‘গরিব মানুষ দুই বেলা পেটের ভাত জোগানের লাইগ্যা ফুটপাতে দোকান বহাইলে দোষ। অবৈধ দোকান বইল্যা, লাঠি দিয়ে পিটাইয়া ও বুলডোজার দিয়া ভাইঙ্গা দোকান উডাইয়া দেয়। আর অহন যে পুলিশ নিজেরাই দোকান বহাইছে, অহন কি এইডা বৈধ নাকি অবৈধ?’
Advertisement
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রবেশদ্বারের বিপরীত দিকের ফুটপাতে মেট্রো ব্রেকারস নামে একটি দোকান দেখিয়ে একথা বলছিলেন কয়েক মাস আগে এখানকার ফুটপাত থেকে উচ্ছেদকৃত এক সাধারণ ব্যবসায়ী।
জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, মেডিকেলের মিনিয়ার্স কোয়ার্টার, যেখানে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২; সেখানেই তার জন্ম। বাবা চাকরি থেকে অনেক আগে অবসর নিয়েছেন। ছয় ভাই-বোনের সংসার চালাতে মেডিকেলের ফুটপাতে মৌসুমি ফল বিক্রি করে আসছিলেন। কয়েক মাস আগে হঠাৎ পুলিশ ফুটপাত থেকে তার দোকান উচ্ছেদ করে ও ফলমুল রাস্তায় ফেলে নষ্ট করে। এরপর থেকে তিনি আর দোকান বসানোর সাহস করেননি। বর্তমানে ঘুরে ঘুরে চা ও সিগারেট বিক্রি করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢামেক হাসপাতাল জরুরি বিভাগ সংলগ্ন প্রবেশদ্বারের দুই পাশের ফুটপাতজুড়ে অবৈধ দোকানের ছড়াছড়ি। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ভাত, মাছ, ডিম, শাকসবজি, পরোটা, সিঙ্গারা ও পুরীসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। আরও রয়েছে মাদুর, বালিশ, চাঁটা ও ফলমূলের দোকান।
Advertisement
মেট্রো বেকারস নামে ফুটপাতের ওই দোকানের সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশর একটি উদ্যোগ’। ফুটপাতের অন্যান্য দোকানের চেয়ে এ দোকানটি বেশ মজবুত ও বৃষ্টিরোধক ত্রিপল দিয়ে নির্মিত। দোকানটিতে কলা, রুটি ও বিভিন্ন বেকারি পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
দোকানে উঁকি দিয়ে দেখা গেল দু’জন তরুণ দোকানি। নিজের পরিচয় দিয়ে তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের পুলিশের লোক পরিচয় দেন। জানান, এ দোকানের সব আইটেম পুলিশের নিজস্ব বেকারিতে তৈরি। গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে তারা এখানে দোকান বসিয়েছেন। দোকানটিতে বিদ্যুতের মিটারও লাগানো হয়েছে।
নাম জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, শুধু এখানে নয়, পুলিশের মেট্রো বেকারস নামে আরও দুটি দোকানের একটি মিরপুর কালশী রোডে অপরটি চিড়িয়াখানার গেটের পাশে রয়েছে।
ফুটপাতের এই দোকানটি বৈধ নাকি অবৈধ জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘এগুলো বড় স্যারেরা বলতে পারবেন। আমরা শুধু তাদের নির্দেশে মালামাল বিক্রি করছি।’
Advertisement
এমইউ/এসআর/পিআর