আজকে যে বাংলাদেশকে আমরা চিনি বা জানি কিংবা বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমাদের যতোটুকুই পরিচয় তা মূলতঃ এরশাদ-পরবর্তী আমলকে দিয়ে বিশ্লেষণ করতে হয়। কিন্তু তার আগেই এদেশে রাজনীতির একটি চূড়ান্ত মেরুকরণ হয়ে গেছে। একদিকে আওয়ামী লীগ এবং অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল, এর বাইরে কিছু বাম দল আছে যারা নিজেদের কোথায় ফেলবে বা কোথায় রাখবে তা তারা নিজেরাও জানে না, কারণ তাদের পাশে জনগণ নেই। তবে একটি কাজ তারা প্রায় ধর্মপালনের মতো পালন করে থাকে তাহলো শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে গাল দেওয়া; তাদের ঘুম ভাঙে আওয়ামী লীগকে গাল দিয়ে, তারা ঘুমোতেও যান গাল দিয়ে। তাদের মুখ থেকে আপনি ভুলেও জেনারেল জিয়া, বেগম জিয়া কিংবা তারেক রহমান সম্পর্কে কোনো সমালোচনা বের করতে পারবেন না। কিন্তু এরশাদ সম্পর্কে তারা আবার উচ্চকণ্ঠ, যদিও আমি ব্যক্তিগত ভাবে একথা মনে করি যে, জিয়াউর রহমানের তুলনায় এরশাদ আসলে দেবদূত, এরশাদ জিয়াউর রহমানের উদ্বোধন করা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কাজটি সুচারুরূপে সম্পাদন করেছিলেন মাত্র।
Advertisement
এর বাইরেও বাংলাদেশে আরেকটি পক্ষ আছে, তারা নিজেদেরকে পরিচয় দেন সুশীল হিসেবে, তারা কোনো ভাবেই আওয়ামী লীগ বা বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করে থাকেন কিন্তু তাদেরও মূল টার্গেট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ। তারা ইতিহাস খুঁড়ে হোক, কিংবা তাদের ঊর্বর মস্তিত্ব ঘেঁটেই হোক বার বার বঙ্গবন্ধুর দোষ-ত্রুটি খুঁজে বের করে আনেন এবং সেগুলো দারুণ ভাবে জনগণের সামনে উপস্থাপন করেন। তারা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে পারলে এদেশ থেকে চিরতরে মুছে দেন, যেমনটি চান বেগম জিয়া ও তার সন্তান তারেক রহমান। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে এই সুশীলকুল সুখে-শান্তিতে থাকেন, যা চান তাই-ই তারা পান, কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তাদের ব্যবসাপত্রে একটু টান পড়ে, কারণ আওয়ামী লীগকে তারা মূলতঃ শত্রু কাতারেই ফেলে দিয়েছেন। ফলে নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্যই তারা এখন আওয়ামী লীগকেই এদেশে একমাত্র প্রতিপক্ষ মনে করে থাকেন।
যদিও ১/১১-র আমলে তারা সেনা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে এদেশে একটি সরকারও গঠন করেছিলেন কিন্তু সেই সরকারকে তারা বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে পারেননি। কিন্তু তারা যেসব দোষ সব সময় রাজনৈতিক দলগুলোর ঘাড়ে চাপিয়ে থাকেন, তারাও ক্ষমতায় গিয়ে তার চেয়ে শতগুণ বেশি লোভী ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারী হয়ে উঠেছিলেন সেকথা ১/১১-র আমলকে বিশ্লেষণ করে দেখুন, পেয়ে যাবেন। বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াতের পর পরই এই অ-রাজনৈতিক সুশীলগণই অশেষ ক্ষমতা রাখেন। তাদের ক্ষমতার উৎস জনগণ নয়, তারা নির্ভর করেন বিদেশি দূতাবাস,দেশি-বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা এবং দেশের ভেতরকার আমলা-মিলিটারি অক্ষশক্তির ওপর। কিন্তু এদের রাজনীতির মূল পৃষ্ঠপোষক বিএনপি-জামায়াত, সেটা একটু তলিয়ে চিন্তা করলেই ধরা পড়ে।
