন করে শিল্প-কারখানা অনুমোদনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

Advertisement

বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শিল্প-কারখানা স্থাপনের অনুমোদন কেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৯ সালের প্রজ্ঞাপনের লঙ্ঘন হবে না এবং নির্মিত নতুন শিল্প-কারখানা কেন অপসারণ করা হবে না তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেছেন আদালত।

পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের ডিজি, ডেপুটি কমিশনার খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনা ও খুলনার পুলিশ সুপারকে (এসপি) ওই রুলের জাবাব দিতে বলা হয়েছে।

Advertisement

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন শাহিনুর আলম, এহতেশামুল করিম, হাবিবুর রহমান, তারিকুল ইসলাম খান, ব্যারিস্টার রুমানা জামান, মো. আশিফুর রহমান ও খালেদ আহমেদ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

রিটকারী আইনজীবী বলেন, সুন্দরবনের আশপাশে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কতগুলো শিল্প-কারখানা রয়েছে তা ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে সুন্দরবনের চারদিকে ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে নতুন করে শিল্প-কারখানা স্থাপন না করারও আদেশ দিয়েছেন আদালত।

গত এপ্রিলে সুন্দরবনের চারদিকে ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে স্থাপিত শিল্প-কারখানাসহ অন্যান্য স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে যেসব কলকারখানা স্থাপনের অনুমতি বা ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে তা বাতিলেরও আবেদন জানানো হয়।

‘সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন’র সভাপতি শেখ ফরিদুল ইসলাম হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গত ৪ এপ্রিল রিট আবেদনটি দাখিল করেন।

Advertisement

রিট আবেদনে পরিবেশ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের ডিজি ও সুন্দরবনের আশপাশের জেলাগুলোর জেলাপ্রশাসককে বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ১৯৯৯ সালের ৩০ আগস্ট এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন এবং এর চারদিকে ১০ কিলোমিটার এলাকাকে পরিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। এ প্রজ্ঞাপন অনুসারে সুন্দরবনের চারদিকে ১০ কিলোমিটার এলাকায় ভূমি, পানি, বায়ু ও শব্দদূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু গণমাধ্যমে খবর এসেছে, পরিবেশ অধিদফতর ইতোমধ্যে প্রায় ১৫০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প করার জন্য অবস্থানগত ছাড়পত্র দিয়েছে। যার মধ্যে জাহাজ ভাঙা শিল্পসহ পরিবেশ দূষণকারী প্রকল্প রয়েছে। এসব শিল্প-কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দেয়া সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ ও পরিবেশ আইন ১৯৯৫-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এছাড়া এসব শিল্প-কারখানা সুন্দরবনের জন্য হুমকিস্বরূপ।

এফএইচ/এমএআর/এআরএস/পিআর/আরআইপি