গাইবান্ধার সবগুলো নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো। বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পানি প্রবেশ করায় বাঁধ ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাঁধ ধসের আশঙ্কায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে।
Advertisement
সোমবার সকালে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় উদাখালি ইউনিয়নের সিংড়িয়া গ্রামে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুইটি স্থানে গর্ত দেখা দিয়েছে। সেটি মেরামতে কাজ করছে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা।
এদিকে ধস আতঙ্কে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধ সংলগ্ন এলাকার ঘরবাড়ি সরিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার রাতে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পরিদর্শন করেছে সেনাবাহিনী।
সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, সোমবার ভোর থেকেই স্থানীয় মানুষজন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। অনেকে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।
Advertisement
সিংড়িয়া গ্রামের বাহার খান (৫৫) বলেন, গতরাতে আতঙ্কে খেতে পারিনি। সারারাত জেগে ছিলাম। ভোর হওয়ার সঙ্গেই ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাঁধে এসে আশ্রয় নিয়েছি। রাতে পানি দিয়ে রাখা ভাত এখন খাচ্ছি। কোথায় যাবো, কী করবো ভেবে পাচ্ছি না।
একই গ্রামের জোসনা বেগম (৩৫) বলেন, ভাঙন আতঙ্কে সকালেই বাঁধে এসে আশ্রয় নিয়েছি। মেয়েকে তার নানার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমার স্বামী ঢাকায় থাকেন। এখন অসুস্থ শাশুড়িকে নিয়ে বিপদে পড়েছি। রাতে কোথায় থাকবো, ভেবে পাচ্ছি না।
রইচ উদ্দিন (৫৫) বলেন, সকাল থেকেই বাঁধের গর্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বেচ্ছায় কাজ করছি।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, সকালে সিংড়িয়া গ্রামের বাঁধে দুইটি ফাটল দেখা দিলে জরুরিভাবে বালুর বস্তা ফেলানোর কাজ শুরু করা হয়। এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
Advertisement
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল বলেন, যথেষ্ট খাদ্য মজুদ আছে। নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তত আছে। যথেষ্ট জনবল আছে। তারা বাঁধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
রওশন আলম পাপুল/আরএআর/এমএস