জাতীয় বাজেটে (২০১৫-২০১৬ অর্থবছর) স্বাস্থ্যখাতে প্রস্তাবিত অর্থের পরিমাণ ১২ হাজার ৭শ’২৬ কোটি টাকা। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার কোটি টাকা। টাকার অংক বাড়লেও মোট বরাদ্দকৃত জাতীয় বাজেটের টাকার অংকের তুলনায় স্বাস্থ্যখাতে বাজেট অপ্রতুল রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বর্তমান বাস্তবতায় স্বাস্থ্যখাতে জাতীয় বাজেটের শতকরা ১০ ভাগ বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন বলে তারা মতামত ব্যক্ত করেন।জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী কমিউনিটি ক্লিনিকের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, মিনি ল্যাপটপ হবে ডিজিটাল ডাক্তার। এ শ্লোগানকে সামনে রেখে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ১৩ হাজার ৮শ ৬১টি মিনি ল্যাপটপ প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণ টেলিমেডিসিন সেবা, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য ও স্বাস্থ্য শিক্ষার সুযোগ পাবেন। টেলিমেডিসিন সেবা সম্প্রসারণের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ৬৪টি হাসপাতাল ও ৪১৮টি উপজেলা হাসপাতালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসগুলোতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কিমের উল্লেখ করে বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, গরীব, দুস্থ ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য ৫৩টি উপজেলায় মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার কর্মসূচি চালানো হচ্ছে। আরো ২০টি উপজেলায় এ কর্মসূচি সম্প্রসােণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া ১৩২টি উপজেলায় জরুরি প্রসূতি সেবা কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।বাজেট বক্তৃতায় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে জাতীয় ওষুধনীতি ২০১৪ প্রণয়ন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮২, ড্রাগ অ্যাক্ট ১৯৪০, ড্রাগ রুলস ১৯৪৫ ও ১৯৪৬ সহ বিভিন্ন সংশোধনী একত্রিত ও যুগোপযোগী করার কাজ চলছে বলে উল্লেখ করা হয়। স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন জাতীয় কমিটির সভাপতি প্রফেসর ডা. রশীদ-ই-মাহবুব জাগো নিউজকে বলেন, টাকার অংকে বাজেট বাড়লেও বাস্তবে স্বাস্থ্যখাতে বাজেট ক্রমশ কমছে। বরাদ্দকৃত বাজেটের টাকা থেকে মোটা অংকের টাকা বেতনভাতা ও যন্ত্রপাতি কেনায় চলে যায়। আর্থিক ব্যয়ের জবাবদিহিতা ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও সর্বোপরি স্বাস্থ্যখাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার না করলে বাজেট বৃদ্ধি হলেও তা কাজে আসবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। বাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল মতিন বলেন, স্বাস্থ্যখাতে জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে শতকরা ১০ ভাগ বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়ে আসলেও সরকারের টনক নড়ছে না। টাকার অংক বাড়লেও বাস্তবে বাজেট কমছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন জাতীয় কমিটি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেট প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবে। গত পাঁচ বছরে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দকৃত অর্থ : (জাতীয় বাজেটের শতকরা হিসেবে)এমইউ/বিএ/আরআইপি
Advertisement