রাজনীতি

প্রধান বিচারপতিকে সরাতে ষড়যন্ত্র করছে সরকার : রিজভী

‘মানসিক অসুস্থতার অজুহাতে প্রধান বিচারপতিকে সরাতে ষড়যন্ত্র করছে সরকার। এ নিয়ে জনমনে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে’ এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

Advertisement

বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে ‘চলমান অস্থিরতা : কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাবেক চেয়ারম্যান ও মন্ত্রী শফিকুল গাণি স্বপনের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে ন্যাপ এ সভার আয়োজন করে।

ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও নগর সদস্যসচিব মো. শহীদুননবী ডাবলুর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিশিষ্ট সাংবাদিক ছড়াকার আবু সালেহ, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ন্যাপের যুগ্ম মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, সম্পাদক মো. কামাল ভূঁইয়া, রাসেল রায়হান, যুবনেতা আবদুল্লাহ আল কাউছারী, ছাত্রনেতা সোলায়মান সোহেল প্রমুখ।

Advertisement

রিজভী বলেন, ‘ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রধানমন্ত্রী ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি কখনই ভাবতে পারছেন না বিচার বিভাগ, সুপ্রিম কোর্ট একটি আলাদা স্বাধীন সংস্থা। তিনি মনে করেন নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, পুলিশ সব হচ্ছে সুধা সদনের একটি এক্সটেনশন। এখন সুপ্রিম কোর্ট, একেও তিনি আওয়ামী লীগের কার্যালয় বানানোর চেষ্টা করছেন।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু প্রধান বিচারপতি তার কথা শুনছেন না। তিনি আইনকে আইনের পথে যাওয়ার জন্য কথা বলছেন এবং দেশে যা ঘটছে, মানুষের বিবেককে যা নাড়া দিয়েছে, সেই বিষয়টি তিনি ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের মধ্য দিয়ে তুলে ধরেছেন। এই জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আজে-বাজে কথা বলছেন। তার মাথা খারাপ না হলে এই কথা বলতে পারে না।’

রিজভী মরহুম শফিকুল গানি স্বপনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘তারঁ মত মেধাবী রাজনীতিবিদ আজকের সমাজে বড়ই বিরল। তিনি আজীবন দেশ, মাটি-মানুষ ও গণতন্ত্রের জন্য রাজনীতি করেছেন।’

সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, ‘তাদের মাথা এতটাই গরম যে, তারা প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করে মাঠে আসতে বলেন। ভাবটা হলো যে, সব কাপড়-চোপড় খুলে শুধু একটা সকস পড়ে ওবেটা হয়ত হা-ডু-ডু খেলতে মাঠে এসেছে। এখন প্রধান বিচারপতিকেও বলছে যে আপনি হা-ডু-ডু খেলতে আসেন। দুর্ভাগ্য এই জাতির, খুব কষ্ট লাগে।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘নিজের মধ্যে বার বার প্রশ্নের উদ্রেক হয়– আমরা কী আসলে একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক। নাকি স্বাধীন আওয়ামী লীগের দ্বারা শাসিত একটা দেশ? শুধু তারা স্বাধীন, অন্য কেউ নয়?’

সভাপতির বক্তব্যে ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, ‘দেশের প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার একটি রায়কে কেন্দ্র করে আওয়ামী সরকার যেভাবে তার বিরুদ্ধে লেগেছে, তাতে স্পষ্টত প্রমাণিত হচ্ছে তারা বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। সংবিধানের ব্যাখ্যাদাতা হিসাবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সাতজন বিচারপতি ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে পর্যালোচনা জাতির সামনে তুল ধরেছেন, তাতে সরকার ক্ষমতায় থাকার সব নৈতিক অধিকার হারিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুখে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের কথা বললেও তাদের আচরণে প্রমানিত হয়, তারা এর কিছুই বিশ্বাস করে না। তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করতেই একের পর এক কাজ-কর্ম পরিচালনা করছে।’

গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া শফিকুল গানি স্বপনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী ও দেশপ্রেমিক রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন তিনি।’

এমএম/এসআর/জেআইএম