ধর্ম

হজ আদায় করবেন যৌবনে না বৃদ্ধাবস্থায়?

আর্থিকভাবে সাবলম্বী, শারীরিকভাবে সুস্থ ও সবল এবং মানসিকভাবে পরিপূর্ণ প্রস্তুত ব্যক্তির জন্য হজ আদায় করা ফরজ। কিন্তু সামর্থ লাভকারী ব্যক্তি কখন হজ আদায় করবেন? যুবক অবস্থায় না বৃদ্ধাবস্থায়।

Advertisement

সমাজে একটা অসত্য কথা প্রচলিত রয়েছে যে, যুবক বয়সে নয়; হজে যেতে হয় বৃদ্ধ বয়সে। অথচ হজ হলো শারীরিক সক্ষমতা থাকা লোকদের ইবাদত।

আবার কেউ কেউ মনে করেন- যুবক বয়সে হজ করে বাকী জীবন সহিহ ও সঠিক পথে চলা কঠিন। তাই যুবক বয়সে হজ নয়; আবার অনেকে এমন ধারণাও পোষণ করে থাকেন যে, অন্যায় অপরাধ করার পর বৃদ্ধ বয়সে হজে করে নেবে।

মূল কথা হলোআর এ হজই মানুষকে আল্লাহ পথে চলার শক্তি দান করে। হজে সম্পদ কমে না বরং তা ধন-সম্পদের বরকত লাভের অনন্য এক ইবাদত।

Advertisement

তাই যুবক হোক আর বৃদ্ধ হোক হজের সামর্থ লাভ করার সঙ্গে সঙ্গে হজ আদায় করা জরুরি। আর আল্লাহ তাআলার নির্দেশও এমনই। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘‌মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ রয়েছে; আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই ঘরের হজ করা তার জন্য আবশ্যক কর্তব্য।’ (সুরা আল ইমরান : আয়াত ৯৭)

কুরআনে উল্লেখিত আয়াতে যুবক বা বৃদ্ধ বয়সের বা সময়ের কোনো কথা উল্লেখ নেই। বরং বলা হয়েছে, যখনই সামর্থ হবে তখন তার ওপর হজ আদায় করা আবশ্যক।

তাছাড়া আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে হজ ও ওমরা সম্পর্কে আল্লাহর ঘোষণা হলো, ‘তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ এবং ওমরা পূর্ণ করো।' (সুরা বাকারা : আয়াত ১৯৬)

Advertisement

এ আয়াতেও বিলম্বে হজ ও ওমরা আদায়ের কোনো নির্দেশ নেই। বরং আল্লাহর নির্দেশ যত তাড়াতাড়ি বাস্তবায়ন করা যায়, ততই কল্যাণ।

আরও পড়ুন-হজের সফরে যে জীবিকা উপার্জন ও কাজ বৈধ

হজের সময় নির্ধারণ ও করণীয়

বরং প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাড়াতাড়ি হজ সম্পাদনের সুস্পষ্ট নির্দেশ প্রদান করেছেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-‌‘তোমরা ফরজ হজের জন্য তাড়াতাড়ি কর। কেননা তোমাদের কোনো ব্যক্তিই জানে না যে, তার ভাগ্যে কি আছে।’ (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ, মুস্তাদরেকে হাকেম)

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘কার ভাগ্যে কি আছে’ বলে এ মর্মে সতর্ক করেছেন যে, মৃত্যু বা শারীরিক অক্ষমতা আসার আগেই বা স্বচ্ছলতা থাকতেই সামর্থবান ব্যক্তিদের দ্রুত হজ পালন করা জরুরি।

পরিশেষে...হজ সামর্থবানদের জন্য ফরজ। তাই যখন যে বয়সে হজের সামর্থ হবে তখনই হজ আদায় করা। হোক যুবক আর হোক বৃদ্ধ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজের সামর্থ লাভ করার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে তাড়াতাড়ি হজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএম/পিআর