যে কথা আগেই বলেছি যে, বিএনপি-জামায়াত এদেশে রাজনীতি করতে আসেনি, এসেছে ক্ষমতায় থাকতে। কারণ ক্ষমতায় না থাকতে পারলে তাদের আসলে আর কোনো কাজ নেই, ক্ষমতার বাইরে থেকে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিরোধী দল হিসেবে তাদের কোনো ভূমিকা নেই, কিংবা সে ভূমিকা পালনে তারা যোগ্য নয়। ২০০৮ সালের পর থেকে এদেশে কম ইস্যু তৈরি হয়নি যা দিয়ে জনগণকে জাগিয়ে তোলা যেতো, কিন্তু তারা সেটি পারেনি কারণ জনগণের কাছে তারা যেতে শেখেননি। কারণ বিএনপি’কে জিয়াউর রহমান সেই রাজনীতির মশালটি দেননি। তিনি শিখিয়ে গিয়েছেন কী করে ভোট জালিয়াতি করতে হয়, কী করে মিথ্যাচার করে দেশের রাজনীতিকে নোংরা করা যায় এবং অর্থ দিয়ে রাজনীতিবিদদের কেনা যায়। ফলে বিএনপি ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনে তাদেরকেই মনোনয়ন দেয় যাদের মূলতঃ টাকা আছে এবং অবসরপ্রাপ্ত আমলা ও সেনা কর্মকর্তাদের বেছে নেয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে নিজেদের কব্জায় রাখার জন্য।
Advertisement
অপরদিকে ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের দিকে তাকান? দেখতে পারবেন যে, ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাদের মনোনয়ন দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু একথা কেউই এখন আর বলেন না যে, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এদেশে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করা হয়েছিল এবং তখনও ভোটার তালিকা ছিল ভয়ঙ্কর প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু তারপরও এরশাদ শাহীর পতনের পর এদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় এসেছে তাই নিয়েই আমাদের খুশি থাকতে হয়েছে। কিন্তু সেই খুশি বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, ক্ষমতায় গিয়েই সংসদকে এমন এক অকার্যকর জায়গায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করিয়েছিলেন বেগম জিয়ার বিএনপি যে সেখানে বিরোধী দল বলতে যে কেউ আছে সেকথাই তারা স্বীকার করতে চাননি। বিরোধী দলকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যই কেবল নয়, শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে গাল দেওয়া ছাড়াও সংসদে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যাচ্ছে তাই বলে সংসদ কক্ষকে পুরোপুরি বিষিয়ে তুলেছিলেন তারা।
এর মধ্যেই এলো মাগুরা উপনির্বাচন, সে নির্বাচন যেনো বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ভয়ঙ্কর কালো অধ্যায়। এই অধ্যায় নিয়ে আজকে কেউ কথা বলতেই নারাজ, যদি এদেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা জ্ঞানপাপী না হতেন তাহলে একবার হলেও একথা বলতেন যে, জিয়াউর রহমান ও এরশাদের হাত থেকে যে নির্বাচন ব্যবস্থাকে বের করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করার কথা ছিল বেগম জিয়ার সরকার তাকে কেবল নষ্টই করেনি বরং একেবারে পঁচিয়ে ফেলেছিল এই মাগুরা উপনির্বাচনের মাধ্যমে। তখনও হাইকোর্টের একজন বিচারপতিই ছিলেন নির্বাচন কমিশনার। আজকে বিচারপতিদের সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করতে গিয়ে আমাদের এই প্রশ্নও তুলতে হবে যে, বিচার ব্যবস্থাকে এদেশে ভয়াবহ করে তুলেছিল কে? কী প্রকারে? কিন্তু আগেই বলেছি যে, এদেশের জ্ঞানপাপী সুশীলদের কাছে এই প্রশ্ন আশাই করা যায় না। আর আপনি তুলেছেন তো আপনাকে সোজা আওয়ামী লীগের কাছে পাঠিয়ে দেবে, আপনাকে কোনো অনুষ্ঠানে ডাকা হবে না, মিডিয়াতে আপনি হয়ে যাবেন আওয়ামীবাজ। এদেশের রাজনীতিতে আপনি সত্য ভাষণ দিতে পারবেন না, তাতে কোনো পক্ষই আপনাকে ধারণ করতে পারবে না, আপনাকে আপনি আওয়ামী লীগ বানিয়ে দেবে, কিন্তু মাঝখানে যারা সুশীল তারাও কিন্তু বিএনপি-জামায়াতেরই পক্ষে ঝোল টানেন মূলতঃ।
