আন্তর্জাতিক

গুয়ামে হামলার পরিকল্পনা কিমকে জানাল সেনাবাহিনী

প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গুয়াম দ্বীপে হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে ব্রিফ করে দেশটির সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

Advertisement

কেসিএনএ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের পর গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন কিম জং উন।

গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া জানায়, প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন ভূখণ্ড গুয়ামের কাছে জলসীমায় চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনী হামলা পরিকল্পনার ব্যাপারে নেতা কিম জং উনকে ব্রিফ করবে। একই সঙ্গে গুয়ামে হামলায় তার নির্দেশের অপেক্ষা করবে।

কেসিএনএ বলছে, কিম জং উন গুয়ামে হামলার পরিকল্পনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। সোমবার তিনি দেশটির সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনা করেন।

Advertisement

গুয়ামে বিস্তারিত হামলা পরিকল্পনার ব্যাপারে পিয়ংইয়ং তথ্য প্রকাশ করার পর গত সপ্তাহ থেকে কোরীয় উপদ্বীপে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীকে গুয়ামে হামলা চালাতে প্রস্তুত থাকার নির্দেশও দিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার হামলার হুমকির পর বলেছেন, যদি দেশটি যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দেয়া বন্ধ না করে তাহলে পিয়ংইয়ং এমন ক্রোধ, উন্মত্ততা এবং ক্ষমতার প্রয়োগ দেখবে যা আগে কখনো দেখেনি বিশ্ব।

উল্লেখ্য, হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ৪ হাজার মাইল পশ্চিমে এবং উত্তর কোরিয়ার দুই হাজার ২০০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই দ্বীপ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম রণঘাঁটি। নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর যৌথ এই ঘাঁটিতে মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিন বন্দর রয়েছে।

কোরীয় উপদ্বীপ ও জাপানের ভূখণ্ডের ওপর মার্কিন স্পেশাল অপারেশন ফোর্স ও বোমারু বিমান পরিচালনায় বিশেষ ব্যবস্থা আছে এই দ্বীপে। অনায়াসেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।

Advertisement

১৮৯৮ সালে মার্কিন-স্পেন যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর কাছে দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ হারায় স্পেন। এরপর থেকেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সামরিক্ত শক্তিগুলোর নজরে পড়ে এই দ্বীপ।

১৯৪১ সালে পার্ল হার্বারে বোমা হামলার পর জাপানি বাহিনী দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপরে ব্যাপক সহিংসতা চালানো হয় সেখানে। কিছু ঐতিহাসিক বলছেন, জাপানের সামরিক বাহিনী এই দ্বীপের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষকে হত্যা করেছে।

ইউনিভার্সিটি অব গুয়ামের প্রেসিডেন্ট ও গুয়াম দ্বীপের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সাবেক প্রতিনিধি রবার্ট আন্ডারউড বেলেন, ১৯৪৪ সালের ১০ জুলাই মার্কিন প্রচেষ্টায় গুয়াম স্বাধীনতা পায়। গত মাস এই দ্বীপ ৭৩তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে। উচ্চ বেকারত্ব থাকলেও সামরিক কার্যক্রম ও পর্যটন স্বর্গ হয়ে উঠা গুয়ামের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে।

এসআইএস/জেআইএম