গত কয়েকদিন রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি হু হু করে বেড়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি বৃদ্ধি স্থির থাকলে এখনও বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর রয়েছে।
Advertisement
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে রাজবাড়ীর নদী তীরবর্তী ও বাঁধের ভেতর বসবাসরত নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৩১ হাজার ১৭১টি পরিবারের ১ লাখ ১৭ হাজার ২২২ জন পানিবন্দি রয়েছেন।
পানিবন্দি ওসব পরিবারের সদস্য তাদের পরিবার পরিজন ও গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে এবং ওসব এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে।
বন্যার পানির কারণে রেললাইন, বসতবাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদরাসা, হাট-বাজারে পানি ওঠাসহ তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও পুকুর।
Advertisement
অনেক স্থানে পাকা ও ইটের রাস্তা ভেঙে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে বসতবাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অপরিবর্তিত রয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫টি উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়নের ১৫০টি গ্রামের ৩১ হাজার ১৭১টি পরিবারের ১ লাখ ১৭ হাজার ২২২ জনের ১ হাজার ১২০টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর মধ্যে পানি ওঠার কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ ৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দুর্গতদের জন্য ২১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যার মধ্যে ৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১১৯টি পরিবার ৩টি ৪০৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
সেই সঙ্গে বন্যার পানিতে জেলার ১ হাজার ৯৬৪ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে ইউনিয়নভিত্তিক দেয়া হচ্ছে ত্রাণের চাল ও নগদ অর্থ।
Advertisement
এদিকে, জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলী সার্বক্ষণিক জেলার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং ত্রাণ বিতরণ মনিটরিং করছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সমস্যরা জানায়, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, মাছের পুকুর তলিয়ে গেছে। এতে তারা পরিবার-পরিজন ও গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। সেই সঙ্গে বাথরুম ও খাবার পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে এবং সাপের উপদ্রব লক্ষ্য করা গেছে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার বলেন, বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার কিছু বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। সেসব স্থানে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। এছাড়া নদী তীরবর্তী বাঁধে সব সময় মনিটরিং করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত রাজবাড়ীতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি, আশা করছি সমস্যা হবে না।
রুবেলুর রহমান/এএম/জেআইএম