গত কয়েকদিনে পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ফরিদপুর সদর উপজেলাসহ চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। এরই মধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
Advertisement
গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বৃহস্পতিবার বিপদসীমার ৯২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে। তাছাড়া গোয়ালন্দ-তরাইল সড়কের ফরিদপুর সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর বাজার এলাকায় শহররক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ায় মেরামত কাজ করছে ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ জানান, ফরিদপুরে ১০কিলোমিটার শহররক্ষা বাঁধ রয়েছে। মোহাম্মদপুর বাজার এলাকায় শহররক্ষা বাঁধের নিচে ইঁদুরের গর্ত দিয়ে কিছু পানি বের হচ্ছিল। গোয়ালন্দ-তরাইল সড়কে ভারি যান চলাচল বন্ধ করে আমরা দ্রুতই ওই স্থানের প্রায় ৬০ মিটার জায়গায় বাঁশ ও জিও ব্যাগ দিয়ে সেগুলো বন্ধ করছি। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সেখানে বালুভর্তি ৫০০ বস্তা জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। জেলার সব বেড়িবাঁধগুলো আমাদের পর্যবেক্ষণে আছে যেখানেই সমস্যা দেখা দেবে, সেখানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
দিনদিন পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার শহররক্ষা বাঁধ, নদী তীরবর্তী বাঁধ ও বিভিন্ন স্থানের বেড়িবাঁধ গুলোতে পানির চাপ বাড়ছে। এছাড়া গোয়ালন্দ-তরাইল সড়ক পথে জেলার সদর উপজেলা থেকে চরভদ্রাসন ও সদরপুর পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার পথ ধরে পদ্মা নদীর তীরবর্তী বেড়িবাঁধ ও নদীরক্ষা বাঁধ রয়েছে। দু-একটি স্থানে ঝুঁকি থাকার কথা স্বীকার করলেও সেগুলো মেরামতসহ পর্যবেক্ষণে আছে প্রশাসন। ফলে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় রয়েছে জেলাবাসী।
Advertisement
অপরদিকে সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল, ডিক্রিরচর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সেখানকার রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে। ফসলি জমিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই সকল অঞ্চলের স্কুলগুলোতে যাওয়া-আসাসহ ক্লাস করতে সমস্য হচ্ছে বলেও জানায় শিক্ষার্থীরা।
সদর উপজেলার চর মাধবদিয়া’র ইউপি চেয়ারম্যান তুমিন মন্ডল বলেন, গত চারদিন যাবৎ পদ্মার পানি বাড়ছেই। আমার ইউনিয়নটি প্রায় পুরোটাই পদ্মা তীরবর্তী অঞ্চল। এই বন্যায় এখন পর্যন্ত ইউনিয়নের প্রায় ৪/৫ হাজার লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কোরবানি ঈদ উপলক্ষে চরঞ্চলের লোকজন প্রচুর গবাদী পশু পালন করে থাকে। পদ্মার পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় গো-খাদ্য সংকটসহ গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছে এলাকার লোকজন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিবপদ দে জানান, স্কুলগুলোতে যাতায়াতসহ পাঠদানে সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিনই কিছু কিছু স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে। আজ নতুন ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এরই মধ্যে জেলার চরভদ্রাসন, সদরপুর ও সদর উপজেলার ৪৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এস.এম. তরুণ/এফএ/জেআইএম
Advertisement