১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসেও বিএনপি ততোটা বেপরোয়া হয়নি প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে ঘায়েল করায়। কিন্তু যখনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রচলন করতে বাধ্য হলো অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদে তখনই তারা বুঝতে পারলো যে, এদেশে ক্রমশঃ ভোটের রাজনীতিতে তাদের টিকে থাকাটা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। ফলে তারা ১৯৯৬ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকেই কোনো রকম রাখঢাক না রেখেই শেখ হাসিনাকে হত্যার মিশনে নামে দলটি এবং জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে সারাদেশে ধর্মভিত্তিক মৌলবাদী শক্তিকে উস্কাতে শুরু করে। এই রাজনৈতিক শক্তির অর্থ ও পেশি শক্তির জোগানদাতা হিসেবে আমরা দেখতে পাই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-কে, যাদেরকে জিয়াউর রহমান এদেশে মৌরসী পাট্টা দিয়েছিলেন ভারত-বিরোধী দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলার জন্য। পার্বত্য চট্টগ্রামকে এদেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে বগুড়া, বাগেরহাটের মতো দূর দূরান্ত থেকে লোকজন নিয়ে গিয়ে সেখানে বসিয়েছিলেন জিয়া এবং তার স্ত্রী সেখানে অবাধে তৎপরতা চালানোর সুযোগ দিয়েছিলেন আইএসআইকে।
তাদের মূল শত্রু শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ, এদেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলন চালানো কিছু সামাজিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ, যারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়, এদের মধ্যে সংখ্যালঘু হিন্দুদের কথা তারা বার বারই উচ্চারণ করে থাকেন। ফলে ১৯৯৬ সাল থেকেই এদের ওপর খড়গহস্ত হয়ে ওঠে বিএনপি-জামায়াত চক্র। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ নিয়মতান্ত্রিক ভাবে বিচারপতি লতিফুর রহমানের হাতে ক্ষমতা দিয়ে বঙ্গভবন থেকে বেরুতে না বেরুতেই দেশের রাজনীতিকে সম্পূর্ণ পাল্টে ফেলতে তৎপর হয়ে ওঠেন এই বিচারপতি। ২০০১ সালের নির্বাচন কেমন হয়েছে তা নিয়ে কথা কম বলাই ভালো। কিন্তু তাও মেনে নিতে অসুবিধে ছিল না গণতন্ত্রের স্বার্থে, কিন্তু সেই স্বার্থ যে এদেশকে কোনো ভাবেই মুক্তি দেয়নি তার প্রমাণ হলো নির্বাচনের পর অন্ততঃ এক বছর এদেশে কেবলই রক্তপাত হয়েছে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের গনিমতের মাল মনে করে তাদের নির্বিচারে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে, ধর্ষণ করা হয়েছে হিন্দু নারীকে এবং আওয়ামী লীগকে কী ভাবে পুরোপুরি ধ্বংস করা যায় তার ছক্ কাটা হয়েছে। সেই ছকের আওতায়ই যে ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট ঘটানো হয়েছে তা এখন আর নতুন করে প্রমাণ করতে হবে কি?
