জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের মরদেহ কফিনসহ কবর দেয়ার নির্দেশনা ছিল। বঙ্গবন্ধুর বাবা-মায়ের কবরের পাশে কফিনসহ মরদেহ কবর দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলে মৌলভী অাব্দুল হালিম তাতে অসম্মতি জানান। পরে মরদেহ গোসল করানো এবং কাফনের কাপড় পরানোর সিদ্ধান্ত দিতে বাধ্য হন সেনারা।
Advertisement
কফিনটি এখনও সংরক্ষণ করা অাছে বঙ্গবন্ধু বাড়ির গ্রন্থাগারের দ্বিতীয় তলায়। বঙ্গবন্ধুর মরদেহ বহনের কফিনের পাশে বাবা লুৎফর রহমানের কফিনটিও সংরক্ষণ করা অাছে।
বঙ্গবন্ধুর মরদেহ দাফন প্রসঙ্গে কথা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামা শেখ বোরহান উদ্দিনের সঙ্গে। বোরহান উদ্দিন তখন কিশোর বয়সের। কবর খননের সময় উপস্থিত ছিলেন। তবে মরদেহ অাসার পর অন্যান্যদের ইশারায় দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থলে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, অামরা সকালেই হত্যার খবর পাই। কিন্তু কয়জনকে মারা হয়েছে তার কোনো সঠিক তথ্য পাচ্ছিলাম না। কখনও ১৪টি কবর খোঁড়ার নির্দেশ অাসে অাবার কখনও ১৭টি। অবশেষে শুধু বঙ্গবন্ধুর কবর খোঁড়ার সিদ্ধান্ত অাসে।
Advertisement
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দুটি হেলিকপ্টারে করে বঙ্গবন্ধুর মরদেহ নিয়ে থানার পাশে ফাঁকা মাঠে অবতরণ করেন। মরদেহ অানার পর অামাকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন এলাকার লোকজন। কবরস্থান থেকে খানিক দূরে গিয়ে অাত্মগোপন করি।
মৌলভী অাব্দুল হালিম শেখের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, মরদেহ কফিনসহ-ই মাটি দিতে চেয়েছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু হালিম সাহেব তাতে রাজি হননি। তিনি সেনাবাহিনীকে বলেছিলেন, মুসলমানের মরদেহ এভাবে কবর দেয়ার বিধান নেই। লাশ ধৌত করা এবং কাফনের কাপড় পরানোর পর দাফন হবে। নইলে লিখিত দেন যে বঙ্গবন্ধু শহীদ হয়েছেন। তখন সেনাবাহিনী বাধ্য হন কফিন খুলতে।
শেখ বোরহান বলেন, কফিন খোলেন পাশের গ্রামের অাইয়ুব মিস্ত্রী। মরদেহের গোসল করানো হয় তিব্বত ৫৭০ সাবান দিয়ে। কাফনের কাপড় অানা হয় পাশের হাসপাতাল থেকে। কাফনের কাপড় ছিল রিলিফের। জানাজা পড়ান মৌলভী অাব্দুল হালিম। জানাজায় ৩৫ জনের মতো মানুষ অংশ নেন। এরপর বঙ্গবন্ধুর কবরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় পুলিশ।
এএসএস/এআরএস/জেআইএম
Advertisement