আন্তর্জাতিক

ওয়ালমার্ট বনাম বাংলাদেশ, শক্তিশালী কে?

ফরচুন ম্যাগাজিনের তথ্য বলছে, গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিটেইল জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের রাজস্ব অায় ছিল ৪৮৫ বিলিয়নের বেশি। ওয়ালমার্টের এই আয় আরেক প্রতিষ্ঠান টয়োটার আয়ের প্রায় দ্বিগুণ এবং প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলের আয়ের দ্বিগুণেরও বেশি।

Advertisement

ওয়ালমার্টের এই রাজস্ব ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে গেছে। মার্কিন এই কোম্পানি পুঁজিবাদ, মুক্ত বাজার এবং ক্ষমতার আইকনে পরিণত হয়েছে। এর বাজার মূলধনও বিস্ময়কর; বিশ্বের অনেক দেশের বৈদেশিক রিজার্ভের চেয়েও বেশি।

অনেক ভোক্তার পছন্দের তালিকায় আছে ওয়ালমার্ট। তবে নিওলিবারালিজমের প্রতীক হিসেবে মার্কিন এই জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানকে অনেকে ঘৃণাও করেন।

বাংলাদেশের জিডিপিকে ছাড়িয়ে গেছে ওয়ালমার্টের রাজস্ব

Advertisement

গত বছর বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল প্রায় ২২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের; যা মার্কিন এই কোম্পানির বিক্রির অর্ধেকেরও কম। এর অর্থ হচ্ছে, বাংলাদেশ তার সম্ভাবনাময় তরুণ এবং সস্তা শ্রমশক্তিকে ব্যবহার করছে না; যারা কম মূল্যে প্রচুর পণ্য উৎপাদন করতে পারে। বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এশিয়ার এই দেশ প্রত্যেক বছর তার অর্থনীতির পরিমাণ গড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ বাড়াতে পারে।

বাজার মূলধন বনাম বৈদেশিক রিজার্ভ

ওয়ালমার্টের ২৪৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বাজার মূলধন রয়েছে; যা বিশ্বের বৃহত্তম বাজার মূলধনের একটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৩ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচক উন্নত করার জন্য রফতানি, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং শ্রমিকদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ধনী দেশগুলোর রফতানি এবং উৎপাদন সাধারণত উচু পর্যায়ের হয়ে থাকে।

এশিয়ার নতুন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হওয়ার এটাই সুযোগ

Advertisement

অতীতে তাইওয়ান, হং কং, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর দারিদ্র দেশের কাতারে ছিল। কিন্তু তারা এমন অর্থনৈতিক নীতিমালা বাস্তবায়ন করছে যা তাদের রফতানি, বিনিয়োগ ও অবাধ উদ্যোগের প্রসার ঘটিয়েছে।

তারা বিভিন্ন ধরনের পণ্য উৎপাদন ও রফতানির জন্য তাদের সস্তা শ্রম শক্তি ব্যবহার করেছে- ফলস্বরূপ সাফল্য অর্জন করেছে। অতীতে এসব দেশে মূলত দরিদ্র চাষীদের বসবাস ছিল। কিন্তু বর্তমানে তারা মাথাপিছু সর্বোচ্চ আয়ের দেশগুলোর তালিকায় গেছে। দারিদ্রকে কীভাবে পরাজিত করতে হয় তার উদাহরণ হয়ে উঠেছে এই দেশগুলো।

যেভাবে বিশাল অর্থনীতি গড়তে পারে বাংলাদেশ

কমিউনিস্ট শাসিত প্রতিবেশির সঙ্গে অনেক বছর আগে প্রচণ্ড রকমের যুদ্ধ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। বর্তমানে কোরীয় দ্বীপে উত্তেজনা বিরাজ করেছে। এর ফলে অস্ত্রের পেছনে অনেক ব্যয় করতে হচ্ছে এই দেশটিকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো সমস্যা নেই।

এশিয়ার এই দেশটির চেয়ে বাংলাদেশের জনসংখ্যা এবং আয়তনও বেশি। এ কারণেই বিশাল অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের।

সূত্র : ইউএস ব্লাস্টিংনিউজে চার্লি স্ট্যাটসের লেখা কলাম।

এসআইএস/পিআর