খাদ্যদ্রব্য ও ফলমূলে ফরমালিন সনাক্ত করতে উপযুক্ত ফরমালিন সনাক্তকরণ মেশিন খুঁজছেন খাদ্য বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতরাধীন ন্যাশনাল ফুড সেইফটি ল্যাবরেটরির প্রধান একেএম জাফরউল্ল্যাহকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠিত হয়েছে।এ নিয়ে বৃহস্পতিবার আইপিএইচ এর সম্মেলন কক্ষে কমিটির সদস্যরা বৈঠকে বসছেন বলে জানা গেছে।পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটিতে অন্যদের মধ্যে রয়েছেন, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) সায়েন্স ল্যাবরেটরি, ভোক্তা অধিকার আন্দোলন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি।এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে কমিটির সভাপতি একেএম জাফরউল্ল্যাহ মঙ্গলবার জাগো নিউজকে বলেন, আদালতের নির্দেশে (রিট পিটিশন নং ৬৬২৯/২০১৫) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ কমিটি গঠন করে।তিনি বলেন, খাদ্যদ্রব্য ও ফলমূলে ব্যবহৃত ফরমালিন সনাক্ত করতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি যুৎসই ফরমালিন সনাক্তকরণ মেশিন খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।ইতোমধ্যেই কমিটির সদস্যরা একটি বৈঠকে দেশ-বিদেশে ফরমালিন সনাক্তকরণে কী ধরনের মেশিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে সে সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত খতিয়ে দেখছেন। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। কমিটির সদস্যরা প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে খুব শিগগিরই একটি সুপারিশপত্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করবেন বলে তিনি জানান।উল্লেখ্য, গত বছর রাজধানীসহ সারাদেশের বাজারে ফরমালিন মেশানো খাদ্যদ্রব্য ও ফলমূল বিক্রি হচ্ছে এমন খবরে তোলপাড় শুরু হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশ রীতিমত ঘোষণা দিয়ে আম, লিচু, জাম ও কাঠালসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফলমূলবাহী ট্রাক ও বাজারে ভেজালবিরোধী অভিযান শুরু করে। ট্রাক থেকে নামিয়ে রাস্তায় মণকে মণ মৌসুমী ফল ধ্বংস করা হয়।এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাদের অভিযোগ ভেজালবিরোধী ওই অভিযানে ফরমালিন সনাক্ত করতে পুলিশ যে মেশিন (জেড-৩০০) ব্যবহার করছিল তা ফলমূলের ফরমালিন নয়, বাতাসে ভেসে থাকা ফরমালিন সনাক্তকরণের কাজে ব্যবহৃত হয়। ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ব্যবসায়ীরা উচ্চ আদালতে রিট মামলা দায়ের করেন। আদালত থেকে উপযুক্ত মেশিনে ফরমালিন সনাক্তকরণের নির্দেশনা দেয়া হয়।বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে স্বাস্থ্য ও খাদ্য বিশেষজ্ঞরাও পুলিশের ওই অভিযানে ব্যবহৃত মেশিন নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। সমালোচনার মুখে পুলিশের ভেজালবিরোধী অভিযান স্থগিত হয়ে যায়।নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, খাদ্যদ্রব্য ও ফলমূলের পচনরোধে এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী ফরমালিন মেশাচ্ছেনা, এমন কথা নিশ্চিত করে বলা যাবেনা। কিন্তু, উপযুক্ত মেশিনে ফরমালিন সনাক্ত করার সুব্যবস্থা না করে সব ব্যবসায়ীকে গণহারে দোষারোপ করাটাও যুক্তিযুক্ত নয়।উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই বাজারে আম, লিচু, কাঠালসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফল আসতে শুরু করেছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থা থেকে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনার ঘোষণা আসেনি।খাদ্য ও ফলমূল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপযুক্ত মেশিন খোঁজার নামে কালক্ষেপণ করে অভিযান বন্ধ থাকলে জনস্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। কারণ সব ব্যবসায়ী সাধু নয়।এমএএস/আরআইপি
Advertisement