ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিষয়ে আওয়ামী লীগের বক্তব্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে অবহিত করা হয়েছে।
Advertisement
সোমবার দুপুরে বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিষয়ে দলের গৃহীত মতামত তিনি এ সময় রাষ্ট্রপতিকে জানান।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণের নানা দিক নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তর্ক-বিতর্ক। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়টি ‘অগ্রহণযোগ্য’ বক্তব্য ব্যবহার করা হয়েছে। এ বক্তব্যের মাধ্যমে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে।’
‘এসব বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার প্রয়োজন হলে রিভিউ করবে সরকার’। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে এমন বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধান বিচারপতির রায়ে আপত্তিকর ও অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য আছে। সেগুলো এক্সপাঞ্জ করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। এগুলো এক্সপাঞ্জ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিধান অনুযায়ী যদি রিভিউ করার প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা রিভিউ করব।
Advertisement
তিনি বলেন, সেগুলো এক্সপাঞ্জ করতে গেলেও কিন্তু আমরা সরাসরি এক্সপাঞ্জ করার আবেদন করতে পারি না। সুপ্রিম কোর্টের রুল বলে এটা রিভিউয়ের মাধ্যমেই এক্সপাঞ্জের আবেদন করতে হবে।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা কিন্তু কোনো পাওয়ার কনটেস্টে নামিনি। পথ চলতে ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। এটা নিরসনে যে ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার সেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আওয়ামী লীগ ষোড়শ সংশোধনীর রায় পরিবর্তনের জন্য বিচারপতি ও বিচার বিভাগের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগকে বিচার বিভাগের ওপর চাপ প্রয়োগ না করে বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার আহ্বান জানান।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পক্ষে-বিপক্ষে আসা বিভিন্ন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ১০ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা বলেন, ‘আমরা সরকার বা বিরোধী দলের ট্র্যাপে (ফাঁদে) পড়ব না। রায় নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা হতে পারে। কিন্তু গঠনমূলক সমালোচনা না হলে বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
Advertisement
চলমান এ পরিস্থিতিতে গত শনিবার প্রধান বিচারপতির বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিষয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান রাষ্ট্রপতির কাছে পরিষ্কার করতে বঙ্গভবনে যান তিনি। সেখান থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমকে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি সব সময় তার এলাকায় ‘বাই রোড’ যেতে পারেন না। তিনি সব সময় এ কথা দুঃখ করে বলেন। আমরা উনার এলাকার রাস্তা তৈরির যে কাজ করছি সে বিষয়ে কথা বলতে এসেছি। কথা প্রসঙ্গে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে যে পর্যবেক্ষণ আছে, সে বিষয়ে পার্টির বক্তব্য তাকে জানিয়েছি। তার সঙ্গে কিছু কথা হয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অভিভাবক, প্রধান বিচারপতি তিনিই নিয়োগ দেন সেহেতু তাকে আমি বিষয়টি জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আমার যে আলোচনা হয়েছে সেখানে রায়ের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আমাদের পার্টির বক্তব্য রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেছি।’
ইউএ/এনএফ/এমএস/এমএআর/আরআইপি