Advertisement
একুশে আগস্টের সন্ধ্যায় আমিরাতের নির্ধারিত ফ্লাইটটি আটকে রাখা হয়েছিল কেন? কেনই বা তারেক জিয়া ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার সে রাতে দুবাই চলে গিয়েছিলেন সঙ্গে একুশে আগস্টের আরেক নাটের গুরু, সে প্রশ্ন এদেশের সুশীল বিবেক কোনোদিন তুলবে না। এ প্রশ্নও কেউ তোলে না যে, সংসদে দাঁড়িয়ে এই হামলা সম্পর্কে কেনইবা নজিরবিহীন মিথ্যাচার করা হয়েছিল। আর বিচারবিভাগীয় তদন্তের নামে কী হয়েছিল? কিন্তু এই ঘটনার পরে সবচেয়ে যে সত্যটি আমাদের কাছে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল তাহলো, জেনারেল জিয়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত যদি নাও থাকেন (যেমনটি বিএনপি বলে থাকে) বঙ্গবন্ধুর খুনিদের তিনি সর্বস্ব দিয়ে আগলে রেখেছেন আমৃত্যু, কিন্তু তার স্ত্রীর আমলে এসেও যদি বঙ্গবন্ধুর জীবিত কন্যাদের হত্যার ছক তৈরি হয় এবং এই হত্যা-চেষ্টাকে ঢাকার চেষ্টাই প্রমাণ করে যে, তারা এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত, তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে সংঘাতের জন্ম দিয়ে গিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান তা থেকে মুক্ত হওয়া যাবে কী প্রকারে? তাহলে কি বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই রক্তাক্ত সংঘাত বাবার থেকে মা এবং মায়ের কাছ থেকে পুত্রও বয়ে চলেছেন? নাকি ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে কখনওই হারানো সম্ভব নয় বলে দলটির নেতৃত্বকেই শেষ করে দিতে হবে একে একে? লক্ষ্য করুন, আওয়ামী লীগ এ যাবত তার ক’জন প্রথম সারির নেতাকে হারিয়েছেন ১৯৭৫ সালের পর থেকে? আমি দ্বিতীয়, তৃতীয় কিংবা মাঠ পর্যায়ের নেতাদের কথা না হয় বাদই দিলাম। তার মানে এদেশের রাজনীতি কি একপক্ষ হন্তারক আরেকপক্ষ তাদের শিকার হয়েই থাকবে? আর মাঝখানে যারা সুশীল তারা “দুই নেত্রীকে যেতে হবে” বা “ব্যাটল অব টু বেগামস” বলে কলাম লিখে কেবলমাত্র শেখ হাসিনাকেই রাজনীতি থেকে সরানোর চেষ্টা করে যাবেন?
আওয়ামী লীগ তাহলে যাবেটা কোথায়? ভোট করবেন চরম কারচুপি করে, আড়াই কোটি ভুয়া ভোটার দিয়ে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার করবেন বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়ে-কমিয়ে কিংবা নিজস্ব দলীয় প্রেসিডেন্টকে দিয়েই, নির্বাচন কমিশনার নিয়ে আসবেন বশংবদ বিচারপতিকে ‘নিরপেক্ষ’ সাজিয়ে, নিজেরা ক্যান্টনমেন্টের ভেতর বসে রাজনীতি করবেন আর সেনাবাহিনীকে নিরপেক্ষ রাখার কথা বলবেন, সেটাই বা কি করে হবে? সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কিন্তু নাজুকই ছিল ২০০৮ সাল অবধি। কিন্তু শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বরাবরের মতোই জনগণের ওপর আস্থাশীল ছিলেন এবং তার ফলও হাতে পেয়েছেন নগদে। কিন্তু তাতেই কি বাংলাদেশের রাজনীতির বিপদটি কেটেছে? কাটেনি। এখনও রক্তাক্ত পথ অতিক্রম করছে এদেশ। কখনও যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া থামাতে দেশব্যাপী প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য হত্যাকাণ্ড, বিডিআর বিদ্রোহের নামে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার মাধ্যমে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি করা এবং নির্বাচন ঠেকানোর নামে আগুন সন্ত্রাস- এদেশের মানুষের এই রক্তাক্ত রাজনীতি থেকে মুক্তি নেই কোনো প্রকারেই।
একেবারে সর্বশেষ সংযোজন উচ্চ আদালতকে রাজনীতিতে নামিয়ে এনে আরেক অচলাবস্থা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র। এখন আপনি নিজেই বলুন, এদেশের রাজনীতিতে কে হত্যাকারী আর কে বার বার হত্যার শিকার? কে রক্তপাত চায় আর কে বা কারা রক্তপাতের শিকার? লেখাটি আবারও বড় হয়ে যাচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের দোষত্রুটিও যে একেবারে নেই তা নয়, এ বিষয়ে আগামী কিস্তিতে লেখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আজকের মতো এই রক্তপাতের রাজনীতির ইতিহাস বয়ান এখানেই শেষ করছি।
ঢাকা ২২ আগস্ট, মঙ্গলবার ২০১৭লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট। masuda.bhatti@gmail.com
এইচআর/আইআই