ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের জন্য প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে রাজধানী ঢাকার। সফরসূচিও চূড়ান্ত হয়েছে। এখন চলছে সর্বশেষ খুঁটিনাটি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা। ঢাকায় কাজ করছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা দল। আজ (বৃহস্পতিবার) নয়াদিল্লি থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছাবে মোদির বিশেষ গাড়ি। ইতিমধ্যে সব অনুষ্ঠান স্থানকে নিয়ে আসা হয়েছে নিরাপত্তা বেষ্টনীর অধীনে। শুক্রবার ঢাকার প্রধান প্রধান রাজপথ বাংলাদেশ-ভারতের পতাকা ও দুই শীর্ষ নেতার ছবি দিয়ে সজ্জিত করা হবে। ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মোদির বৈঠকের এজেন্ডাগুলো। ভারতের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর প্রথমবারের মতো দুই দিনের সফরে আসছেন নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে শনিবার সকালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে তিনি ঢাকা এসে পৌঁছবেন। পরদিন রাতে ঢাকা ত্যাগ করবেন। দুই দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ সফরে সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়নের ঘোষণা ছাড়াও প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে দেড় ডজন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। গত মাসের মাঝামাঝি থেকেই মোদির সফরের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়। সফরসূচি অনুসারে, ৩৬ ঘণ্টার এ সফরে নরেন্দ্র মোদি ব্যস্ত সময় কাটাবেন। শনিবার সকালে শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে তাকে স্বাগত জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছোট্ট দুই শিশু তার হাতে তুলে দেবে ফুলের তোড়া। ১৯ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে তাকে অভ্যর্থনা জানানো হবে। বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেবে বিভিন্ন বাহিনীর সুসজ্জিত দল। বিমানবন্দর থেকে মোদি যাবেন সাভারে জাতীয় সৃতিসৌধে। সেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে গাছের চারা রোপণ ও ভিজিটর বুকে স্বাক্ষর করবেন। পরে মোদির জন্য নির্ধারিত হোটেল সোনারগাঁও বা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যাবেন। সেখানে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিকালে মোদি যাবেন তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। সেখানে দুই প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক ও একান্ত বৈঠক শেষে স্বাক্ষর হবে বেশকিছু চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও বিনিময়পত্র। রাতে মোদির জন্য বিশেষ নৈশভোজের আয়োজন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে দেশের সব মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও বিরোধীদলীয় নেতা উপস্থিত থাকবেন।পরদিন সকালে মোদি যাবেন ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে। সেখানে তাকে স্বাগত জানাবেন ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রধান সেবায়েত। ঘুরে দেখবেন মূল মন্দির প্রাঙ্গণের শিব মন্দির ও কালী মন্দির। পূজা ও পুরোহিতের আশীর্বাদ গ্রহণ শেষে ৪০ জন হিন্দু নেতার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। পরে মোদি যাবেন রামকৃষ্ণ মিশনের মঠ ও মন্দির পরিদর্শনে। এরপর বারিধারায় ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন চ্যানসারি ভবনে অনুদানের প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। পরে যাবেন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। সেখানে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা গ্রহণ করবেন মোদি। এরপর আবাসস্থলে ফিরে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে নরেন্দ্র মোদির।সন্ধ্যায় মোদি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উন্মুক্ত ভাষণ প্রদান করবেন। এটাই হবে ঢাকায় তার শেষ কর্মসূচি। এরপর শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ভারতীয় বিশেষ বিমানে ঢাকা ত্যাগ করবেন নরেন্দ্র মোদি। তাকে বিদায় জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এএইচ/পিআর
Advertisement