গণমাধ্যম

বিজ্ঞাপন নয় পাঠকরাই সংবাদপত্রের আয়ের বড় উৎস

সংবাদপত্র ও প্রকাশকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘ডব্লিউএএন-আইএফআরএ’ প্রকাশিত বার্ষিক এক জরিপে জানানো হয়েছে, চলতি শতকে প্রথমবারের মতো বিশ্বে সংবাদপত্র বিক্রির আয় বিজ্ঞাপন থেকে আসা অংককে ছড়িয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে চলমান ওয়ার্ল্ড নিউজপেপার কংগ্রেস, ওয়ার্ল্ড এডিটরস ফোরাম ও ওয়ার্ল্ড অ্যাডভারটাইজিং ফোরাম উপলক্ষ্যে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ট্রেন্ড সার্ভে’ শিরোনামে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ডব্লিউএএন-আইএফআরএ  এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়। সংগঠনের মহাসচিব ল্যারি কিলম্যান বলেন, আমরা এখন বলতেই পারি, পাঠকরাই এখন সংবাদপত্রের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করে তিনি সম্মেলনে আরো বলেন, জরিপে যে তথ্য পাওয়া গেছে তার অর্থ হল, বিজ্ঞাপনের টাকার ভর্তুকিতে সংবাদপত্র ব্যবসার যে কাঠামো গড়ে উঠেছিল তার অবসান হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালে সংবাদপত্রগুলো তাদের বিক্রি ও বিজ্ঞাপন মিলিয়ে আনুমানিক ১৭৯ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা এককভাবে পুস্তক প্রকাশনা, সংগীত বা চলচ্চিত্র শিল্পের আয়ের চেয়ে বেশি।এই সময়ে সংবাদপত্র বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ৯২ বিলিয়ন ডলার, যেখানে ৮৭ বিলিয়ন ডলার এসেছে বিজ্ঞাপন থেকে।এই প্রবণতাকে ল্যারি কিলম্যান অভিহিত করেছেন ‘বিজ্ঞাপনদাতানির্ভর সংবাদপত্র প্রকাশনা’ ব্যবসা থেকে ‘পাঠকনির্ভর সংবাদপত্র প্রকাশনা’ ব্যবসার দিকে যাওয়ার একটি ‘সাইসমিক শিফট’ হিসেবে।  গত শতকে সংবাদপত্রের আয়ের ৮০ শতাংশও কখনো কখনো বিজ্ঞাপন থেকে এসেছে। তবে অঞ্চলভেদে এ অনুপাতের হেরফের হয়েছে। ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু বাজারে মোট আয়ের ৪০ শতাংশ এসেছে বিজ্ঞাপন থেকে।  তিনি বলেন, তবে ২০১৫ সালে এসে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, সংবাদপত্র শিল্প শেষ পর্যন্ত পতন আর হতাশার গল্পে পরিণত হবে না। প্রতিযোগিতার মধ্যেও সারা বিশ্বে সংবাদপত্রগুলো বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে নিজেদের গুরুত্ব ধরে রাখতে পেরেছে। তারা নতুন নতুন বাজার ও ব্যবসা কাঠামো খুঁজে বের করছে, যা সংবাদপত্রের প্রকাশনা ও ব্যবসার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মুদ্রিত সংবাদপত্রগুলো এখন সত্যিকার অর্থেই বহুমাত্রিক সংবাদমাধ্যম হয়ে উঠছে। ‘ডব্লিউএএন-আইএফআরএ’  জানিয়েছে, ৭০টির বেশি দেশের সংবাদপত্র শিল্পের তথ্যের ভিত্তিতে তারা এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে, যা বিশ্বের সংবাদপত্র শিল্পের ৯০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।এআরএস

Advertisement