অন্ধত্ব হার মেনেছে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মোকলেছুর রহমান ও মোকাদ্দেস হোসাইনের প্রতিভার কাছে। চলতি বছর এরা দু’জনই এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এদের মধ্যে মোকাদ্দেস হোসাইন এলএলবিতে অনার্সসহ উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে চায়। আর মোকলেছুর রহমান ইংরেজি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে চায়। দু’জনই লালমনিহারের সাপ্টিবাড়ী সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের নিয়মিত আবাসিক ছাত্র। এ বছর সাপ্টিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তারা। মোকলেছুর রহমান: অদম্য মেধাবী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মোকলেছুর রহমান জানান, ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সে তৃতীয়। বাড়ি হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের ধওলাই গ্রামে। বড় বোন আফরোজা অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখা করছেন ঢাকার বাংলা কলেজে। তার বাবা আনোয়ার হোসেন ৩ বছর আগে পৃথিবী থেকে চলে গেছেন পরপারে। আর মা আনোয়ারা বেগম শত কষ্টের মাঝেও সন্তানের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছেন। বাকি ভাই বোনরা স্বাভাবিক হলেও জন্মের ৩ বছর পর মোকলেছুরের হঠাৎ চোখ উঠে। গ্রামের পল্লী চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে সে। এরপর ঢাকার মিরপুরের জাতীয় বিশেষ শিক্ষাকেন্দ্র থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া শেষ করে সাপ্টিবাড়ী সমন্বিত শিক্ষা কার্যক্রমের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ভর্তি হয়। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় সাপ্টিবাড়ী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক শাখায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। আর সহযোগিতা পেলেই জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন বলে আশাবাদী। মোকাদ্দেস হোসাইন:মোকাদ্দেস হোসাইন জানায়, ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সে তৃতীয়। জন্মগতভাবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও কখনো সে নিজেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হিসেবে মানতে রাজি নন। তার বাকি ভাই বোনরা সবাই স্বাভাবিক। জন্মের পর থেকে পৃথিবীর আলো দেখতে না পেলেও দমে থাকেনি তার শিক্ষা জীবন। সে উপজেলার সাপ্টিবাড়ী সমন্বিত শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করে সাপ্টিবাড়ী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। বাড়ি লালমনিরহাট সদর উপজেলার বনগ্রাম কুলাঘাট গ্রামে।এসএসসি পরীক্ষার খাতায় লিখে তাকে সহযোগিতা করেন আতাহার সিয়াবুল ইসলাম নামের একজন শ্রুতিলেখক। মোকেদ্দেস ভবিষ্যতে লেখাপড়া শিখে আইনজীবী হয়ে সমাজের সেবা করতে চায়।এসএস/এমএস
Advertisement