সাংবাদিকদের কোনো ধরনের ওয়েজ বোর্ডের প্রয়োজন নেই- সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী এ ধরনের বক্তব্য দিলেও তথ্যমন্ত্রী বলছেন তার মন্ত্রণালয় ওয়েজ বোর্ডের পক্ষেই আছে। তিনি বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় ওয়েজ বোর্ডের বিরুদ্ধে এ কথাটা সঠিক নয়। আমরা পক্ষেই আছি।’
Advertisement
সাংবাদিকদের নবম ওয়েজ বোর্ড গঠনে মালিকরা প্রতিনিধি দিচ্ছেন না। মালিক প্রতিনিধি ছাড়া এক তরফা ওয়েজ বোর্ড গঠন কঠিন সিদ্ধান্ত হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে রোববার সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সামনে ডিজিটাল আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মজুরি বোর্ড গঠনের কাজ ৮০ ভাগ সম্পন্ন করেছি। মালিকদের প্রতিনিধি আমরা পাইনি, আমরা মালিকদের তাগাদা দিচ্ছি প্রতিনিধি দেয়ার জন্য। এ ব্যাপারে দেন-দরবার চলছে এবং অনুরাধ করছি আপনারা অবিলম্বে প্রতিনিধি দেবেন। আমরা ওয়েজ বোর্ড গঠন করব।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘মালিকরা যদি প্রতিনিধি না দেন তবে এক তরফা মজুরি বোর্ড ঘোষণা করব কি না, এটা একটা কঠিন সিদ্ধান্ত। আমি সংবাদিক ভাই-বোনদের মঙ্গল চাই, তারা যাতে ওয়েজবোর্ডের সুযোগটা পায়.... সেজন্য এই প্রশ্নের সম্মুখীন যদি হই তাহলে আমরা মনে করি বিএফইউজে, ডিইউজে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এবং সরকারের সঙ্গে, সবশেষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নবম ওয়েজবোর্ড গঠনে তথ্য মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
ওয়েজ বোর্ড ৫ বছর পর পর দেয়ার বিধান আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক উত্থান-পতনের কারণে ৫ বছর পর পর ওয়েজবোর্ড দেয়া অতীতে সম্ভব হয়নি। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বহু খাটাখাটনি করে ওয়েজ বোর্ড দিতে সক্ষম হই। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৫ বছর পূর্তি হবে। ৫ বছর পর যাতে গণমাধ্যমের কর্মীরা, সাংবাদিক বন্ধুরা নবম ওয়েজ বোর্ডর সুযোগ পায় সেইজন্য তারা দাবি উত্থাপন করেছিলেন। এই দাবির সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।’
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের আগেই ওয়েজবোর্ড গঠন করা হবে। গত ওয়েজ বোর্ডের ৫ বছর পর থেকেই নতুন ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানান জাসদ (একাংশ) সভাপতি ইনু।
Advertisement
সাংবাদিকদের মধ্যে থেকে দাবি ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সরকার ওয়েজ বোর্ড গঠনের কাজ শুরু করেছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে, কর্মচারী বন্ধুদের সঙ্গে আমরা একাধিকবার বসেছি। ওয়েজ বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে কোনো লুকোছাপার অবস্থান নেই। সাংবাদিক ও কর্মচারীদের দাবির সঙ্গে তথ্য মন্ত্রণালয়ের মত এক, আমরা একে অপরের প্রতিপক্ষ নই, শত্রুও নই।’
মন্ত্রী বলেন, ‘তথ্য মন্ত্রণালয় যেখানে ওয়েজবোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে, ৮০ ভাগ কাজ শেষ করেছে, সেখানে তথ্য মন্ত্রণালয় ওয়েজ বোর্ডের বিরুদ্ধে এ কথাটা সঠিক নয়। আমরা পক্ষেই আছি।’
ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা ওয়েজ বোর্ডের অধীনে নন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা এ ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছি, কীভাবে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বন্ধুদের আওতায় আনা যায়, সে ব্যাপারে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করতে।
প্রদর্শনীর বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এতে আমরা বঙ্গবন্ধুর কর্মকাণ্ডের কিছু অংশ তুলে ধরছি। দেশব্যাপী বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হচ্ছে এবং বাংলাদেশের অভ্যূদয়, গণতান্ত্রিক সংগ্রামের কথা আস্তে আস্তে মানুষের কাছে প্রকাশ পাচ্ছে, মানুষ বুঝতে পারছে। ইতিহাস যতই ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হোক ইতিহাস কখনও ধামাচাপা থাকে না। বঙ্গবন্ধু স্বমহিমায় বাংলাদেশে আবার উদ্ভাসিত।’
প্রদর্শনী চলবে আগামী ১৯ আগস্ট পর্যন্ত। এ প্রদর্শনীতে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বেতারের মহাপরিচালকের মো. নাসির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এনএফ/পিআর