দেশজুড়ে

বন্যায় দুইদিনে প্রাণ গেল ৩৭ জনের

টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বন্যার কবলে সোমবার আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

এর আগে গতকাল রোববার ১৯ জনের মৃত্যু হয়। সোমবার ১৮ জনের মৃত্যু নিয়ে সর্বমোট মৃতের সংখ্যা ৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে।

সোমবার মৃত্যু হওয়া ১৮ জনের মধ্যে দিনাজপুরে পাঁচজন, কুড়িগ্রামে সাতজন, লালমনিরহাটে তিনজন ও নীলফামারীতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরে বন্যার তৃতীয় দিনে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বীরগঞ্জ উপজেলায় দুইজন, নবাবগঞ্জ উপজেলায় দুইজন এবং বিরল উপজেলায় একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

Advertisement

বীরগঞ্জে বন্যার পানিতে ডুবে মো. আমানুল্লাহ (১০) এবং আমির হামজা (৫) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার নবাবগঞ্জ উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামে মতিয়ার রহমান (৬০) নামে এক ব্যক্তি পানিতে ডুবে এবং একই উপজেলার জয়দেবপুর গ্রামে জোনাব আলী (৬৫) নামে অপর এক ব্যক্তি দেয়াল চাপা পড়ে মারা গেছে। নবাবগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি সুব্রত সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার মাটিয়াইন গ্রামে পানিতে ডুবে এক কন্যা শিশু মারা গেছে। এ নিয়ে দিনাজপুরে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮ জনে। এর আগে রোববার দিনাজপুরে মারা যায় ১৩ জন।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামে পানিতে ডুবে সোমবার আরও সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতরা হলেন-উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের বগাপাড়া গ্রামের আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম (৭), ফুলবাড়ী উপজেলার ঘোগারকুটি এলাকার রইচ উদ্দিনের স্ত্রী হালিমা বেগম (৩৫) ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নজরমামুদ গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আজাহার আলী (৭০), নাগেশ্বরীর রায়গঞ্জে মিজানুরের প্রতিবন্ধী ছেলে আবদুল করিম ওরফে মনসুর (১৪) ও ফান্দের চর জামাল গ্রামের কোরবান আলীর কন্যা প্রতিবন্ধী ফুলবানু (৩১), ভুরুঙ্গামারীর দেওয়ানের খামার এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে মজিবর রহমান (১৫) এবং উলিপুরের বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ফকিরপাড়া এলাকার বানভাসা রহমান (৬৫)।

Advertisement

এর আগে রোববার বন্যার পানিতে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে কুড়িগ্রামে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ জনে। কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আখের আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে, লালমনিরহাট লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ধরলার তীরে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে ভেলাডুবির ঘটনায় আরও তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার সকালে সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের পূর্ব বডুয়া গ্রাম থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এ নিয়ে মোট তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- পূর্ব বডুয়া গ্রামের আবদুল হামিদ ওরফে সামাদের স্ত্রী আছমা বেগম নাসিমা ও একই গ্রামের মোজাম উদ্দিন রবিউলের ছেলে আলিফ। নিখোঁজ রয়েছেন মোজাম উদ্দিন রবিউল।

নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীর সৈয়দপুরে নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়া পানিতে গোসল করতে নেমে প্রাণ হারালেন দুইজন। সোমবার বিকেলে স্থানীয় খড়খড়িয়া নদীর পশ্চিম পাটোয়ারীপাড়া এলাকায় এর ঘটনা ঘটে। এর আগে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃতরা হলেন- সিরাজুল ইসলাম রতন (১৮) ও আরিফ (১৪)। রংপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ভেঙে যাওয়া বাঁধের ১০০ মিটার দূরে ওই দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে।

সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মাহমুদুল হাসান ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বজলুর রশীদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এএম/এমএস